তেরোজন বন্ধু মিলে চুমুক দেই জীবনের পেয়ালায়
আমার খালি গেলাস ভরে দেয় একজন হাত বাড়িয়ে
মৃদু হেসে বলি, "জুডাস, তুমিও।"
পাঁজর থেকে টেনে আনি সেই হাড়
যার থেকে কথা ছিলো ইভের সৃষ্টি হওয়ার
তুলে ধরি সবার মুখের কাছে, মেইন কোর্স রূপে।
জীবনের সুরা ফেলে একটাই গ্লাসে ঢেলে
এক চুমুক করে খাই মৃত্যুর রস।
জানি মিখাইল নেমে এলে অস্বীকার করবে সবাই
আমিও যে ছিলাম তাদের সাথে,
এমন এক সময় যখন রাতও হয় নি শেষ
দিনের শুরু হতেও আছে দেরী
তিনবার ডাক দিয়ে জানান দিলো রাতা মোরগটা
আমি কেউ নই, কারোরই আপন হতে পারি নি।
গতরাতের ভেজা তোয়ালে তখনো আমার হাতে
যা দিয়ে মুছেছিলাম সকল ইয়ার-বক্সীদের পা
ভালোবাসার পানি দিয়ে ধুয়ে দেয়ার পর,
দাঁড়িয়ে আছি বাগানে
যেখানে নিজের হাতে লাগিয়েছিলাম বিশ্বাসের ফুল,
যেখানে দাঁড়িয়ে কথা হয় ঈশ্বরের সাথে।
এমন সময় বন্ধু এসে আমার কাঁধ ধরে বললো,
"তুমিই কি সেই, তুমিই কি ত্রাতা?"
আমি হেসে বললাম, "আমি সবসময়ই একই মানুষ ছিলাম।
কারো পুত্র, কারো স্বামী, কারো ভাই, কারো বন্ধু।
একই দেহে আমি সবাই। আমিই সে।
কারণ তুমি যা বলবে, আমি তা-ই।"
তারা তড়িঘরি প্রস্তুত করলো ক্রুশ,
কামাড়শালা থেকে বানিয়ে আনলো স্বর্গীয় পেরেক,
ঈশ্বরপুত্রের উপযুক্ত কাঁটার মুকুট বানানো শেষে,
হাঁটিয়ে নিলো সেই সমাজের মাঝ দিয়েই
যাদের নগ্নগাত্র ঢাকতে গিয়ে আমি দান করেছি
নিজের শতছিন্ন বস্ত্রখানি।
তিনরাত্রি পরে যখন দেবদূত এসে তুললো কফিনের ডালা
আমি বললাম, "এক জীবনে অনেক শুনেছি তার আদেশ,
এইবার অন্তত মানুষের পৃথিবীর মাটির গভীরে
পঁচে গলে যেতে দাও আমার কিংবদন্তিকে।"
২২০৩২০ - ১৩৩৭
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৫১