ফুফু আপনার কবর কোথায় দেওয়া হবে?
- আমার বাবার পাশে।
শুন, তোর ফুফু-আব্বা মারা যাওয়ার আগে আমি তাকে বলেছি -দেখো, তোমার যদি কবরে আমার সাথে থাকার ইচ্ছা থাকে তাহলে আমার বাপের বাড়ির করবস্থানে তোমাকে কবর দিব। যদি তোমার কবর তোমার বাপের বাড়ির কবরস্থানে দেওয়া হয় তাহলে কিন্তু আমি তোমার সাথে নেই।
-আপনি এ রকম বলেছিলেন?
- হু, আমি কবরে আমার বাবার সাথে থাকতে চাই, তাই আমি তাকে মৃত্যুর আগে বিষয়টি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছি। তারপরও তার বাপের বাড়ির কবরস্থান যখন ভাল লাগল তো আমার তো করার কিছু।
( এ সব কথা যিনি তিনি আমার বড় ফুফু, বয়স এখন একশ’ পনেরোর কাছাকাছি)
তার বাবা, মানে আমার দাদা সাহেব, মারা গেছেন প্রায় পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন বছর আগে তারপরও বাবার প্রতি এমন ভালবাসা দেখে সত্যিই অবাক হতে হয়।
দ্বিতীয় ঘঠনা
আজ ঈদের দিন। সবাই আত্বীয়-স্বজনদের দেখতে যাচ্ছে। বিষেশতঃ বয়স্কদের যাদের সাধারণত অন্য সময় দেখার সুযোগ হয় না।
আমার বড় জেঠা। নাম হাসান আহমাদ। অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক। তিনি দেখতে গেলেন পরিবারের সকলের বড় বোনকে।
অনেক দিন পর ভাইয়ের দেখা। ভাই-বোনের মাঝে অনেক্ষণ ধরে কথা-বার্তা চলল। দু’জনেই যেহেতু মৃত্যুপথযাত্রি, যদিও আমরা সবাই মৃত্যু পথ যাত্রি, কথার এক ফাঁকে কবরের জায়গা অর্থাৎ বোনের মৃত্যুর পর কোথায় তাকে দাফন দেওয়া সে আলোচনা এসে গেল।
বোন বললেন- আমি মারা গেলে তোরা আমাকে আমার বাপের কবরস্থানে আমার বাপের কাছে কবর দিবি।
ভাই বললেন- অবশ্যই, তুমি শুধু দোয়া করো, যেন তুমি আমার আগে মারা যাও। তাহলে আমি সব কিছু দেখে শুনে তোমাকে কবর দিবো।
বাপের পাশে কবরে থাকার আশায় বেচারি বোন এখন মনে-মনে দোয়া করছে যেন তিনি ভাইয়ের আগে মারা যান!