somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্পঃ কলমের প্রথম রক্তাচড় আর একটা সফল উপন্যাসের শুরু!!

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



—দেখুন সজল সাহেব, প্রেমের গল্প-উপন্যাস যে পাঠকরা আর পছন্দ করে না, তার প্রমাণ তো পেয়েছেন।
—আমি কিন্তু অনেক সময় নিয়ে যত্ন করে লিখেছি উপন্যাসটা। আপনি একটু আগ্রহ নিয়ে পড়ে দেখুন; আমার বিশ্বাস ভালো লাগবে।
সজলের কণ্ঠে অনুনয়।
—আমার ভালো লেগে কী লাভ, বলুন। যারা পকেটের পয়সা খরচ করে বইটা কিনবে, তাদের আগ্রহ থাকতে হবে। তার উপর আপনি নতুন লেখক। অলরেডি একবার আমার ভরাডুবি হয়েছে! আপনি বেটার এমন কোনো বিষয় নিয়ে লিখুন, যেটা পাঠকরা লুফে নেবে।
—যেমন?
এবার কিন্তু শ্লেষ ঝরে সজলের কণ্ঠে।
—এই ধরুন রহস্য কিংবা গোয়েন্দা কাহিনী নিয়ে লিখতে পারেন। যখন যেটা চলে আর কি। আপনাকে তো পাঠকের টিউন বুঝতে হবে।
বলে পাণ্ডুলিপিটা ফিরিয়ে দেন চারুপাঠ পাবলিশার্সের পঞ্চাশোর্ধ ঝানু প্রকাশক শফিক আহমদ। প্রথম পাতায় বড় বড় করে লেখা ‘প্রেম একবারই এসেছিলো নীরবে’।


সজল শরিফ। টগবগে তরুন এক লেখক। লেখালেখির হাত ধরে গত বইমেলায় সবে তার প্রথম উপন্যাস বেরিয়েছে। কিন্তু কাটতি হয় নি মোটেই। তাই বলে লেখক হবার স্বপ্ন সে কোনোভাবেই জলাঞ্জলি দিতে রাজি নয়। আগামি বইমেলায় আরেকটা উপন্যাস প্রকাশের আশাতেই প্রকাশকের কাছে তার ধর্না দেয়া।
ঢাকা বিশ্ববদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র ছিলো সজল। মফস্বলের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। ছাত্রাবস্থাতেই তার কিছু গল্প বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাগাজিনে এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত হবার পর থেকেই লেখক হবার স্বপ্নে বিভোর সে। চোখ বন্ধ করলেই সে পেরিয়ে যায় দশ-পনের বছর… সফেদ পাঞ্জাবি পরা সৌম্য-দর্শন একজন লেখক, যাকে ঘিরে রয়েছে তাঁর পাঠক এবং ভক্তকূল। একটা অটোগ্রাফের জন্য সে কি হুড়োহুড়ি! কল্পনার এই জটাজাল ছিন্ন করতে পারে নি বলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরুবার পর কোথাও চাকরির আবেদন পর্যন্ত করে নি সে! কিন্তু ভাগ্যদেবী যেন কোনোভাবেই তার প্রতি প্রসন্ন দৃষ্টিতে তাকাচ্ছেন না!




প্রচণ্ড আশাবাদী হওয়া সত্ত্বেও এই মুহূর্তে হতাশ হয়ে প্রকাশনী থেকে বেরিয়ে এলো সজল। বাইরে ঠিকরে পড়ছে মধ্যদুপুরের রোদ। বাংলাবাজারের ফুটপাথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে অবসাদে একসময় দাঁড়িয়ে পড়লো সে আনমনে। তার মনে হচ্ছিলো, ঝিলিক দেয়া রোদের তীক্ষ্ণ ফলা কেউ যেন সেঁধিয়ে দিচ্ছে তার মগজে… অবচেতন মনে কতক্ষণ সে সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলো, মনে নেই। পকেটের মোবাইল ফোনটা বেজে উঠতেই সংবিত ফিরে পায়। শুভ্রার ফোন। হ্যাঁ, মিষ্টি মেয়ে শুভ্রা… সজলের আশায় বসতি!
—কোথায় তুমি?
—এইতো বাংলাবাজারে এসেছিলাম।
—ব্যস্ত?
—না। কেনো?
—ক্লাস শেষ করে বেরুলাম। ধানমন্ডির দিকে যাবো ফ্রেন্ডরা মিলে। আড়াইটার দিকে ‘এস্কেপ ফ্রম সাংহাই’এ অপেক্ষা করবো। তুমি এসো। লেট করো না কিন্তু।
কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই লাইনটা কেটে দেয় শুভ্রা। মানিব্যাগের অবস্থা বেগতিক হলেও পা বাড়াতে ভয় হয় না সজলের। সে জানে, শুভ্রার এমন আমন্ত্রনের অর্থনৈতিক বেগটা কখনই তাকে সামলাতে হবে না। বিশাল অবস্থাপন্ন ঘরের মেয়ে শুভ্রা। বাড়ি গাড়ি, সহায় সম্পদ কোনো কিছুর অভাব নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই ইংরিজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ওদের পরিচয়টাও বিশ্ববিদ্যালয়েই। পরিচয় থেকে প্রেম, প্রেম থেকে নির্ভরতা। আগে যেমনটাই থাকুক, এখন কিন্তু নির্ভরতাটা একপেশেই বলা যায়।
দুপুর তিনটার দিকে ঘেমে নেয়ে হাজির হয় সজল শুভ্রার সামনে।
—মনটা ভীষণ খারাপ। পেটও চোঁ-চোঁ করছে ক্ষুধায়। কী খাওয়াবে, বলো।
খাবারের অর্ডার দিয়ে শুভ্রা জিজ্ঞেস করে সজলের মন-খারাপের কারণ।
—এবার বলো, কী হয়েছে?
—মরে গেছে প্রেম!
—মানে কী? ক্ষুধায় ভুল বকছো না কি?
—ফিরিয়ে দিলো প্রকাশক। এসব প্রেমের গল্প না কি এখন অচল।
একটু রেগে গিয়েই যেন ‘আপনি’ থেকে ‘তুমি’তে নেমে আসে সজল প্রকাশকের সম্বোধনে।
—কী বলছো! এমন অসাধারণ লেখাটা ফিরিয়ে দিলো?
—আর বলো না; রহস্য কিংবা গোয়েন্দা কাহিনী নিয়ে লিখতে বললো।
—সে না হয় লিখবে। কিন্তু যে পরিশ্রমটা করলে? আমি এতো করে বললাম, আমার বাবা একবার বললে প্রকাশকরা…
কথার মাঝখানেই শুভ্রাকে থামিয়ে দেয় সজল।
—তোমাকে আগেই বলেছি। এই স্বপ্নপূরণের জন্য আমি যেকোনো কিছু করতে পারি। কিন্তু কারো অনুগ্রহ নিয়ে বই প্রকাশ করে আমার স্বপ্নকে আমি ফিঁকে হতে দেবো না!
—আমাকে ছাড়তে পারবে?
—জানি না।
দীর্ঘশ্বাস ছাড়ার ভঙ্গি করে সজল।
—কী!
কপট কটাক্ষ শুভ্রার চোখে। হেসে ফেলে সজল।
—বাদ দাও। নতুন করে ভাবতে হবে আবার। নতুন আইডিয়া, নতুন প্লট, নতুন চরিত্র… নতুন আত্মবিশ্বাস। কী লিখি, বলো তো।
সজল যেন ধীরে ধীরে ফিরে পাচ্ছে নিজেকে।
—দাঁড়াও।
বলে চোখ বোজে শুভ্রা। বোজা অবস্থায় ওর ডাগর চোখগুলো যেন না-ফোঁটা পদ্ম। মুগ্ধ সজল চেয়ে থাকে অপলক। কিছুক্ষণ ভাববার পর যখন ফুঁটে ওঠে পদ্মযুগল, রঙ ছড়িয়ে পড়ে শুভ্রার মুখজুড়ে!

—ভালো একটা আইডিয়া পেয়েছি। একজন দুর্ধর্ষ কিলারকে নিয়ে রহস্য উপন্যাস লিখতে পারো। চরিত্রটিকে কিন্তু ফুটিয়ে তুলতে হবে একেবারে রোমহর্ষক করে! আমার বিশ্বাস, শেষ করতে পারলে প্রকাশক আর তোমাকে ফেরাতে পারবে না। পাঠকরাও হামলে পড়বে।
কিছুক্ষণ ভাবে সজল।
—কিন্তু এমন চরিত্র সম্পর্কে যে আমার খুব একটা ধারণা নেই।
—তাতে কী? দাঁড়াও, আমি তোমাকে কয়েকটা বই আর মুভির নাম লিখে দিচ্ছি। বাসায় ফেরার পথে কিনে নিয়ে যাবে, অবশ্যই।

বলে চিরকুটে লিখে দেয় কয়েকটা ক্ল্যাসিক কিলার থ্রিলার বই আর মুভির নাম। মুভির লিস্টে ‘সাইকো’ দেখে সজলের কণ্ঠে ঝরে পড়ে উচ্ছ্বাস।
—আরে, ‘সাইকো’ দেখেছি তো আমি!
—আস্তে। আগে দেখেছো দর্শকের চোখে। এবার দেখবে বিশ্লেষকের চোখে।
বেমানান গাম্ভীর্য শুভ্রার কণ্ঠে। সাথে যোগ করে—
—অন্য সবকিছু ভুলে আগামি কয়েকদিন তোমার কাজ হচ্ছে গভীর মনযোগ দিয়ে বইগুলো পড়া আর মুভিগুলো দেখা।
—যো আজ্ঞা মহারাণী।
—নিশ্চিত চরিত্রটা সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে যাবে তুমি। আই হোপ, প্রবলেম সলভ্ড!




শেষ পর্যন্ত শুভ্রার কিনে দেয়া বই আর ডিভিডি নিয়ে সেদিন বাসায় ফেরে সজল। বাসা বলতে ব্যাচেলর চাকুরেদের মেস। সজলের রুমে সজল একা। স্বভাবেও সে অনেকটা তাই! প্রথমে সে বই আর মুভিগুলোর তোয়াক্কা না করেই লেখার চেষ্টা করে। কিন্তু একটা লাইনও লিখতে পারে না। বাধ্য হয়েই ডুব দেয় বই আর মুভিতে। মাস খানেক সে যেন ভুলে যায় পৃথিবী। মোবাইল ফোনে টুকটাক কথাবলা ছাড়া দেখা পর্যন্ত করে না শুভ্রার সাথে। একটা ঘোরের মধ্যে চলে যায় সে। ভাবে, এই ঘোরটা থাকতে থাকতেই লিখে ফেলতে হবে কিছুটা। আগ্রহ সহকারে বসে খাতা-কলম নিয়ে। কিন্তু যে সেই! কলম সরে না তার এক বিন্দুও। কোনোভাবেই সে খুনী চরিত্রটার স্বরূপ ঠিক করে উঠতে পারে না। রাগে আঙ্গুল কামড়াতে ইচ্ছে করে তার। চোখ বন্ধ করে সে চেষ্টা করে তার আরাধ্য স্বপ্নটাকে একবার দেখবার। কিন্তু কেমন যেন অস্পষ্ট মনে হয়, শেষ পৌষের গাঢ় কুয়াশার মধ্যে ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাওয়া কোনো মানুষের মতো! স্বপ্নকে এভাবে মুঠো গলে বেরিয়ে যেতে দেখে অস্থির হয়ে ওঠে সজল। ধীরে ধীরে অবস্থা এমনই ভয়ংকর হয়ে দাঁড়ায় যে বিষয়টা নিয়ে ভাবতে গেলেই তার মনে হয়, রক্ত-ফেনা-মাখা কোনো অন্ধকার অতল গহ্বরে সে তলিয়ে যাচ্ছে! তবে কি তার এতোদিনের আশা-একাগ্রতা সব বিফলে যাবে; হেরে যাবে সে? না! ব্যাগ্র আর মরিয়া হয়ে ওঠে সজল। হঠাৎ করেই মনে পড়ে শুভ্রার মুখ। বেশ কিছুক্ষণ ধরে সে ভাবে শুভ্রার কথা। হ্যাঁ, শুভ্রা তাকে হারতে দেবে কেন? ডায়াল করে সে শুভ্রার ফোন নাম্বার।
—একবার দেখা করবে আজ?
একেবারেই স্বাভাবিক সজলের কণ্ঠ। যেন শুভ্রার সাথে দেখা করলেই পেয়ে যাবে সে ভদ্রগোছের একটা সমাধান।
—যাক, ভেবে ভালো লাগছে, ধরাধামে ফিরেছো তুমি! কোথায় আসবো, বলো।
নির্মল খোঁচা দেয়ার চেষ্টা শুভ্রার।
—হাতিরঝিল ব্রিজের গোড়ায় ঠিক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় আমি অপেক্ষা করবো।
—ওকে।




সেদিন হাতিরঝিল থেকে রাত এগারোটার দিকে যে বাসায় ফেরে, সে এক নতুন সজল। আত্মবিশ্বাস যেন উথলে ওঠা দুধের মতো ছাপিয়ে যাচ্ছে তার মন। চোখের তারায় ঝিলিক দিচ্ছে ফিঁকে হয়ে যাওয়া স্বপ্ন! একটানে সে লিখে ফেলে তার রহস্য উপন্যাসের দশ-বারো পাতা। দুর্ধর্ষ খুনী চরিত্রটা যেন আজ জীবন্ত হয়ে উঠেছে তার কলমের ডগায়!!!!




পরদিন কয়েকটা দৈনিকে গুরুত্বহীনভাবে ছোট্ট একটা সংবাদ প্রকাশিত হয়;-


‘গভীর রাতে হাতির ঝিল থেকে অজ্ঞাতনামা তরুণীর লাশ উদ্ধার’
২৪টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×