somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ; বাতিল চায় দেশের অধিকাংশ পরীক্ষার্থী

২৫ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ২:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



২০১৮ সালের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ২০১৯ সালে মোট ৪ ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোঃমধ্যে গত মে মাসের ২৪ তারিখ ও ৩১ তারিখ যথাক্রমে দুই ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর গত ২১ জুন তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ২৮ জুন ইংরেজি তারিখে ৪র্থ ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। অনুষ্ঠিতব্য সকল ধাপের পরীক্ষা যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ। ১ম ও ২য় ধাপের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। যার কারণে উক্ত পরীক্ষা বাতিলের জন্য পরীক্ষার্থীগণ আন্দোলন করেছেন। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় ও প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে কেউ কেউ অভিযোগ করছেন। তবে এই অভিযোগ আগের দু-ধাপের তুলনায় অধিকতর দুর্বল বলে কোনো কোনো মহল মনে করছেন।

গণমাধ্যম তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মারফত জানা গেছে তৃতীয় ধাপে কিছু অসাধু মহল ভূয়া প্রশ্নপত্র বিক্রি করার পায়তারা করেছে। তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি জানতে পেরে খুব শক্ত হাতে দমন করেছেন, এবং পরীক্ষা অনেকটাই সফলতার সহিত গ্রহণ করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অতিব প্রশংসার দাবিদার। তবে তৃতীয় ধাপের প্রশ্ন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অধিকাংশ পরীক্ষার্থী। তাদের মতে ২১ তারিখের ৩য় ধাপের প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হয়েছে একেবারে মানহীন ও প্রচন্ড কঠিন। বিগত বছরের প্রশ্নপত্রের সঙ্গে কোনো ধারাবাহিকতা নেই, নেই কোনো মিল। সাম্প্রতিক বিষয়, খেলাধুলা, বাংলা সাহিত্য, ইংরেজি সাহিত্য এবং জ্যামিতি থেকে একটাও প্রশ্ন দেওয়া হয়নি। এছাড়া বিজ্ঞান, ভূগোল ও রোগ বালাই ইত্যাদী থেকে বিগত বছরের তুলনায় আশানুরুপ প্রশ্ন দেওয়া হয়নি। তাছাড়া প্রশ্নে বিষয়ভিত্তিক রয়েছে গড়মিল। সাধারণ জ্ঞান বেশি দিয়ে কম দেওয়া হয়েছে গনিত। (অবশ্য এ চিত্র জেলাভেদে ভিন্ন)। কোনো কোনো পরীক্ষার্থী ৩য় ধাপেও প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন!

মুলত যেকোনো পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এমনভাবে প্রণয়ন করা উচিত, যাতে করে কম মেধাবী বা অধিক মেধাবী সকলের নিকট প্রশ্নপত্রের গ্রহণযোগ্যতা থাকে। কিন্তু অতিব দুঃখজনক হলেও সত্য যে, দেশের অধিকাংশ পরীক্ষার্থীদের নিকট ৩য় ধাপের প্রশ্নপত্রের ধারাবাহিকতা ও মান একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। এছাড়া প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে প্রথম দু-ধাপের পরীক্ষা কারো নিকট কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মুলত তৃতীয় ধাপের হাতে গোনা দু-একটি জেলার প্রশ্নপত্রের মান ও ধারাবাহিকতা ঠিক থাকলেও বাদ বাকি জেলা গুলোর চিত্র ছিলো ভিন্ন। যেসব পরীক্ষার্থীগণ প্রচুর পড়েছেন ও প্রস্তুতি নিয়েছেন তাদের খুব ক্ষতি হয়েছে এবং তারা বেশ শঙ্কিত ও বটে; কারণ এমন কঠিন প্রশ্নপত্রের জন্য তাদের পড়া ও পরিশ্রম দুটোই বৃথা গেছে। যাদের সরকারি চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা শেষের পথে তাদের ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এটি শিক্ষিত জাতির জন্য খুবই দুঃখজনক। অবশ্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেছেন তদন্তে যদি অভিযোগের সত্যতা মেলে তাহলে বাতিল করা হবে পরীক্ষা। এটি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত ও অতিব প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ। দেশের বৃহৎ স্বার্থে আগামী ২৮ জুনের পরীক্ষা স্থগিত করে অনুষ্ঠিতব্য তিন ধাপের পরীক্ষা বাতিল করা একান্ত জরুরি বলে মনে করি। অবশ্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় যদি মনে করেন যে, ৪র্থ ধাপের পরীক্ষা হবে স্বচ্ছ ও মানসম্মত তাহলে সেটি অনুষ্ঠিত হতে পারে।

কিন্তু যদি অনুষ্ঠিত হওয়ার পর বিভিন্ন মহলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেটিও বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হয় তাহলে সেটি হবে রাষ্ট্রের বাড়তি খরচ ও অর্থনৈতিক অপচয়। শিক্ষার মানোন্নয়নে উপযুক্ত ও মানসম্মত প্রশ্নপত্র ও স্বচ্ছ পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য, দক্ষ এবং উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া উচিত বলে প্রত্যাশা করি। তাছাড়া সুশিক্ষা আমাদেরকে শিখিয়েছে সাম্যের কথা। তাই দেশের সকল জেলার প্রশ্ন একই হওয়া উচিত অথবা একই ধাপে ও একযোগে অনুষ্ঠিত সকল জেলার প্রশ্ন একই হওয়া একান্ত বাঞ্ছনীয়। তাছাড়া প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধকল্পে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যাবশ্যকীয়। এ ব্যাপারে সরকার তথা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ রইলো দয়া করে অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় নতুন করে পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদেরকে নিয়োগ দেওয়া হোক। স্বচ্ছ ও দূর্নীতিমুক্ত পরীক্ষা ও মানসম্মত প্রশ্নের মাধ্যমে জাতি পাক সত্যিকারের মেধাবী মানুষ গড়ার কারিগর- সেটাই প্রত্যাশা করি।

- মোঃ নিজাম গাজী,
তরুণ সাহিত্যিক ও কলামিস্ট,
বি.এস.এস(অনার্স),
এম.এস.এস(রাষ্ট্রবিজ্ঞান),
সরকারি পিসি কলেজ, বাগেরহাট।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ২:১৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×