কিছুদিন আগেও মানুষের বিনোদনের একটি প্রধান মাধ্যম ছিল ফান, কৌতুক বা কমেডি । এইতো আমরা যখন স্কুলে পড়ি তখনও আমাদের শিহ্মকরা ক্লাসকে মজাদার করার জন্য কৌতুক বলতেন নয়ত কাউকে দিয়ে বলাতেন । স্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের একটি প্রধান ইভেন্ট ছিল কৌতুক বলা (এখনও আছে কিনা বলতে পারব না ) । গ্রাম গন্জ থেকে শুরু করে শহর পর্যন্ত এমন কোন মানুষ ছিলনা যার কৌতুক না ভাল লাগে । বিভিন্ন সিনেমা , নাটক এবং ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের কমেডি ষ্টারদের সবাই এক নামে চিনত । এবং তাদের কে অনুকরনও করত সবাই । জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে মেইন হিরোর বা টিভিষ্টারের চেয়ে কোন অংশে কম ছিলনা কমেডিয়ানরা । বছর দশেক আগেও সিনেমা ও নাটকের আলাদা রোল ছিল কমেডিয়ানদের । তাদের শৈল্পিক কৌতুক দর্শকদের হৃদয় জয় করত । তাদের সংলাপ মানুষ মুখস্ত করে রাখত । এ চিত্র বেশিদিন আগের নয় ।
আজকাল এসব কমেডি , ফান এসবের পরিমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে । সবকয়টি টিভি চ্যানেল এ অহরহই হচ্ছে ফান শো , হাসির নাটক । পত্রিকা গুলো খুলেছে তাদের আলাদা ফান ম্যাগাজিন । আজকাল সিনেমাতে আর কমেডিয়ানদের আলাদা রোল দেখা যায়না । আজকাল আস্ত সিনেমাই তৈরি করা হয় ফান নিয়ে । যেসব ফ্লপ সিনেমা অভিনেতারা অন্যান্য সিনেমায় ভাত পায়না তারা সহজেই ফানি সিনেমায় এসে রাতারাতি হিরো হয়ে যাচ্ছে । আজকাল ট্যালেন্ট হান্ট শীর্ষক অনুষ্ঠানগুলোর হান্টিং এ গান, নাচের পাশাপাশি কমেডিও এসেছে । এককথায় বলা চলে কমেডি বিপ্লব ।
দু যুগের কৌতুক ও কৌতুক প্রকাশের ধরনও কিন্তু পাল্টে গেছে । আরও কিছু পরিবর্তন এসেছে এতে । কি সোটকি কেউ লহ্ম্য করেছেন।
আজকালকার এসব ফান ম্যাগাজিন ,পত্রিকা , সিনেমা , নাটক.হান্ট শো এর কৌতুক শুনলে হাসি পায় খুব কম মানুষেরই । ব্স্তাপচা বিষয় এবং একই জিনিস হাজার বার শুনাতে ও দেখাতে দেখাতে একেবারে বোগাস্ হয়ে গেছে এই ফান বিষয়টি । আজকাল মানুষকে হাসাতে পারা কষ্ট কিন্তু বমি করাতে পারা তার চেয়ে বেশি সহজ । মানহীন ও রুচিহীন এসব ফান ভালোলাগে এমন মানুষ খুব কমই আছে । এসব কৌতুক দেখলে হাসা তো দূরের কথা রাগে মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছা করে। যেসব লোকজন আগে কৌতুকের বই কিনতেন এবং কোন চ্যানেলে কৌতুক দেখালে চ্যানেল পরিবর্তন করতেন না তারা আজকাল ফান ম্যাগাজিন দেখলে ছিড়ে ফেলেন এবং ফান শো দেখলে টিভিই অফ করে দেন। সস্তা ,মানহীন, রুচিহীন, এবং অপ্রাসঙ্গিক এসব ফান আজকাল কাউকে হাসায় না । বরং বমি করিয়ে দেয় এবং ফান সম্বন্ধে একটি বাজে ধারনা দিয়ে দেয় । এই হল আজকালকার কৌতুকের অবস্থা ।
এসবের কারন খুজতে গিয়ে কাউকে নির্দিষ্টভাবে দোষারোপ করা ঠিক হবেনা । একটি বিষয় সীমা লঙ্ঘন করলে এবং মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গেলে সেটিকে এরূপই আশা করা যায় ।
কৌতুক করা কোন মহাপাপ নয় । কোন ধর্মগ্রন্থে কৌতুক করতে নিষেধও করা হয়নি। কিন্তু একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে " একসেস অব এনি থিং এস ভেরী ব্যাড" । পরিমিত সবকিছুই ভাল । এই দুনিয়াতে মানুষের দু:খ এতই বেশি হয়ে যায়নি যে তাদের কে হাসানোর জন্য সব কিছুর মধ্যেই কৌতুক কে টেনে আনতে হবে । কৌতুক নিয়ে বাড়াবাড়িই কি কৌতুককে সস্তা , মানহীন,কুরুচিপূর্ন এবং অপ্রাসঙ্গিক করতে উদ্যত নয় ?
একটু ভেবে দেখুন
আলোচিত ব্লগ
এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন
মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)
ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)
০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন
টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন
আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।
ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।