somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্ষতিকর উপাদানে তৈরি হচ্ছে এনার্জি ড্রিংকসঃ হতে পারে অকাল মৃত্যুর কারণ

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সোডিয়াম বেনজয়েট, ক্যাফেইন ও স্যাকারিন নামের ওই উপাদানগুলো বেশি হারে শরীরে গেলে তা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে; কিডনি ও লিভারের ক্ষতি করতে পারে; ডেকে আনতে পারে অকালমৃত্যু। অথচ এই মাত্রাতিরিক্ত তিনটি উপাদান মিশিয়ে নিম্নমানের এনার্জি ড্রিংক বানিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে দেশের আনাচ-কানাচে। আর অসচেতন অভিভাবকরা শিশু ও উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েদের সেগুলো কিনে খাইয়ে তাদের ঠেলে দিচ্ছেন অকালমৃত্যুর মুখে। বাজারে দুই ধরনের এনার্জি ড্রিংক আছে। বেশ কিছু বড় খাদ্য ও পানীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কিছু এনার্জি ড্রিংক বাজারে ছেড়েছে। আবার কিছু এনার্জি ড্রিংক অখ্যাত, নামহীন কম্পানি গোপনে উৎপাদন করে। এসব কম্পানির উৎপাদিত এনার্জি ড্রিংকেই বেশি মাত্রায় ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে বলে পরীক্ষায় দেখা গেছে। ‘পাওয়ার’ অথবা ‘ফিলিংস’ নাম দিয়ে যেসব এনার্জি ড্রিংক বাজারজাত করা হচ্ছে, তাতে তিনটি উপাদান মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি হারে ব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (আইপিএইচ)। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরিতে দেশের আনাচ-কানাচে প্রচলিত এসব পানীয়র প্রায় ২৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২২টি নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠিয়েছে বিভিন্ন থানার পুলিশ। বাকি সাতটি নমুনা জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট নিজেরাই পরীক্ষা করেছে। পুলিশের নমুনাগুলোর পরীক্ষার ফলাফল জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই প্রকাশ করতে রাজি হয়নি। ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ কোনো পানীয়র ব্র্যান্ড নাম প্রকাশ করেনি। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যে ২৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে তার মধ্যে বেশির ভাগ স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত হর্স ফিলিংস, মন পাওয়ার আপ, মেন পাওয়ার, শক্তি প্লাস, জিনসেন প্লাস ইত্যাদি নামের। কয়েকটি পানীয় বড় বড় কম্পানি উৎপাদন করে। তবে বড় কম্পানির পানীয়তে সোডিয়াম বেনজয়েট নির্ধারিত মাত্রার কম পাওয়া গেছে। তবে বেশি পাওয়া গেছে ক্যাফেইন।


ওই পানীয়গুলোতে প্রিজারভেটিভ বা সংরক্ষক হিসেবে সোডিয়াম বেনজয়েট নামে এক ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। ক্যাফেইন ব্যবহার করা হয় উত্তেজনা তৈরির জন্য এবং স্যাকারিন ব্যবহার করা হয় কম খরচে পানীয় মিষ্টি করার জন্য। সোডিয়াম বেনজয়েট ও ক্যাফেইন ব্যবহার নিষিদ্ধ নয়, তবে সারা বিশ্বেই এর মাত্রা নির্ধারিত আছে। বেশি মাত্রায় ব্যবহার করলে তা স্বাস্থ্যের নানা ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। অন্যদিকে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) তাদের আওতাভুক্ত খাদ্যপণ্যে স্যাকারিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। স্যাকারিন ক্যান্সার তৈরি করে বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষায় দেখা গেছে, ওই পানীয়গুলোতে এই তিনটি উপাদানই অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহার করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমেস্ট্রি অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলোজি বিভাগের অধ্যাপক ড. হুসেইন উদ্দিন শেখর বলেন, সোডিয়াম বেনজয়েট ভিটামিন সি-র সঙ্গে মিশলে বেনজেন গঠন করে। এই বেনজেন লিউকোমিয়া বা ব্লাড ক্যান্সারের কারণ। স্যাকারিন যে ক্যান্সার তৈরি করে তা অনেক আগেই প্রমাণিত। আর মাত্রার চেয়ে বেশি ক্যাফেইন পেশিকে শিথিল করে দেয়। পরে ক্যাফেইন না নিলে আর পেশি শক্তি পায় না। এসব পানীয় ছোট ছোট কারখানায় গোপনে তৈরি করা হয়। সেখানে কোন উপাদান কোন মাত্রায় ব্যবহার করা হচ্ছে তা পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা থাকে না। উৎপাদনকারীরা নিজের ইচ্ছামতো মিশিয়ে পানীয় তৈরি করে। এগুলো উৎপাদনে বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না, কারণ এনার্জি ড্রিংক সংস্থাটির বাধ্যতামূলক মান পরীক্ষার আওতায় নেই বলে জানিয়েছেন বিএসটিআইয়ের পরিচালক (সিএম) কমল প্রসাদ দাস।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. খালেদা আক্তার বলেন, অতিমাত্রায় ক্যাফেইন গ্রহণ কিডনি ও লিভারকে ঝুঁকির মুখে ফেলে। স্যাকারিন যে ক্যান্সার তৈরি করে তা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। ভোক্তা অধিকার সংগঠন ভলান্টারি কনজ্যুমার ট্রেনিং অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস সোসাইটির (ভোক্তা) নির্বাহী পরিচালক খলিলুর রহমান বলেন, এনার্জি ড্রিংকের নামে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে যেসব পানীয় বাজারজাত করা হচ্ছে তাতে মান রক্ষার কোনো বালাই থাকছে না। ওই সব পানীয়র ক্রেতা মূলত উঠতি বয়সীরা। দীর্ঘদিন ধরে ওই সব পানীয় পান করে তারা জীবনীশক্তির ক্ষয় করছে। ওই সব পানীয় সাময়িক উত্তেজনা তৈরি করলেও তা অকালমৃত্যু ডেকে আনে।
সূত্রঃ সাতলা নিউজ২৪.কম
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২০
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×