আমিও ঈদের শপিং করে ফেলেছি । একটা পান্জাবী ,সেলোয়ার । জুতাটা বাকী আছে , তাও হয়ে যাবে কিছুদিনের মধ্যে । বন্ধুদের সংগে দেখা হলে আগ্রহ নিয়েই জিগ্গেস করছি " কিরে শপিং করছস?" । কেউ হ্যা কেউ না বলছে । আবার কেউ কেউ তাদের শপিংএর লম্বা ফর্দ তুলে ধরছে । আর আটটি দিন পর খুব মজা করে খাব , ঘুরব । ঈদের প্ল্যান করছি সবাই মিলে । ছোটকালের সেই মজাটা না থাকলেও ভালই লাগছে ঈদ আসছে এই ভেবে ।
আমার খুশি আর দ্যাখে কে ?
আজকে সকালে সেহরির পর নামাজ পড়ে এবং কুরআন পাঠ করে ভাবলাম আজ নাহয় নাই ঘুমালাম । বাইরে পাখিদের কলরব এবং সূর্যের হাল্কা আভায় ঝিরিঝিরি বাতাসের এক অস্সাধারন এক আবহাওয়া দেখে বারান্দায় দাড়ালাম । ভাবছি বাকী রওয়া কেনাকাটা কবে সারব । একটু ঘুম ঘুমও পাচ্ছে । হঠাত চোখ আটকে গ্যাল নিচের দোকানের সাটারের সামনে শুয়ে থাকা একটি শিশুর উপর । সিমেন্টের বস্তার উপর আরামের ঘুম দিচ্ছে সে । মুহুর্তেই আমার সম্পূর্ন চিন্তাটা ওর দিকে কেন্দ্রীভূত করলাম । কিইবা বয়েস হয়েছে ওর । এখোনো জীবনটাকে ভালমত চিনতে পারেনি সে । কিন্তু তার আগেই তাকে জীবনের কঠোরতার স্বাদ নিতে হচ্ছে । যেই ঈদ নিয়ে আমাদের এত মাতামাতি সেই ঈদ হয়ত তার জীবনে কোন প্রভাব ফেলবেনা । আমাদের মত সেও ঈদে নতুন জামা এবং ভরপেট নিয়ে ঘুরতে পারবে না । এটাকে কার পরিহাস বলব ? তার ভাগ্যের নাকি আমাদের সমাজের । ভাবতে ভাবতে আমার মনটাই খারাপ হয়ে গ্যালো। চিন্তা করলাম এর জন্য কিছুই কি করতে পারিনা আমি ? কিন্তু আমার মত ছাপোষা একজন মানুষ কিইবা করতে পারে । ভাবতে ভাবতে ঘুমুতে এসে পড়লাম আমি ।
এর মত হাজার হাজার পথশিশু রয়েছে । যাদের জীবনে ঈদ আসে । তবে আমাদের মত ঘটা করে নয় । দুবেলা দুটো খেতে পাওয়া নিয়েই যারা সংশয়ে থাকে ঈদ হয়ত কখনো কখনো তাদের জন্য বাড়তি আয়ের সুযোগ মাত্র । আর যখনি তারা কাঙ্খিতের চেয়ে বেশী কিছু পায় হয়ত তাদের মুখে একটু হাসি ফোটে ।
আমাদের সমবেত প্রচেষ্টা কি তাদের মুখের ঐ সামান্য হাসি এনে দিতে পারেনা ?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



