somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারীর পর্দাহীনতা নয়, নর জাতির 'তেঁতুল' এবং 'মাছি' তত্বই নারী নির্যাতনের মূল কারণ

২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নারীদের দেখলে পুরুষেরা তাদের প্রতি আকর্ষণ বোধ করবে এটা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক একটা ব্যাপার। আবার নারীদের প্রতি আকর্ষণ বোধ করলেই কিন্তু পুরুষেরা প্রাকৃতিক ক্ষুধা মেটানোর জন্য তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়বেনা- এটা নৈতিকতা। নৈতিকতাই মানুষকে অন্য সব বন্য প্রাণী থেকে করেছে স্বতন্ত্র। সম্প্রতি পহেলা বৈশাখ উজ্জাপনের সময় টিএসসিতে যে কতিপয় পুরুষরুপি নরপিশাচ নারীদের উপর ঝাপিয়ে পড়ল, তাদের বস্ত্র হরণ করলো, তাদেরকে দল বেঁধে যৌন নির্যাতন করলো- তা সবই পুরুষ সমাজের নৈতিকতার অবক্ষয়ের ফল; এর জন্য মহিলাদের পর্দা না করা অথবা নাভির নিচে শাড়ি পড়ার অজুহাত সম্পূর্ণই ভ্রান্ত।

কতিপয় পুরুষের নারীদের উপর এধরনের আগ্রাসনের মূল কারণ হচ্ছে নারীদের প্রতি তাদের মূল্যবোধের অভাব। নারীদের প্রতি এধরনের বিবেক বিবর্জিত পুরুষ সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ন্ত্রিত হয় মূলত তাদের জৈবিক তাড়নার মধ্য দিয়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এধরনের পুরুষ নিস্ক্রিয় থাকলেও, সুযোগ পেলেই এরা পশুবৃত্তিতে অবতীর্ণ হয়। নৈতিকতা বিবর্জিত জৈবিক তাড়নায় তাড়িত এই পুরুষেরা প্রকৃতপক্ষে এক ধরনের মানুষিক রুগী, যারা সেক্স অফেন্স এ জড়িয়ে পড়ার জন্য ভয়ঙ্কর ভাবে প্রস্তুত।

নারীদেহের সামান্যতম অনাবৃত অংশ চোখে পরলেও এদের বিবেকহীন কামতাড়না প্যান্টের জিপার খুলে বের হয়ে আসে অবলীলায়। আমাদের সমাজে নারী পুরুষ কাঁধেকাঁধ লাগিয়ে কাজ করছে, ঘুরছে ফিরছে,- কিন্তু কই, সব পুরুষ তো এভাবে নারীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছেনা, অথবা করছেনা কোনো যৌন হয়রানি? কারণ আমরা যে সমাজে বসবাস করি সেখানে সিংহভাগ পুরুষই চালিত হয় নৈতিকতা দিয়ে, তারা জানে সামাজিকতা, তাদের রয়েছে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধ্যা। নারীর সংস্পর্শে যে প্রাকৃতিক পৌরুষীক উদ্দীপনার সঞ্চার হয় তা তারা দমন করে তাদের বিবেক এবং নৈতিকতা দিয়ে।

আবার, যে সমাজ শিক্ষা দেয় যে নারীরা হচ্ছে 'তেঁতুল', এদের দেখলে পুরুষদের জিভে পানি আসতেই হবে; আর জিভে পানি আসার ফলে ওই পুরুষটি যদি নারীটিকে চেঁটে দেয় তাতে পুরুষের কোনো দোষ নেই, দোষ সব ওই নারীর। অথবা যে সমাজে বোরকা বিহীন নারীদের তুলনা করা হয় খোসাছাড়া কোনো ফলের সাথে যেখানে মাছিরুপি পুরুষ ঘোরাঘুরি করবে এবং ইচ্ছে হলে ফলটির গায়ে উগরে দেবে বমি অথবা বীর্য; এতে ওই মাছিরুপি পুরুষটির কোনো দোষ নেই। সব দোষ ওই বোরকা বিহীন নারীর! আবার যে সমাজ বলে যে নারী দেখে বা সংস্পর্শে এসে যে পুরুষটির জিহব্বায় পানি আসেনা, কিংবা যে পুরুষটি মাছি হয়ে নারীটিকে ঘিরে ধরেনা সে পুরুষটি নপুংশক! নৈতিকতায় দীক্ষিত যে পুরুষটি আগলে রেখেছে তার প্যান্টের জিপার, জিভকে করেছে সংযত, নারীকে বিচার করেছে মানুষ হিসেবে, সহপাঠি অথবা সহকর্মী হিসেবে, এই সমাজের দৃষ্টিতে সেই পুরুষটিই নপুংশক!

এই সমাজে এই 'নপুংশক' পুরুষদের মাঝেই থরেথরে জন্ম নিচ্ছে বীর্যবান পুরুষ মাছির পাল। শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দিয়ে বিতাড়িত করা যাবে না এই মাছি সম্প্রদায়। অথবা শুধু পর্দায় ঢেকেও নারীদের নিরাপদ রাখা যাবে না এই কাম-তাড়িত পুরুষাঙ্গগুলোর হাত থেকে। যৌন নির্যাতন থেকে নারীদের মুক্তির একটাই উপায়, আর তা হলো সমাজের মাঝে যে ছোটো ছোটো ‘তেঁতুল’ বা ‘মাছি’ সমাজ তৈরী হয়েছে তা সমূলে উচ্ছেদ করা। মাছি নিধনে কঠোর আইন তৈরী এবং তা দ্রুত প্রয়োগ করা। বিবেক বর্জিত যত উত্থিত পুরুষাঙ্গ আছে তা গোড়া থেকে কর্তন করা। ফেইসবুকে স্ট্যাটাস, ইউ টিউবে 'কনডম' অথবা 'চুলের কাঁটা' জাতীয় ভিডিও আপলোড, কয়েকটি মিছিল বা রালি করে সমাজ থেকে এইসব নিকৃষ্ট নরপশু নির্মূল করা যাবে না। ক্লক ইজ টিকিং!

খোন্দকার মেহেদী আকরাম
শেফিল্ড, ইউকে
২০ এপ্রিল ২০১৫
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:৪৩
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×