সকল মৃত্যুই অনাকাঙ্খিত এবং দুঃখজনক। কিন্তু মৃত্যুকে নিয়ে মতলববাজি শুধু অসহ্যই নয় ঘৃণ্য। যারা দাবী করছেন ৬ তারিখ দিবাগত রাতে ৩০০০ লাশ গুম করা হয়েছে তাদের কয়েকটা হিসাব মিলিয়ে দিতে বলছি।
১। তিন হাজার মৃতদেহের ওজন হবে ২০০ টন, ফুল লোডে এই মৃতদেহ সরাতে ৪০ টা ৫ টনি ট্রাক লাগবে।
২। ৩০০০ মৃতদেহ থেকে ১৫০০০ লিটার রক্ত ক্ষরিত হবে। সব ধুয়ে ফেললেও মতিঝিল সংলগ্ন এলাকায় এখন রক্তের দুর্গন্ধে কেউ টিকতে পারতো না।
৩। ৩০০০ মৃতদেহ সরানো এবং রাতের মধ্যে ডিসপোজ করতে কমপক্ষে ১৫ হাজার এই কাজে প্রশিক্ষিত কর্মী প্রয়োজন।
৪। একসাথে এতোগুলো মৃতদেহ কবর দিতে গেলেও ৩ থেকে ৪ লক্ষ ঘন ফুট মাটি সরাতে হবে। কতক্ষণ লাগবে সেটা করতে? এই কাজ সর্বোচ্চ দ্রুততায় করলে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা সময় লাগবে।
৫। যে সংখ্যায় মৃত্যুর দাবী করা হয়েছে সেই সংখ্যায় মৃতদেহ শুধু গুম করলেই চলবে না, মৃতদেহের কবর ও লুকাতে হবে। এই ঘন বসতি পূর্ণ দেশে তেমন জনমানুষ হীন স্থান কী আছে? সেটা কী সম্ভব?
৬। মৃতদেহ গুমের কাজে সংশ্লিষ্ট সাম্ভব্ব্য ১৫ হাজারের মধ্যে একজনকেও কী সাক্ষ্য দেয়ার জন্য খুজে পাওয়া যাবেনা?
৭। দিগন্ত টি ভি সকাল চারটা পর্যন্ত সম্প্রচার করেছে তার অনেক আগেই মতিঝিল সাংবাদিকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছিল। তাই যে সময়টার কথা বলা হচ্ছে সে সময় পর্যন্ত দিগন্ত বহাল তবিয়তেই সম্প্রচার করছিল।
৮। ৩০০০ নিহতের পরিবার কী এতক্ষন বসে থাকতো?
৯। স্বাধীন দেশে ওপেন প্লেসে ২ঘন্টার মধ্যে ৩০০০ মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলতে এইর্যা ব-পুলিশ-বিজিব রাজী হতো?
তাই মাঠ গরম করার মতলব বাজি বাদ দিয়ে ৩০০০ জনের তালিকা দিন। যদি বলেন তৈরি হচ্ছে; তাহলে যে কয়জনের তালিকা হয়েছে সে কয়জনেরই তালিকা দিন। অভিযোগ গুরুতর। এই অভিযোগের সত্যতা খুজে বের করা আরো গুরুত্বপূর্ণ। সেই তালিকা ধরে নিহতের সংখ্যার সত্যতা দরকার হলে সবাই মিলে খুঁজবো। যদি অভিযোগ মতে ৩০০০ মানুষ সেই রাতে নিহত হয়েছে বলে প্রমাণিত হয় তবে সরকারকে জবাব দিতে হবে; আর যদি এই প্রচারণা মিথ্যা হয় তবে সেটার শাস্তি অভিযোগকারীকে মাথা পেতে নিতে হবে। ক্যাচাল বাদ দিয়ে তাই তালিকা দিন।
ওদের মৃত্যুকে নিয়ে আপনাদের যে গভীর আগ্রহ তার ভগ্নাংশ ও যদি আপনাদের ওদের জীবন নিয়ে থাকতো তবে কখনোই শাহবাগের প্রতিপক্ষ হিসেবে ওদের দাঁড় করাবার বিপদজনক খেলায় লিপ্ত হতেন না।
মূল লেখা