আমরা দেশ, সভ্যতা, জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং মানুষ হিসেবে পিছিয়ে পড়ে আছি বাকি আধুনিক বিশ্ব থেকে অনেক পিছনে! এই আধুনিক যুগে এসেও আমরা উদ্ভট উদ্ভট কাজকর্ম বিশ্বাস করি।
গতকাল দেখলাম কিশোরগঞ্জে এক কাঠুরিয়া পানি পড়া দিচ্ছে। জনে জনে দিতে পারছে না। সেখানকার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান খোলা মাঠে স্টেজ করে মাইকের মাধ্যমে ফুঁ দিয়ে পানি পড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। পানি পড়া নিতে যেনো কোন বিশৃঙ্খলা না হয়, ওসি সাহবে তার ব্যবস্থা করেছেন এবং কাঠুরিয়াকে দ্রুত পানি পড়া দেওয়া শেষ করতে অনুরোধ করেছেন। বিরূপ আবহাওয়া, বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ বোতল নিয়ে অপেক্ষা করছে পানি পড়ার জন্য।
এই পানি পড়ায় সব ধরনের রোগশোক ভালো হয়, যাদের রোগ নেই তাদের মনবাসনা পূর্ন হয়। এইসব বিশ্বাস করে হাজার হাজার মানুষ স্টেইজের সামনে বোতল নিয়ে ঠেলাঠেলি করছে! এমন দৃশ্য দেখলে আপনার করুণা হবে, নাকি রাগ হবে, নাকি আপনিও বোতল হাতে দাঁড়াতে না পারার আক্ষেপ করবেন?
কিশোরগঞ্জ আমাদের রাষ্ট্রপতির এলাকা, উনার এলাকার মানুষের যদি এই অবস্থা হয় বাকি এলাকার মানুষের কি অবস্থা! উনার কানে খবরটা গেলে উনি কি বলবেন, জানতে ইচ্ছে হয়। আমার মনে হয় উনি বলতেন, আমি এদের এসবে যেতে না করেছি, কি করবো এরা সহজ সরল মানুষ তাই এসবে বিশ্বাস করে ঠকে যায়।
আমরা মনে করি আমাদের রাষ্টপতির আসলে কোন কাজ নেই, উনাকে শুধু পুতুল হিসাবে বসিয়ে রাখা হয়। আসলে উনার দায়িত্ব বিশাল এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ চাইলে উনি করতে পারেন। রাষ্ট্রপতি হিসাবে দেশের মানুষকে সুশিক্ষিত করা, আধুনিক শিক্ষার সাথে তাল মিলিয়ে তাদেরকে শিক্ষিত করা এবং সকল প্রকার কুসংস্কার, উদ্ভট ধ্যান ধারণা থেকে মুক্ত রাখা উনার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
কিশোরগঞ্জের সাধারণ মানুষের কথা বাদ দিলাম, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ওসি সাহেবের যদি এই অবস্থা হয় সেটাকে কি হিসেবে দেখা যায়! নতুন নতুন উদ্ভাবনে যেসব দেশ এগিয়ে, আধুনিক বিশ্বে তারাই উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। আমাদের দেশে নতুন কি উদ্ভাবন হবে, হাজার বছর আগের উদ্ভাবিত পানি পড়ার প্রতি এখনো মানুষের এত আগ্রহ!
তবে আশার কথা হচ্ছে সে এলাকার মসজিদের খতিব বলেছে এগুলা ভন্ডামি, এতে ঈমান নষ্ট হবে এবং ইসলামে কুসংস্কারের কোন স্থান নেই!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১২