আজকাল টাকা দিয়ে সব কেনা যায়। টাকা ছড়ালেই মেলে আদর সম্মান সমীহ। এই সমাজ সৎ মানুষটিকে সম্মান করে না, কারণ তিনি যে বেতন পান তা দিয়ে তার নিজের সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হয়, অন্যকে দিবেন কোথা থেকে?
.
তাকেই সমাজ মাথায় তুলে রাখে এবং প্রশংসার বন্যায় ভাসায়, যার আছে অবৈধ উপায়ে উপার্জিত অনেক অনেক টাকা। সেই টাকা দিয়ে তিনি অনেক মানুষকে খুশি করতে পারেন। তিনি পারেন উৎসবে ইচ্ছামতো অন্যদের পিছে খরচ করতে, পারেন টাকা ছড়াতে। তিনি থাকেন অট্টালিকায়, আয়েশী জীবনযাপন করে। তাই তার দিকেই সাধারণ মানুষ বেশি আকৃষ্ট হয়। কেউ বোঝে না, অবৈধ উপায়ে অর্থ রোজগারের কারণে যাদের টাকা মেরে তিনি এই অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন, তার মধ্যে তাদের মতো গরিবের টাকাও কিন্তু আছে।
.
অন্যদিকে সৎ মানুষটি সীমিত রোজগারের টাকা দিয়েই নিজে চলেন এবং অন্যকে বিপদে সাহায্য করার চেষ্টা করেন। বাবাকে দেখেছি নিজের সংসার চালানোর কষ্ট স্বত্বেও মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছেন। নতুন জামা কেনার সামর্থ না থাকলেও পুরাতন জামা দিয়ে দিয়েছেন রাস্তায় ভিখারীকে বাসায় ডেকে এনে। সৎ মানুষটি কারো উপকার করতস না পারলেও ক্ষতি করেন না কারো। কিন্তু অসৎ মানুষের স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটলে যে কারো ক্ষতি করতে পারে।
.
সৎ মানুষের দেওয়া ১০ টাকা যে অসৎ মানুষের ১০০০ টাকার চেয়েও মূল্যবান আর বরকতের, সে কথা অনেকেই বোঝে না। হারাম উপার্জনের টাকায় কেনা কিছুই স্থায়ী হয় না, বরং তা ক্ষতির কারণ হয়, ডেকে আনে দুর্ভাগ্য। এটা সবাইকে বুঝতে হবে। কারণ অসৎ মানুষটার থেকে সুবিধা নিয়ে আপনি তাকে অন্যায় পথে উপার্জন করতে উৎসাহিত করছেন। এতে পরোক্ষভাবে কিন্তু আপনি ও আপনার মতো সাধারণ মানুষেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর অবৈধ পথে আসা টাকা সেভাবেই চলে যায়, হয় কোনো রোগভোগের মাধ্যমে অথবা অন্যভাবে। প্রকৃতিই বিচার করে, আজ নাহলে কাল।
.
আসুন অসৎ পথে অর্থ উপার্জন না করি। সততার পথ কষ্টের হলেও সেটা স্থায়ী এবং ঝামেলায় থাকলেও অন্য রকমের আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায় ঐ জীবনে।