somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সূর্যের রক্তস্নান ও বিবিধ পাপোল্লাস

২৬ শে জুলাই, ২০১০ রাত ১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

০১.
সকাল থেকে মিলির বাঁ চোখের পাতা কাঁপছে। শিরশিরে একটা ভয় গলার ভেতর কাঁটার মত আটকে আছে- বেরোনোর পথ পাচ্ছে না। বাবাকে বলা হয়নি, ছোড়দা আজ আসবে বলে দুদিন আগে খবর পাঠিয়েছে গোপনে। আজকাল প্রতিটা দিন শামুকবন্দী পতঙ্গের মত কাটে দুরুদুরু বুকে জ্ঞাত অজ্ঞাত অযাচিত নানা আশঙ্কায়। খোলসের ভেতর ঢুকে যেতে যেতেও ভয়- খোলস অনাবৃত হয়ে পড়বার। গত কিছুদিন ধরে বাড়ির আশপাশে হাসমত আলীর লোকেদের আনাগোনায় ভয়টা ক্রমশ জমাট বেঁধে আতঙ্কে রূপ নিয়েছে। তার উপর ছোড়দার এই হঠাৎ আসার খবর। মিলি বোঝে না এই দুর্যোগের দিনে ছোড়দা হঠাৎ কি মনে করে বাড়ি আসতে চাইছে। শুধু অজানা একটা আতঙ্ক তার পেটের ভেতর দলা পাকিয়ে ক্রমশ গলার কাছে উঠে আসতে চায়। মিলি জোর করে ভয়টাকে মন থেকে দূরে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা করে। ঠিক তখনই জানালার কাছে একটা হতভাগা কাক বিচ্ছিরিভাবে কাঁ কাঁ করে কর্কশ সুরে আর্তচিত্কার দিয়ে ওঠে.........ভীষণ চমকে গিয়ে মিলি হাতের কাছের জলের গ্লাসটা উল্টে ফেলে দেয়। ছোড়দার জন্য মনের অজান্তেই চোখের কোণ থেকে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে। আর এক সমুদ্র গভীর আতঙ্ক তাকে শনির বলয়ের মত চারপাশ থেকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ফেলে..........

০২.
পাক্কা দুই মাস পর আজ ক্যাম্প থেকে বাড়ি যাচ্ছে মইন। কমান্ডার তাকে এই সময়ে বাড়ি যাবার অনুমতি দিতে চাননি। মইন বহু অনুরোধে অনুমতি আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। মিলিটাকে দেখা হয়না কতদিন! ওর মুখ থেকে ছোড়দা ডাকটা একবার শোনার জন্য প্রাণের ভেতরটা আকুল হয়ে আছে। কে জানে এই ক্যাম্প থেকে তার আর জীবিত ফিরে যাওয়া হবে কিনা কোনদিন! পরবর্তী অপারেশন দীঘিনোয়া গ্রামে দিন চারেক পর। খুব জটিল এবং ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন বলেই কমান্ডার আক্রমণ পরিকল্পনা সাজাতে কিছুটা সময় নিচ্ছেন। রেকি হিসেবে খালেদকে পাঠানো হয়েছে আশেপাশের এলাকা ও পাকিস্তানি ক্যাম্প সম্পর্কে যাবতীয় খবরাখবর সংগ্রহের জন্য। মইন ভেবে নিয়েছে এটাই উপযুক্ত সময় একবার বাড়ি থেকে ঘুরে আসার। বাবা আর মিলি নিরাপদেই আছে জেনেছে দুদিন আগেই গোপন সংবাদবাহক মারফত। তবু আদরের বোনটাকে একটাবার দেখার ইচ্ছে মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারে না সে। মৃত্যুপথযাত্রীর শেষ ইচ্ছা কি? ভেবে আনমনেই হেসে ফেলে মইন।
লোকচলাচলের সাধারণ রাস্তা এড়িয়ে একটা ঝুপড়ি জঙ্গলের ভেতর দিয়ে সতর্কভাবে নিঃশব্দে এগিয়ে যাচ্ছিল সে। এই জংলাটা পেরুলেই একটা গরু চড়ানোর বিশাল মাঠের ওপারে তাদের বাড়ি। ঘুটঘুটে রাতের অন্ধকারে তাকে কেউ দেখবে না বলেই বিশ্বাস। ঝোপের শেষপ্রান্তে এসে সাবধানে চারপাশে চোখ বুলালো মইন। তারপর এক লাফে ঝোপের ভেতর থেকে বেরিয়ে মাঠের উপর এসে পড়ল। দ্রুতপায়ে নিঃশব্দে মাঠ পেরিয়ে বাড়ির কাছাকাছি আসতেই আচমকা অন্ধকার ফুঁড়ে বেরিয়ে এসে পথরোধ করে দাঁড়ালো চার পাঁচজন লোক। মুহূর্তেই মইন বুঝে নিল তাদের পরিচয়। সাথে থাকা অস্ত্রটা ক্ষিপ্র গতিতে যখন তুলে ধরতে যাবে ঠিক তখনই মাথায় কোনো ভারী ধাতব বস্তুর প্রচন্ড আঘাত অনুভব করলো সে। মুখ দিয়ে একটা অস্ফুট যন্ত্রণাক্লিষ্ট আর্তনাদ করে সংজ্ঞাহীন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল মইন.........

০৩.
একটা অন্ধকার ঘরের এক কোণে চেতন-অচেতনের মাঝামাঝি অবস্থায় পরিত্যক্ত আবর্জনার মত গুটি পাকিয়ে পড়ে আছে মইন। তার হাত দুটো শক্ত দড়ি দিয়ে পিছমোড়া করে বাঁধা,পা দুটোও। সারা ঘরের মেঝেতে চাক চাক রক্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এখানে ওখানে। কোথাও রক্ত শুকিয়ে পিচের মত কালচে বর্ণ ধারণ করেছে, কোথাও বা একদলা থকথকে তাজা রক্তের গাঢ় লাল রং জমে আছে আল্পনা হয়ে। দেখে মনে হয় পিচকিরি দিয়ে কেউ সেখানে রক্ত ছিটিয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে। গত দুদিন ধরে এভাবেই চলছে মইনের ওপর অমানুষিক নির্যাতন। বেতের মধ্যে লোহা গেঁথে পিঠ ও বুকের উপর টান দিয়ে ছিলে ফেলা হয়েছে তার শরীরের চামড়া। সারা শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে আছে। ধারালো সুঁচ ফুটিয়ে তার সবকটা আঙ্গুলের নখকে করা হয়েছে ক্ষত বিক্ষত। ছাদের সিলিং থেকে উল্টো করে ঝুলিয়ে রেখে অবর্ণনীয় নির্যাতনের পর অবশেষে গামলা গামলা ফুটন্ত গরম পানি ঢালা হয়েছে তার চামড়াবিহীন ক্ষতাক্ত শরীরে। তাতেও মুখ না খোলায় কাল বিকেলে তার আঙ্গুলের নখগুলো সব উপড়ে ফেলা হয়েছে এক এক করে। মইন মুখ দিয়ে আর্তচিত্কারের টুঁ-শব্দটি পর্যন্ত করেনি। প্রবল ঘৃণায় একরাশ থুতু ছিটিয়ে দিয়েছে সামনে বসে থাকা অফিসারটির মুখে। ফলাফল হিসেবে সারারাত ধরে ইলেকট্রিক চেয়ারে বসিয়ে একের পর এক হাই ভোল্টেজের তীব্র ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়েছে তাকে। মইন শুধু অল্প একটুখানি মৃদু তাচ্ছিল্যের হাসি হেসেছে। মুর্খ পাকিস্তানি অফিসাররা যদি জানত, নির্যাতনের ভয়ে সবকিছু প্রকাশ করে দেবার জন্য তারা এতদিন ধরে পরিবার,স্বজন আর প্রিয় মানুষদের ছেড়ে নিজের জীবন বাজি রেখে লড়াইয়ে নামেনি!
আচমকা পেটের কাছে ধাঁই করে সজোরে প্রচন্ড এক বুটের লাথি খেয়ে মইন মুখ দিয়ে অস্পষ্ট গোঙানির আওয়াজ করে উঠলো। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা জওয়ানের জান্তব চিত্কার শোনা গেল- "বোল সালে মুক্তি,তেরে সাথ অউর কৌন কৌন হ্যায়? কাঁহা হ্যায় ও লোগ?" প্রশ্নগুলি গত দুদিনের ভেতর পঞ্চাশবারেরও বেশি সময় করা হয়েছে মইনকে। সে জবাব দেবার কোনো প্রয়োজন বোধ করেনি। এবারও করলো না। অতঃপর জওয়ানটি মইনের চুল ধরে টানতে টানতে তাকে নিয়ে এলো পাশের ঘরে। সেখানে অফিসারটির টেবিলের সামনে রাখা খালি চেয়ারে বসানো হলো তাকে। মুখোমুখি বসা অফিসারটি ক্রুর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল, "তু আপনা মু খোলতা হ্যায় কি হাম তেরে উংলিয়া খুলওয়ালে?" টেবিলের উপর তার অপেক্ষায় পড়ে থাকা ধারালো কাটার মেশিনটা দেখে মইন মুহূর্তেই বুঝে নেয় অফিসারটি কি বলতে চায়। একটা শুষ্ক হাসি দিয়ে সে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা জওয়ানটি তখন এগিয়ে এসে মইনের একটা হাত খপ করে ধরে ওর তর্জনীটা পুরে দেয় মেশিনের ভেতর। তারপর সজোরে চাপ দেয় মেশিনে। সাথে সাথে মইনের নারকীয় আর্তচিত্কারে কেঁপে ওঠে সমস্ত আকাশ বাতাস। হাত থেকে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত গড়িয়ে পড়ে মেঝেতে। রক্তাক্ত কাটা আঙ্গুল পড়ে থাকে টেবিলের ওপর। মইন চেয়ারে বসা অবস্থাতেই এলিয়ে পড়ে। সেই অবস্থাতেই কৌণিক দৃষ্টিতে দেখতে পায়, রাজাকার হাসমত আলী তার তেল চকচকে শরীরে বিগলিত হাসিমুখে অফিসারের দিকে এগিয়ে এসে সালাম ঠুকলো আর গোপনে তার কানে কানে কি যেন বলল। তা শুনে অফিসারের এতক্ষণের বিরক্তি ছেয়ে থাকা মুখে হাসি ছড়িয়ে পড়ল।
অতঃপর দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ আঙ্গুল কর্তনের পরও মইনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহে ব্যর্থ হয়ে জওয়ানটি হিংস্র দৃষ্টিতে অফিসারের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে, "স্যার! আপ কাহে তো উসকি দোনো আঁখে উখাড় দে?" অফিসার কুটিল হাসি হেসে জবাব দেয়, "ঠ্যাহরো! উসকি আঁখো কে লিয়ে অউর ভি আচ্ছা ইলাজ হ্যায় মেরে পাস!"

০৪.
মিলি জানালার গরাদ ধরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাইরের আমগাছটায় শালিক আর চড়ুই পাখিদের আনাগোনা দেখছিল। ছোড়দা গত দুইদিনেও বাড়ি না আসায় সে কিছুটা স্বস্তি অনুভব করছে। শেষ মুহূর্তে ছোড়দার হয়ত মত পাল্টেছে। এই বিপদজনক সময়ে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি আসার কোনো মানেই হয়না। এমনিতেই কিছুদিন আগে হাসমত আলী বাড়িতে এসে কুতকুতে চোখে বাবাকে জেরা করে গেছে ছোড়দার ব্যাপারে। বাবা মুখ খোলেননি ঠিকই কিন্তু কারোরই বুঝতে আর বাকি নেই যে ছোড়দার মুক্তিবাহিনীতে যোগদানের ব্যাপারটা এরা ভালোভাবেই আঁচ করতে পেরেছে।
আকাশপাতাল চিন্তায় হঠাৎ ছেদ পড়ল একটা গাড়ির এগিয়ে আসার শব্দে। জানালা দাঁড়িয়েই মিলি দেখতে পেল, একটা মিলিটারী জিপ ওদের বিশাল উঠানের সামনে এসে ক্যাচ করে ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে পড়ল। দৃশ্যটা দেখে ভয়াবহ আতঙ্কে মিলির সারা শরীর নীল হয়ে গেল। সে একটা অস্ফুট আর্তনাদ করে দুহাতে মুখ ঢেকে মেঝের উপর বসে পড়ল। মিলির বাবা মহিউদ্দিন হোসেইন ঘরের ভেতর নামাজের পাটিতে বসে একমনে জিকির করছিলেন। জিপ থেকে চার পাঁচজন জওয়ান ক্ষিপ্রগতিতে বেরিয়ে এসে চিত্কার করে মহিউদ্দিনকে ঘর থেকে বের হবার নির্দেশ দিল। মহিউদ্দিন সাহেব রক্তশূন্য মুখে বেরিয়ে এলেন। দেখতে পেলেন এক পশু তার কন্যার চুলের মুঠি ধরে তাকে টেনে-হিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে উঠানে এনে দাঁড় করিয়েছে। মহিউদ্দিন সাহেব সেই দৃশ্য দেখে আর্তচিত্কার করতে গেলেন - "আমার মেয়েটাকে ছেড়ে দাও, আল্লাহর কসম লাগে তোমাদের কে!" কিন্তু তার মুখের কথা শেষ হবার আগেই হানাদারদের বন্দুক থেকে তীরের বেগে ছুটে আসা এক ঝাঁক গুলি এসে বিদ্ধ করলো তাকে। মুহুর্তেই রক্তে লাল হয়ে গেল তার পরনের সাদা পাঞ্জাবি।
"মিলিঈঈঈঈই" - বলে এক আকাশ কাঁপানো আর্তনাদ করে মহিউদ্দিন সাহেব রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়লেন মাটিতে...............

০৫.
মইনকে একটা বড় মাদার গাছের সাথে দড়ি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে রাখা হয়েছে। সে যা দেখছে তাতে সে নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছে না। বেজন্মা পাকিস্তানি কুকুরগুলি তার মিলিকে - তার নিষ্পাপ মিলিকে পথের কুকুরের মত টেনে হিঁচড়ে ধরে এনেছে তাদের ক্যাম্পে। তার অসহায় বোনটা অঝোরে কেঁদে কেঁদে পশুগুলির কাছে আকুতি জানাচ্ছে তার ভাইকে ছেড়ে দেবার জন্য। মইনের সারা শরীর ঘৃণায় কুঁকড়ে গেল। অবুঝ মিলিটা জানে না এদের শরীরে দয়া-মায়া নামের কোনো বস্তুর অস্তিত্ব নেই, ছিলনা কখনো। এরা তো মানুষই নয়। চতুষ্পদ জন্তুর চেয়েও নিকৃষ্ট একদল হিংস্র হায়েনা।
অফিসারটি শিয়ালের মত ধূর্ত হাসি ঠোঁটে ঝুলিয়ে মইনের সামনে এসে দাঁড়ালো। চকচক করতে থাকা লোভাতুর দৃষ্টিতে প্রশ্ন করলো, "আব বাতা তু আপনা মু খোলতা হ্যায় কি হাম তেরি খুবসুরত বেহনাকো হামারি আজ রাত কি খানা বানালে?" মইনের শিরদাঁড়া বেয়ে আতঙ্কের হীমশীতল স্রোত বয়ে গেল। তার সমস্ত চিন্তাশক্তি লোপ পেল। সে কেবল বিমূঢ় হয়ে নির্বাক দৃষ্টিতে অফিসারটির দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো।
অফিসারের মুখের কথা শেষ হবার আগেই আচমকা মিলিকে ধাক্কা দিয়ে এনে ফেলা হলো মইনকে যে জায়গায় বেঁধে রাখা হয়েছে তার ঠিক সামনে। মিলি "ছোড়দা" - বলে চিত্কার করে কেঁদে উঠলো। ঠিক তখনই এক পশু তার পরনের কাপড় হ্যাচকা টানে টেনে ছিঁড়ে ফেলল। আর প্রায় সাথে সাথেই অফিসারটি প্রবল বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়ল মিলির ওপর। মইন একটা গগনবিদারী চিত্কার করে চোখটা সেদিক থেকে সরিয়ে নিল আর কাতর কন্ঠে কাঁদতে কাঁদতে চিত্কার করে বলতে লাগলো - ঈশ্বর! তুমি নিষ্ঠুর! তুমি ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর!
মিলির বুকফাটা আর্তনাদের মাঝে মুহূর্তগুলোকে মইনের কাছে মনে হতে লাগলো কয়েক সহস্র বছর। হায়েনার বর্বর দাঁতালো আক্রমণে মিলির স্তনজোড়া ক্ষত-বিক্ষত হবার পর যখন দ্বিতীয় জওয়ান এসে তার রক্তাক্ত যোনিপথে বেয়নেটের আঘাত হানে - ঠিক তখন ঈশ্বর মইনের প্রার্থনা শুনতে পান। আসুরিক শক্তিতে রশির বাঁধন ছিন্ন করে সে তার একমাত্র আদরের বোনটিকে হায়েনার কবল থেকে মুক্ত করতে ছুটে আসে। কিন্তু কাছাকাছি আসা মাত্রই রাতের নিস্তব্ধতাকে খানখান করে আকাশ বাতাস কাঁপানো শব্দে গর্জে ওঠে হানাদার জওয়ানের বন্দুক আর লক্ষ লক্ষ গুলি এসে নিমেষেই ঝাঁঝরা করে দেয় এক সূর্য শপথকারী নির্ভীক তরুণের বুক। ক্ষতবিক্ষত হয়ে পাশে পড়ে থাকা তার ষোলো বছরের কিশোরী বোনটি প্রায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আবছা চোখ মেলে অস্ফুটে একবার তার দিকে হাত বাড়িয়ে আর্তস্বরে ডেকে ওঠে - ছোড়দা! তারপর অচেতন হয়ে তলিয়ে যায় এক অনন্ত অন্ধকার গহ্বরে..........
তথাকথিত স্বাধীন দেশে নতুন ভোরের আলোয় তরুণের দেহ থেকে ঝরে পড়া একবুক উষ্ণ লাল রক্ত সমস্ত পথ জুড়ে ছড়িয়ে যেতে যেতে মিশে যায় দিগন্তের লাল সূর্যের সাথে। আর একদল লাশখেকো শকুন সেই রক্তের উপর ঘুরে ঘুরে আসন্ন ভোজোনোৎসবের উন্মাতাল আনন্দে নারকীয় উল্লাসনৃত্য করতে থাকে........
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১০ ভোর ৪:২৬
৬৬টি মন্তব্য ৬৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×