দেশে ভাষ্কর্য আর মূর্তি নিয়ে বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা। এমন অবস্থা এর আগে আর হয়নি কখনো। এমন না যে মূর্তি, ভাষ্কর্য গুলো এখানে নতুন এসেছে। মূর্তি, ভাষ্কর্য হারাম হওয়ার আগেই এই এলাকায় এগুলো ছিল। এগুলোকে পরে হারাম করা হয়েছে আর এখন উচ্ছেদ করার ঘোষণা আসছে।
আরবে যখন ৩০০ মূর্তি ভাঙ্গা হচ্ছিল তখন এখানে লাখ লাখ মূর্তি বানানো হচ্ছিল, সেটা এই এলাকার মানুষও জানতো না, আরবের মানুষেরাও জানতো না। যাই হোক পরে এসব জানাজানি হওয়ার পরেও এসব এলাকায় এমন কঠিন অবস্থান তৈরি হয়নি মূর্তি আর ভাষ্কর্য নিয়ে।
আজ আমাদের ওলামাগন একটি বৈঠক ডেকেছে আমাদের জাতিকে তারা পরিষ্কার করে জানাবে ভাষ্কর্য স্থাপনের ফতোয়া কি।
সেই যাই হোক, আজকের বৈঠকে তারা কি জানাতে পারে এতদিনের কথাবার্তায় আপনি নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পেরেছেন? এই রকম বৈঠক কি করতে দেওয়া উচিত, নাকি অনুচিত? এমন প্রশ্ন করলে অবশ্য অনেকেই আন্দাজ করতে পারবেন না, কি উত্তর দিবেন। সঠিক কথা হচ্ছে এমন বৈঠক করতে দেওয়া উচিত হবে না শেখ হাসিনার। বাংলাদেশ কি মদীনা সনদ কিংবা শরিয়া আইনের উপরে চলে? এই দেশে কি ফতোয়া দেওয়া বোর্ডের ফতোয়ায় দেশ চলে? দেশে কি সংবিধান নেই, সেখানে কি এর সমাধান নেই? হ্যাঁ, সমাধান আছে, যেটার সমাধান সংবিধানে আছে সেটা নিয়ে আবার কিসের ফতোয়া দিবেন আমাদের আলেমগণ? যাক আলেমরা ফতোয়া দিলে সেটা বিল আকারে সংসদে এনে সেটাকে আইন করার এখনো কোন সম্ভাবনা নেই। আলেমদের এমন কর্মকাণ্ড শেখ হাসিনার হজম হতে নিশ্চয়ই কষ্ট হচ্ছে। উনি হয়তো বুঝতে পারছেন না উনি কি ভুল করেছেন যার জন্য আলেমরা উনাকে বিপদে ফেলছেন।
আসলে এসব ব্যাপারে উনার ভুল অনেক, উনি নিজেই এসব ভুল করেছেন উনার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে। দেশের মানুষকে উনি বুঝিয়েছেন শফি হুজুর, বাবু নগরী, মামুনুল হক উনাকে সন্মান করেন, উনার কথা শুনেন, উনাকে কওমী জননী বলে ডাকেন। সত্যি বলতে এসব জোঁকের তেল উনার ব্যথার সাময়িক উপশম দিয়েছে। এখন ঐ অস্বাস্থ্যকর তেল ব্যথার জায়গায় ক্ষত করার চেষ্টা করছে! এদের সামলাতে গিয়ে উনি জাতির সম্পদ নষ্ট করবেন, নিজের মূল্যবান সময় অপচয় করবেন এবং শেষমেষ উনি তাদের সাময়িক ভাবে থামিয়ে দিবেন।
স্বাধীনতার পর জাতির এই বিশাল অংশটি সঠিক শিক্ষা না পেয়ে নিজেদের এদের কাছে সঁপে দিয়েছে। তাদের খাওয়া পড়ার দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি তাদের মস্তিস্কও নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে এরা। এই থেকে মুক্তি পেতে হলে, তাদেরকে জাতির সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে, বাকি জনগনের সাথে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা তৈরি করে দিতে হবে। খালি দাওরায়ে হাদীসকে মাস্টার্স সমমানের সার্টিফিকেট দিয়ে বসে থাকলে হবে না। এই সার্টিফিকেটের সাথে কৌশলে কিছু বিষয় জুড়ে দিতে হবে যাতে এদের বের করে আনা যায় অজ্ঞতা থেকে। এখন এসব কিভাবে হবে এটা বের করতে হবে পলিসি মেকারদের। তা নাহলে সামনের দিন গুলোতে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য সাথে শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ, রাজু ভাষ্কর্য এগুলোও বুড়িগঙ্গাই ফেলে দিতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৩:১১