গত কয়েকদিন আগে ফ্রান্সে কি হয়েছিল? একজন শিক্ষক ক্লাসে আমাদের নবীর ব্যঙ্গচিত্র দেখিয়েছিলেন, বলা হয়েছিল তার উদ্দেশ্যে ছিল বাকস্বাধীনতা ও ব্যক্তিস্বাধীনতার বিষয়ে বুঝানো। এটার পর এক মুসলিম যুবক তার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার কারনে তাকে গলা কেটে হত্যা করে। এরপর ফ্রান্স সরকার স্বউদ্যেগে ফ্রান্সে আরো অনেক গুলো ব্যঙ্গ চিত্র প্রদর্শন করে। এছাড়াও কিছু মসজিদ যেগুলো থেকে এমন সাম্প্রদায়িক কর্মকান্ড পরিচালিত হয় বলে ধারণা করা হয়, সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। যে ছেলেটি তার শিক্ষককে হত্যা করেছে সে কি ঠিক কাজ করেছে? অবশ্যই ঠিক কাজ করেছে। আর একেবারে ঠিক না হলেও অন্যায় কিছু করেনি। আমাদের নবীকে অবমাননা করার শাস্তি অব্যশই অবমাননাকারীকে কতল করা।
রাসূলের অপমানে কাঁদে না যার মন,
কে বলে মানুষ তারে, রাসূলের দুশমন।
কাজী সাহেবের এই লাইন দুইটা কয়েকদিন থেকে ফেইসবুকে সয়লাব হয়ে গেছে, ব্লগেও কেউকেউ লিখেছেন। কিন্তু বেচারা সে মুসলিম যুবকটির কথা বলছেনা যে এমন সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে! রাসূলের অবমাননা যে সহ্য করতে পারেনি। সে সাহসী মুসলিম যুবকের হত্যাকারী পুলিশের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলছে না!
যাক, এতটুকু পর্যন্ত পড়ে যারা আনন্দ পেয়েছেন তারা আর না পড়লেও চলবে।
আসলে ফ্রান্স হলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাকস্বাধীনতার ক্ষেত্রে এগিয়ে। যে বাঁচার স্বাধীনতায় সে চেচনিয় যুবকটিকে সরকার আশ্রয় দিয়েছে ঠিক একই কারণে যেকোন কিছুর প্রতিবাদে যে কাউকে কার্টুন আঁকার স্বাধীনতা দিয়েছে। আমাদের নবীকে ব্যঙ্গ করার কারনে যদি খারাপ লাগে অন্যায় মনে হয় তাহলে সেটার জন্য প্রতিবাদ করার অধিকার ফ্রান্সে আছে। আপনার খারাপ লাগার বিষয়টি সেখানকার মুসলিম ধর্মীয় কোন সংগঠনের মাধ্যমের সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যেত। বর্তমান সরকার যারা ক্ষমতায় আছে তারা কিন্তু সংখ্যালঘুদের অধিকারে সবসময় সোচ্চার ছিল। কিন্তু মুসলিমদের দ্বারা বারবার আক্রান্ত হওয়াতে তারাও অসহ্য হয়ে পড়েছে। এখন তারা যা করছে এটা সেখানে সংখ্যালঘুদের বিপদে ফেলে দিবে। স্থানীয় জনগণ হয়ত মুসলিমদের ঘর ভাড়া দিতে চাইবে না, কাজে রাখতে চাইবে না এমনকি কটু কথাও শুনাবে। এসব কিছু আমাদের মুসলিমদের বাকি বিশ্ব থেকে আলাদা করে রাখবে।
ফ্রান্সের এমন কাণ্ডে আমরা তাদের ধুঁয়ে দিচ্ছি কিন্তু তারা এমন কেন করছে সেটার কারন অনুসন্ধান করছি না। যারা জাতি,ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে অনেককেই তাদের দেশে আশ্রয় দিয়েছে হঠাৎ করে তারা কেন শুধুমাত্র মুসলিমদের উপর এত ক্ষেপে গেলো! এগুলোর লজিক্যাল উত্তর হলো আমাদের মধ্যে গোড়ামী বেশি, কোন সভ্য জাতির সাথে বসবাস করতে আমরা অভ্যস্ত নয়, ফ্রান্স, আমেরিকা বসেও সেখানে শরীয়া আইন কায়েম করার স্বপ্ন দেখি। তাদের আইন ভঙ্গ করার চেষ্টা করি। তাদেরকে ইহুদি নাসারা হিসেবে দেখি মানুষ হিসেবে নয়।
আর ইলজিক্যাল উত্তর হলো, এগুলো সব ইহুদি নাচারাদের ষড়যন্ত্র।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৫৬