somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বলিউডের অনাকাঙ্খিত ফ্লপ ২০০৮

০৭ ই জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি মুভি সুপার হিট হবে বলে ধারণা করা হয়েছে, অথচ মুভিটি হয়েছে ফ্লপ, কিংবা আরেকটি মুভি এভারেজ ব্যবসা করবে বলে ধারণা করা হলো, অথচ রিলিজের পর সেটিই হয়ে গেলো হিট - এরকম ঘটনা মুভি ইন্ডাস্ট্রিতে বিরল নয়। সদ্য পার হওয়া ২০০৮ সাল বলিউডের এমন কিছু মুভির সাক্ষী হয়ে রয়েছে, যেখানে অনাকাঙ্খিতভাবে মুভিটি হয়েছে ফ্লপ। তেমন ৬ টি মুভির কথা এখানে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:

১. তাশান

মুভিটি এসেছিলো ইনডিয়ার টপ প্রডাকশন হাউজ ইয়াশ রাজ ফিল্মস-এর ব্যানারে এবং এর কাস্টিংয়ে ছিলো অনিল কাপুর, অক্ষয় কুমার, সাইফ আলি খান ও কারিনা কাপুরের মতো নাম। তাই মুভিটির কথা ঘোষণার পর থেকেই আলোচনায় ছিলো এটি; হোক সেটা কারিনার সাইজ জিরো এবং বিকিনি অ্যাক্ট, কিংবা সাইফ ও কারিনার রিয়েল লাইফ কেমিস্ট্রির জন্য। কিন্তু রিলিজের পর প্রথম শোতেই দর্শকদের প্রত্যাশা পানিতে মিশে যায়। অক্ষয়ের গুডলাক, কারিনার স্টাইল এবং ইয়াশ রাজ ফিল্মস-এর ফর্মূলা কোন মতেই মুভিটিকে ফ্লপ হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে পারেনি।

রেজাল্ট: মাল্টিপ্লেক্স মালিকদের সাথে মুভিমেকারদের দ্বন্দ্বের কারণে প্রথম সপ্তাহে মুভিটি কেবল একটি স্ক্রিনে রিলিজ পায়। তবে ফার্স্ট ইমপ্রেশনই মুভিটির জন্য লাস্ট ইমপ্রেশন হয় এবং এটি হয় গত বছরের অন্যতম ফ্লপ-বাস্টার মুভি।

২. লাভ স্টোরি ২০৫০

প্রত্যেক বাবাই চায় তার সন্তানের জন্য নিজের বেস্ট টা দিতে। সেই দিক থেকে ডিরেক্টর হ্যারি বাওয়েজাও ব্যতিক্রম নন। বলিউডে ছেলে হারমান বাওয়েজার ডেবুটাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য কোন কিছুই বাদ রাখেনি তিনি। তিনি এমন একটি স্ক্রিপ্ট নিয়ে হাজির হন, যেখানে অভিনেতা, ডান্সার ও ফাইটার হিসেবে নিজের প্রতিভা ও দক্ষতা দেখানোর সুযোগ পেয়েছিলেন হারমান। তাছাড়া এটি ছিলো ইনডিয়ার প্রথম সাইন্স ফিকশন মুভি। মুভিতে ভবিষ্যতের রূপ বাস্তবের মতো দেখানো জন্য স্পেশাল ইফেক্টের পেছনে অনেক অর্থ ব্যয় করেন তিনি। তার ওপর হারমানের বিপরীতে ছিলেন বলিউডের অন্যতম লিডিং লেডি প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি; দর্শকদের ইমপ্রেস করার পরিবর্তে ঋত্বিক রোশানকে কপি করার বদনাম ঘাড়ে নিতে হয় হারমানকে।

রেজাল্ট: সব লাভস্টোরির যেমন হ্যাপি এন্ডিং হয় না, তেমনি প্রডিউসারদের জন্য লাভ স্টোরি ২০৫০-ও হ্যাপি এন্ডিং এনে দিতে পারেনি। সুপার ফ্লপ।

৩. থোড়া পেয়ার থোড়া ম্যাজিক

এর আগে ইয়াশ রাজ ফিল্মস-কুনাল কোহলি-রানি মুখার্জি কম্বিনেশন হিট মুভি হাম তুম (২০০৪) উপহার দিয়েছিলেন। তাই, এই কম্বিনেশন যখন তাদের দ্বিতীয় এই প্রজেক্টটি নিয়ে হাজির হলেন, স্বভাবতই এটা নিয়ে দর্শকদের প্রত্যাশার পরিমাণও বেশি ছিলো। মুভি ম্যারি পপিনস্ (১৯৬৪)-এর ইন্সপায়ারেশনে স্টোরি সাজান কুনাল কোহলি, যেখানে চারটি এতিম বাচ্চার জন্য রানি মুখার্জি একটি অ্যাঞ্জেল হিসেবে আসেন। এছাড়া, সুইমশুট পড়া আমিশা প্রমাণ করেন তার ক্যারেক্টারের সিজলিং রূপটি। তাছাড়া একই দিনে রিলিজ পাওয়া প্রায় একই ধরণের টাইটেল থোড়া লাইফ থোড়া ম্যাজিক কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো মামলা ঠুকে দেয় এই মুভিটির বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয় মুভিটি।

রেজাল্ট: এই প্রথম কোন মুভিতে না কাঁদলেও রানি মুখার্জি হয়তো মুভির আউটকামে হাসতেও পারেননি। দর্শকদের উপর মুভিটি কেবল থোড়া (অল্প) ম্যাজিক চালাতে পেরেছে, আর পেয়েছেও থোড়া পেয়ার।

৪. কার্জ

নাকি কন্ঠের হিমেশ রেশামিয়ার ডেবু মুভি আপ কা সুরুর (২০০৭) প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সাফল্য পেয়েছিলো। হয়তো সেই কারণেই বিভ্রান্ত হয়ে অভিনেতা হিসেবে পরিপক্কতা পাবার বেশ আগেভাগেই কার্জ (১৯৮০) মুভিটিতে রিশি কাপুর অভিনীত মন্টি চরিত্রে অভিনয়ের রিস্কটা নিয়ে ফেলেছেন এই সিংগার-কম্পোজার-অ্যাক্টর। তাছাড়া মুভিটির নামের ইংরেজি স্পেলিংয়ে এক্সট্রা তিনটি জেড মুভিটি নিয়ে আরো আলোচনার সুযোগ করে দেয়। কিন্তু মুভি রিলিজের পর দর্শকরা হতাশ হয় এবং আপসোস করে তাদের প্রিয় ক্লাসিক কার্জ (১৯৮০)-এর এমন পোস্টমর্টেম রূপ দেখার জন্য। হিমেশ ও উর্মিলাকে নিয়ে দর্শকদের হাসাহাসির ফাঁকে নজর কারেন ডেবুট্যান্ট অভিনেত্রী শ্বেতা কুমার।

রেজাল্ট: সংখ্যা ও বর্ণ জ্যোতিষদের কারসাজি ব্যর্থ হয়েছে। হয়তো তিনটি জেড- এর উল্টো রিঅ্যাকশনে মুভিটি পেয়েছে বড় একটি জিরো ! ফ্লপ হওয়া এই মুভিটি হয়তো অভিনেতা হিসেবে হিমেশের পরবর্তী মুভিতে টনিক হিসেবে কাজ করবে।

৫. ড্রোনা

ডিরেক্টর গোলদি ভেল ও অভিষেক বচ্চন যখন বাস ইতনা সা খোয়াব হে (২০০১) বানান তখন থেকেই হয়তো তারা এমন একটি ফ্যান্টাসি মুভি বানানোর চিন্তা করেছেন, যেখানে সোর্ডফাইট থাকবে, হর্স চেজ থাকবে, লেডি ওয়ারিয়র থাকবে। গত বছর সেই চিন্তাই হয়তো ড্রোনা হিসেবে ধরা দিয়েছে। স্পেশাল ইফেক্ট, কস্টিউম, সেট ও অ্যাকশন সিকোয়েন্সে মুভির খরচ এটিকে বানিয়েছিলো বছরের অন্যতম ব্যয়বহুল মুভি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মুভিটি দর্শকদের পকেট থেকে অর্থ খরচ করাতে ব্যর্থ হয়েছে। ওয়ারিয়র কাম সুপারহিরো হিসেবে খ্যাতি পেতে এসে ব্যর্থ হিরো হিসেবে ফিরতে হয় অভিষেককে।

রেজাল্ট: হয়তো এই মুভিটি ফ্লপ হওয়াতে ফ্যান্টাসির জগত থেকে এবার রিয়েলিস্টিক মুভি বানানোর দিকে নজর দেবেন গোলদি ভেল।

৬. কিডন্যাপ

প্রডাকশন হাউজ শ্রী আশতাভিনায়ক সিনেভিশন লিমিটেড এর আগে ভাগম ভাগ, গোলমাল, যাব উই মেট-এর মতো হিট মুভি উপহার দিয়েছে। তাই যখন তারা ধুম উপহার দেয়া ডিরেক্টর সঞ্জয় গাধভির সাথে যোগ দেন, তখন এই অ্যাকশন-থ্রিলার মুভি নিয়ে দর্শকরা বেশ এক্সাইটেড ফিল করতে আরম্ভ করে। অভিজ্ঞ সঞ্জয় দত্তর সাথে যোগ দেয় জানে তু ইয়া জানে না (২০০৮)-র কিউট লুক ছেড়ে কিডন্যাপার লুকে আসা ইমরান খান ও গ্লামার গার্ল মিনিশা লাম্বা। উপরন্তু মিনিশার সেক্সি বিকিনি দৃশ্য মিডিয়াতে ব্যপক প্রচারণা পেলে দর্শকরা আরো আগ্রহী মুভিটি নিয়ে। ইমরান যথাসাধ্য চেষ্টা করলেও সঞ্জয়কে পুরো মুভিতেই আউট অফ ট্রাক লেগেছে। তার ওপর, মুভিটির কিছু স্টুপিড সিন দর্শকরা হজম করতে পারেনি; সব মিলিয়ে নামের পাশে অবশেষে ফ্লপ কথাটি যোগ হয়েই গেলো।

রেজাল্ট: মুভি দেখে অনেক দর্শকেরই এমন মন্তব্য ছিলো যে, তাদেরকে যেন কিডনাপ করে বা জোর করে এই বোরিং মুভিটি দেখতে আনা হয়েছে। একই সাথে ফ্লপের স্বাদ পেলো শ্রী আশতাভিনায়ক সিনেভিশন লিমিটেড ও সঞ্জয় গাধভি।

আজ যায়যায়দিন-এ প্রকাশিত:
(Click This Link)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ২:১৪
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×