somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ বিয়ের হাতকড়া

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বুদ্ধিটা আমাকে নীলুই দিল । প্রথমে আমি নীলুর দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলাম যে নীলুর মনে কোন কুবুদ্ধি আছে কিনা । কিন্তু যখন সত্যি সত্যিই ব্যাপারটা নিয়ে ভেবে দেখলাম তখন মনে হল বুদ্ধিটা একেবারে খারাপ সে দেয় নি । নীলু আমার দিকে তাকিয়ে বলল, কই টাকা দাও ।
আমি বললাম, টাকা কিসের?
-বারে এতো চমৎকার বুদ্ধি দিলাম, তোমাকে মায়ের হাত থেকে বাঁচার একটা চমৎকার বুদ্ধি দিলাম আর তুমি আমাকে টাকা দিবা না ?
কেন জানি পকেট থেকে একটা ৫০ টাকার নোট বের করে দিলাম । মনে হল বুদ্ধিটা কাজে দিলেও দিতে পারে ।
নীলু নোটটার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে রইলো । তারপর এক ছোঁ মেরে সেটা নিয়ে দ্রুত গতিতে ঘর থেকে বের হয়ে গেল আমি টাকা টা আবারও আমার পকেটে চালান করে দেওয়ার আগেই ।

আমি বুদ্ধিটা নিয়ে আরও একটু ভাবতে লাগলাম । কাজ হতে পারে । আর যদি নাও হয় তাহলেও কোন সমস্যা দেখি না । মাকে বলার মত আমার হাতে আসলে তেমন কিছুই নেই । এটা দিয়ে অন্তত কিছু একটা অযুহাত তো বের করা যাবে ।

ঘটনা আসলে তেমন কিছু না । ছেলে বড় হলে সব বাবা মায়ের মাথায় যে ভুত চাঁপে আমার বাবা মায়ের মাথাতেও ঠিক তেমন ভুত চেপে বসে আছে । বিশেষ করে আমার মায়ের মাথায় । ছেলেকে যে কোন ভাবেই বিয়ে তাদের দিতেই হবে । দুনিয়ার সবাই বিয়ে করে ফেলছে আমি কেন বিয়ে করছি না, এই চিন্তাতে তাদের কারো ঘুম আসছে না ।

সত্যি বলতে আমার বিয়ে ভীতি আছে । ভীতিটা আমার এমনি এমনি হয় নি । আমার বন্ধুদের সবার বিয়ে হয়ে গেছে কেবল আমি ছাড়া । এর ভেতরে কয়েক জনের সাথে আমার খুব ভাল সম্পর্ক । তাদের বিবাহিত জীবনের আমি খুব কাছ থেকে । তাছাড়া বিয়ের আগে তাদের জীবন আর বিয়ের পরে তাদের সেই জীবন আমি মিলিয়ে যতবারই দেখি ততবারই মনে হয় আমার বিয়ে হলেও আমার অবস্থা ঠিক এই রকম হবে । আমি এটা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছি না । কোন ভাবেই না । তাই যে কোন ভাবেই আমি বিয়েটা ঠেকাতে চাই । বিয়ে করতে চাই না । কিন্তু কে শোনা কার কথা । আমার মা ঠিক পণ করে বসে আছেন, আমাকে তিনি বিয়ে এবার দিয়েই ছাড়বেন । কোন ক্ষমা নেই, কোন নিস্তার নেই । আমি এতোদিন কোন যুতসই কারণ খুজে পাই নি ।
এই বিয়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমি চাকরি ছেড়ে দিয়েছি । মাকে এই বলে তখন বুঝিয়েছি যে প্রাইভেট চাকরি আমার ভাল লাগছে না । আমি এবার বিসিএসের জন্য চেষ্টা করবো । সরকারি একটা চাকরি করতে হবে । তারপর একটা ভাল দেখে বিয়ে করবো। এই বলে এতোদিন মাকে আমি ঠেকিয়ে রেখেছিলাম কিন্তু এখন মনে হচ্ছে খুব বেশি দিন এই অযুহাতে কাজ হবে না । চাকরি না হলেও সে আমাকে বিয়ে এবার দিয়েই ছাড়বে !

একবার বন্ধু জুলকাইণ খুব ভয়ানক একটা বুদ্ধি দিয়েছিলো । যদি সেই কথা মাকে বলতাম তাহলে নিশ্চিত আমার মা হার্ট ফেইল করে মারা যেত । সেই কারণ বলা হয় নি কিন্তু এবার মনে হল যে পেয়েছি । এমন একটা বুদ্ধি যেখানে সাপও মরবে আবার লাঠিও ভাঙ্গবে না ।

মীরা আমাদের এলাকাতেই থাকি । তাকে অনেক দিন থেকেই চিনি তবে কোন দিন কথা বলেছি কিনা মনে পড়ছে না । যাওয়া আসার সময় দেখা হয়েছে বহুবার । আমি যে এলাকাতে থাকি এটা বেশ সম্ভ্রান্ত একটা এলাকা । সমাজের সব উচু শ্রেণীদের বাস এখানে । আবার বাবাও তেমনই একজন । পেশায় তিনি একজন আইনজীবি । বড় ভাইও আইন নিয়ে পড়াশুনা করেছেন । এডিশনাল জজ সে । সিলেটে থাকে বউ নিয়ে । আশে পাশে যারা আছে তারাও একই রকম । কেউ আমলা কেউ বা পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্মচারি । মীরার বাবা পুলিশের ডিআইজি । আর মীরা নিজেও পুলিশ । বছর দুয়েক আগে বিসিএস দিয়ে এএসপি হয়ে ঢুকেছে । মেয়েটা লম্বায় প্রায় আমার সমান । দেখতে শুনতে বেশ ।
যাই হোক কথা বার্তা অন্য দিকে চলে যাচ্ছে । আসল কথায় আসি । নীলু আমাকে বুদ্ধি দিল যে আমি যেন মা কে বলি যে আমি এই মীরাকে পছন্দ করি । মীরাকে পছন্দ করি বলে আমি চাকরি ছেড়ে দিয়ে বিসিএসের জন্য পড়াশুনা করছি । মীরার মত মেয়েকে বিয়ে করতে হল ওর সমান সমানে তো হতে হবে । আমার আগের প্রাইভেট চাকরিতে কোন কাজ হত না । মীরার বাবা কোন ভাবেই রাজি হতেন না ।
নীলু বুদ্ধি দিল যে আমি মাকে মীরার কথা বলি । মা হয়তো চেষ্টা করবে মীরাকে রাজি করানোর কিন্তু মীরা কোন ভাবেই রাজি হবে না। একে তো আমি এখন বেকার । কোন কাজ কর্ম করি না । দ্বিতীয় তো মীরার নাকি একজন ভালোবাসার মানুষ আছে । সেও পুলিশ । নীলুর কথায় সত্য আছে সম্ভবত । একদিন আমি নিজে দেখেছি । আমাদের আর ওদের বাসা ঠিক কাছাকাছিই । একদিন রাতের বেলা আমি বাসায় ফিরছিলাম তখন মীরাকে দেখলাম ফুটপাথের উপরে বসে একটা ছেলের সাথে গল্প করছে হেসে হেসে । তখন বেশ রাত হয়ে গেছে । ছেলেটার পরনে পোশাক না থাকলেও বুঝতে অসুবিধা হল না যে ছেলেটাও মীরার মত পুলিশে চাকরি করে ।
তাহলে ব্যাপারটা এমন হবে যে আমি বলবো যে আমি মীরার জন্য আসলে কাউকে বিয়ে করছি না আর মা কোন ভাবেই মীরাকে রাজি করাতে পারবে না । ব্যস ঝামেলা শেষ । অন্তত বছর খানেকের জন্য আমি মুক্তি পাবো । পরের টা পরে আবার চিন্তা করা যাবে ।

মা কে বলতেই মা কেমন যেন গম্ভীর হয়ে গেলেন । মা এলাকার সব মেয়েকেই চিনেন খুব ভাল করেই । কোন মেয়েটা কেমন আর কোন মেয়েটা আমার জন্য ভাল হবে এসবের জন্য তিনি খোজ খবর রাখতেন সব । সুতরাং তিনি নিজেও ঠিক ঠিক বুঝতে পেরেছেন যে মীরা নামের মেয়েটা কোন ভাবেই আমাকে বিয়ে করতে রাজি হবে না ।

কয়েক দিন কেটে গেল একেবারে শান্তি মত । মনের আনন্দে আমি ঘুরে বেড়াতে লাগলাম । সারাদিন বই পড়ি নয়তো মুভি দেখি । সন্ধ্যা হলে বিবাহিত বন্ধুদের দুঃখের গল্প শুনি । আর আমি যে বিয়ে করি নি সেটার জন্য নিজেকে বড় বুদ্ধিমান মনে হয় । ঠিক এই সময়ে ঘটলো দুর্ঘটনা ।

আমি সন্ধ্যার সময় বাসায় ফিরছি । আমাদের এলাকার রাস্তাটা সব সময় ফাঁকাই থাকে বলা চলে । মাঝে মাঝে একটা দুইটা গাড়ি চলে যায় ভুসভাস করে । তাছাড়া সব সময় শান্ত পরিবেশ । সন্ধ্যার সময়ও তাই । আমি হেটে হেটে বাসার দিকে আসছি ঠিক এমন সময় আমার চোখ গেল রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকা একটা সাদা রংয়ের পুলিশের গাড়ির দিকে । আমি কাছে যেতে যেতেই গাড়ির গেট খুলে গেল এবং সেখান থেকে স্বয়ং মীরাকে বের হতে দেখলাম । পুলিশের পোশাক পরা রয়েছে । আমার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছু সময় । তারপর শান্ত কন্ঠে বলল, আপনার কী সমস্যা?
আমি খানিকটা ভড়কে গিয়েছিলাম বটে । এভাবে মীরা যে আমার সামনে এসে হাজির হবে সেটা আমি বুঝতে পারি নি । কোন মতে নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম, মানে?
-মানে বললাম আপনার কী সমস্যা?
-আমার তো কোন সমস্যা নেই।
-তাই না? আপনাকে তো ভাল ছেলে হিসাবে জানি !
-আমি....
-ভাল হয়ে যান । বুঝেছেন । একদম ভাল হয়ে যান ।

মীরা আমাকে রেখে এবার গাড়ি উঠে বসলো । গাড়ি সামনের দিকে রওয়ানা দিল ! আমি সত্যিই কিছু বুঝলাম না। কী হল ? আমার সাথে মীরা এমন কেন করলো?
তখন আমার মাথায় চিন্তা এল ! এক হতে পারে যে মীরাদের বাসায় মা গিয়েছেন বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে । কোন ভাবে রাজী করাতে চেয়েছেন কিন্তু মীরা রাজি হয় নি । হবে না এটা আমি জানতাম । মা নিশ্চয়ই আমার সেই গল্পও বলেছেন কোন ভাবে !
আমি চিন্তিত মুখে বাড়ির দিকে হাটা দিলাম । কেন জানি মনে হচ্ছে মীরার সাথে আমার আবারও দেখা হবে ।
মা কে কিছু বললাম না মীরার ব্যাপারে তবে নীলুকে ঠিকই বললাম । সব শুনে নীলু বলল, ভাইয়া একটু সাবধানে থাকিস !
আমি বললাম, আমি কেন সাবধানে থাকবো?
নীলু হেসে বলল, বারে পুলিশ এবার তো পেছনে লেগেছে । পুলিশকে ইভ টিজিং করিস?
আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম । বললাম, আমি ইভ টিজিং করলাম কিভাবে?
নীলু বলল, এটাও ওয়ান কাউন্ড অব ইভ টিজিংই বলতে পারিস । একটা মেয়ে যে কাজ পছন্দ করছে না তার সামনে সেই কাজ করা ।

নীলু আর কিছু না বলে ঘর থেকে বের হয়ে গেল । আমি চিন্তিত মুখে নিজের ঘরে বসে রইলাম । সত্যিই তো মীরা যদি এমন কিছু মনে করে তাহলে? এবং পুলিশের হয়রানি বড় ঝামেলার ব্যাপার । আমার বাবা যেহেতু একজন এডভোকেট আমি এই ব্যাপার গুলো জানি বেশ ভাল করেই । আমি মনে মনে ঠিক করলাম যে সামনের কয়দিন আমি বাসা থেকে বের হব না । বাসা থেকে না বের হলে মীরার সামনে পড়তে হবে না ।

কিন্তু কপালে থাকলে সেটা এড়ানো যায় না । মীরার সাথে আমার আবারও দেখা হয়ে গেল । সারাদিন বাসায় থাকার পরে আমি রাতে একটু হাওয়া খেতে বের হয়েছি । রাত তখন এগারোটা হবে । এই সময়ে মীরার সাথে দেখা হওয়ার সম্ভবনা নেই বললেই চলে । এলাকার রাস্তা দিয়েই হাটছি । আগেই বলেছি আমাদের এলাকাটা একটু শান্ত চুপচাপ । এলাকার ভেতরে দোকান পাট নেই। যে কোন কিছুর জন্য আমাদের এলাকার থেকে একটু দুরে যেতে হয় । আমি দোকানে গিয়ে এক কাপ চা খেলাম । তারপর আবার যখন ফিরে আসছি তখন পরলাম মীরার সামনে ।
আজকে অবশ্য মীরা পুলিশের পোশাকে নেই । একটা টাইট জিন্স পরে আছে সাথে সাদা টিশার্ট । টিশার্টের হাতার এক কোনে লেখা রয়েছে পুলিশ । কোমরে ঠিকই পিস্তল রয়েছে । আজকেও সে গাড়ি থেকেই নামলো । আমার কেন জানি মনে হল সে আমার জন্যই অপেক্ষা করছিলো । যেন সে জানতো আমি এখন এই পথ দিয়েই যাবো । মনের ভেতরে ক্ষীণ সন্দেহ জাগলো যে মীরা আমার পেছনে যেন ফেউ লাগিয়েছে । আমি কোথায় যাই বা না যাই সেটা সে খোজ রাখা শুরু করেছে ।
আমি সামনে যেতেই সে আমাকে থামালো । তারপর আমার দিকে শান্ত কন্ঠে বলল, এতো রাতে বাইরে কী?
-না মানে চা খেতে বের হয়েছিলাম ।
-চা খেতে? বাসায় চা বানায় না? ভাল ছেলেরা এতো রাতে বাইরে বের হয়না । চা খেতে নাকি অন্য কিছু খেতে বের হয়েছেন?
আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম । বললাম, অ-অন্য কিছু মানে?
-ইদানীং এই এলাকাতে গাঁজার সাপ্লাই বেড়েছে ।
-আআমি সিগারেট পর্যন্ত খাই না ।
-আচ্ছা তাই নাকি! দেখি কাছে আসুন দেখি ।

এই বলে মীরা আমার দিকে ঝুকে এল । একেবারে কাছাকাছি । আমি ওর শরীরের একটা মিষ্টি গন্ধ পেলাম । এটা কেবল মিষ্টি পারফিউমের গন্ধ না । মেয়েদের শরীরে একটা আলাদা মোহনীয় গন্ধ থাকে । আমি এর আগে কোন দিন নিজ থেকে সেটা অনুভব করি নি । বইপত্রে পড়েছি কেবল । আজকে সে বুঝতে পারলাম । আসলেই এই গন্ধটা অন্য রকম । মীরা আমার কাছে এসে নাক দিয়ে কিছু যেন শুকলো । তারপর বলল, হুম কিছু খান নি । শুনেন কিছু খাবেন না এই সব । এখন কিন্তু এই ল খুব কড়া । একবার ধরা পড়লে সোজা ৭ বছর জেল । কেউ বাঁচাতে পারবে না । আপনার এডভোকেট বাবাও না । যান যান বাসায় যান । রাতের বেলা বাইরে বের হবেন না । সময় বড় খারাপ !

আমি দ্রুত পায়ে বাসার দিকে রওয়ানা দিলাম । একবারও পেছনে না তাকিয়ে । আমার কেন জানি মনে হল মীরা আমার দিকেই তাকিয়ে আছে একভাবে । তারপর থেকে এই ঝামেলা একের পর এক আসতেই লাগলো । কিভাবে কিভাবে জানি মীরা টের পেয়ে যেত আমি কোথায় যাই কি করি । আমাকে কতবার যে চেক করা হল সেটা আমি নিজেও জানি না । একবার মনে হল ওকে ডেকে সব কিছু বলে দিই । আর সরি বলি । আমার কাছে ওকে খানিকটা বিব্রত অবস্থায় পড়তে হয়েছে এটার জন্য ওকে সরি বলে দেওয়া যুক্তিযুক্ত মনে হল । আর অনুরোধ করি যাতে আমার সাথে এমন আচরণ আর না করে । এমনই যখন চিন্তা ভাবনা তখন আসল বিপদ এসে হাজির হল !

মাস খানেক পরের কথা । বিকেলে মা বলল যেন আমি আজকে বাইরে না যাই । যদিও আমি বাইরে যাওয়া বন্ধই করে দিয়েছি বললেই চলে । সারাদিন বাসাতেই থাকি ।
তবুও মায়ের এমন আলাদা ভাবে বাইরে না যেতে বলার কারণ জানতে মন চাইলো । আমি বললাম, কেন কোন কাজ আছে?
-হ্যা । আজকে আমরা মীরাকে আংটি পরাতে যাবো !

আমার প্রথমে মনে হল যেন আমি ঠিক মত মায়ের কথাটা শুনতে পেলাম না । চোখ কপালে তুলে বললাম, কী বললে? কী করতে যাবো ?
মা শান্ত কন্ঠে বলল, মীরাকে আংটি পরাতে যাবো!

আমি কেবল চোখ কপালে তুলে তাকিয়ে রইলাম মায়ের দিকে । মীরা আংটি পরাতে যাবে মানে টা কি? মীরা রাজি হয়ে গেছে বিয়ের জন্য?
কিভাবে রাজি হল?
আর কেনই বা রাজি হল?
কেন রাজি হবে?
না না এসব হবে না । এমন তো মোটেও হওয়ার কথা না ।
আমার দিকে তাকিয়ে মা বলল, দেখ তুমি তোমার পছন্দের মেয়েকেই বিয়ে করতে চেয়েছো সেটাই হচ্ছে এখন কোন অযুহাত দিবে না ।
-কিন্তু মা......
আমি কিছু বলতে গেলাম কিন্তু কি যে বলবো কিছুই খুজে পেলাম না । মা বলল, আমি এখন কোন কিন্তু শুনবো না । আজকে যাবে মানে যাবে । দরকার হলে পুলিশ দিয়ে তোমাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হবে ।

মা আমাকে সব সময় তুই করেই বলে । কিন্তু আজকে যখন তুমি করে বলছে তার মানে হচ্ছে অবস্থা বেগতিক । আমি মনে মনে ঠিক করে নিলাম যে আপাতত মীরাদের বাসায় যাওয়া যাক । মায়ের মেজাজ অত্যাধিক গরম হয়ে যাবে যদি এখন না যাই । আংটি পরানো মানেই তো আর বিয়ে হয়ে যাওয়া না । মীরাকে যতদুর সম্ভব ওর বাবা মাই রাজি করিয়েছে কোন ভাবে । মীরার সাথে কথা বলে দুজন মিলে কোন কিছু একটা বুদ্ধি বের করা যাবে ।

বিকেল বেলা তৈরি হয়ে আমি বাবা আর মা হাজির হলাম মীরাদের বাসায় । গিয়ে দেখি নীলু আগে থেকে মীরাদের বাসাতেই বসে আছে । আমার দিকে তাকিয়ে একটা দুষ্টুমির হাসি দিল । আমি একটু অবাক হলাম । তবে আমাকে আরও অবাক করে দিয়ে আধা ঘন্টার মাঝে আমার বড় ভাই আর ভাবী এসে হাজির হল মীরাদের বাসায় । দেখলাম ওদের কয়েকজন আত্মীয়ও এসে হাজির হল । এবং সবার মাঝে আমি সেই ছেলেটাকে দেখতে পেলাম যাকে আমি মীরার সাথে ফুটপাতে বসে গল্প করতে দেখেছিলাম । আমার কেমন যেন মনে হতে লাগলো । এই ছেলেটা এখানে কেন?

আমার চোখ মীরাকে খুজতে শুরু করলো । কিন্তু ওকে পেলাম না । আংটি পরানোর আগে ওর সাথে একটু কথা বলতে পারলে ভাল হত কিন্তু আমাকে সেই সুযোগ দেওয়া হল না । ও এলে একেবারে শেষ মুহুর্তে । ওকে দেখে আমি একটু চমকেই গেলাম । মীরাকে একেবারে অন্য রকম লাগছে । এতোদিন ওকে আমি দেখেছি পুলিশের পোশাকে নয়তো জিন্স টিশার্টে । আজকে ও পরেছে একটা শাড়ি । নীল রংয়ের বেনারশি । মুখে খুবই হালকা মেকাপ দেওয়া । কেবল ঠোঁটে একটু লিপস্টিক দেওয়া । আমার দিকে চোখাচোখি হল এবং আমি আরও একটু দ্বিধান্বিত হয়ে উঠলাম । মীরাকে দেখে মোটেই আমার মনে হল না যে ওর মন মেজাজ কোন কারণে খারাপ । বরং ওকে যেন আনন্দিত মনে হল ।
কেন মনে হবে?

কিন্তু তখনও আমার অবাক হওয়ার ব্যাপারটা বাকি ছিল । আরও আধা ঘন্টা পরে এলাকার মসজিদের ইমাম সাহেবকে যখন বাসায় ঢুকতে দেখলাম তখন আমার গলার পানি শুকিয়ে গেল । বারবার মনে হল যে এই লোক এখানে কেন আসবে? এখানে আসার কোন কারণ আছে কি? আংটি পরানোর জন্য তো আর হুজুরের দরকার নেই ! নাকি আছে? দোয়ার জন্য কি?
মনের ভেতর থেকে আমি সত্য কথাটা অস্বীকার করতে চাইলাম কিন্তু আমি খুব ভাল করেই জানি যে এটা কোন ভাবেই সত্য না । যে ভয়টা আমি এতোদিন পেয়ে এসেছি সেটাই হতে চলেছে ! এবং সত্যিই তাই হল ।

আংটি পরানোর সময় মীরাকে আমি আরও ভাল করে দেখলাম । সত্যিই বলতে কী ওর মুখ দেখে মনে হল ও খুব বেশি আনন্দিত । ওকে কোন ভাবেই আমার দুঃখিত মনে হল না কিংবা মনে হল না যে বাসার লোকজন ওকে জোর করে এখানে নিয়ে এসেছে । আংটিটা পরানোর সময় ওর চোখের দিকে আমার চোখ গেল । সেই চোখের দিকে তাকিয়েই আমার মনে হল সত্যিই সত্যিই আমি মহা বিপদে পড়তে যাচ্ছি ।
আংটি পরানোর শেষ হতেই মীরা আমার মায়ের উদ্দেশ্য করে বলল, আন্টি নিলয়ের মুখ দেখে মনে হচ্ছে সে আমাকে আংটি পরাচ্ছে না যেন গলাতে শিকল পরছে ।
মীরার কথা শুনে রুমের সবাই হেসে ফেলল । মীরা বলল, আমার মনে হচ্ছে যে এখন থেকে বের হতে পারলাম আপনার ছেলে দৌড় দিবে । তাই তাকে সেই সুযোগ আমি দেব না ঠিক করেছি ।
আমার মুখ দিয়ে তখন একটা কথা বের হল না । আমি কেবল অবাক হয়ে সবার দিকে তাকিয়ে রইলাম । মীরা বলল, আমি চাই আজকেই আমাদের বিয়ে হয়ে যাক !

-আরে শুভ কাজে দেরি করতে নেই । আজই হোক।

কথাটা আর কেউ না বলল আমার বাবা । দেখলাম সবাই তাতে সাইও দিল ।

আমি তখন চিৎকার করে বলতে চাইলাম যে আমি বিয়ে করতে চাই না । মোটেও চাই না । কিন্তু আমি কেবল দরজার দিকে তাকিয়ে তাকাতে থাকলাম । কেবলই মনে হল যে এখনই আমাকে এখান থেকে দৌড় দিতে হবে ।
একবার এখান থেকে বের হতে পারলে আমার আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না মোটেও । পরে যা হওয়ার হবে ।
তখনই ক্লিক আওয়াজ পেলাম । আমার চোখ দরজার দিকে থাকার কারণে আমি মীরার দিকে খেয়াল দেই নি । ও আমার পাশেই ছিল । কখন ও নিজের হাতের সাথে আমার হাত হ্যান্ডকাফ দিয়ে আটকে ফেলেছে আমি টেরও পেলাম না । আমার অবাক হতে দেখে মীরা বলল, পালানোর কথা ভাবছো? মানুষের চোখ দেখলেই আমি বুঝতে পারি তাদের মনে কী চলছে । পালিয়েও লাভ হত না । বাইরে আমি পুলিশ মোতায়েন করেই রেখেছি ।

ঘর জুড়ে হাসির রোল পড়লো । মীরা বলল, তোমাকে এতো সহজে ছাড়ছি না আমি । বুঝেছো? এখন চুপচাপ বিয়ে হ্যা বল । নয়তো এইভাবে থাকতে হবে আমার সাথে । যত সময় না কবুল বলবে তত সময় আমরা এভাবে আটকা থাকবো ।

আমি বুঝে গেলাম যে আমার পালানোর সব পথ এবার বন্ধ !


বিয়ে হয়ে গেল । বিয়ের পর ঠিক হল আজকে বাসর রাতটা মীরাদের বাসাতেই হবে । মীরার সাথে এখনও আমার হ্যান্ডকাফ দিয়ে যুক্ত হয়ে আছি । আমি একবার বললাম যে আমার হাত খুলে দাও । মীরা বলল, তোমার কোন ভরসা নেই । এখনও পালিয়ে যেতে পারো ।
সত্যিই বলতে পালানোর ব্যাপারটা মনের ভেতর থেকে তখনও যাই নি । বারবার মনে হচ্ছে পালাতে হবে !

রাতে খাওয়া দাওয়া হল বড় ঝামেলা করেই । মীরা কিছুতেই হ্যান্ডকাফ টা খুললো না । আমার বাঁ হাত আটকানো ছিল বিধায় আমার খেতে খুব একটা সমস্যা হল না । মীরার ডান হাত আটকে থাকার কারণে ও কিছু খেতে পারলো না । আমার পাশে চুপ করে বসে ছিল । ও চুপ করে বসে আছে দেখে আমার মা আমাকে বলল আমি যেন মীরাকে খাইয়ে দিই । হাতে তুলে খাইতে দিলে নাকি মায়া মহব্বত বাড়বে !
আমি তখন খানিকটা ঘোরের ভেতরে চলে গেছি । যা হয়েছে তা আমি ঠিক বিশ্বাস করতে পারছি না । মীরা খাইয়েও দিলাম নিজ হাতে । মীরা খুব আনন্দ করে সেটা খেল । মেয়েটার আজকে বিয়ে হয়েছে । বিয়ের দিন মেয়েরা নাকি লজ্জা পায় অথচ মীরার মাঝে তেমন কোন ভাবই দেখলাম না । সে এমন ভাব করে আছে যেন বিয়েটা অতি স্বাভাবিক একটা ব্যাপার । এমন বিয়ে সে দিনে দু একটা করে প্রতিদিন ।

যখন আমরা বাসর রাতে ঢুকলাম তখন আমাকে আরও একটু অবাক হতে হল । বাসর ঘরটা খুব চমৎকার করে সাজানো । আমি এবার মীরার দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি সব কিছু প্লান করেই রেখেছিলে, না?
মীরা হাসলো, এতো পরে বুঝলে?
-নীলু তোমার সাথে মিলে ছিলো?

মীরা হাসলো । আমি বললাম, নীলুকে আমি হাতের কাছে পাই একবার ! তারপর ওকে মজা দেখাবো ।
মীরা বলল, খবরদার । নীলু এখন আমার প্রোটেকশনে আছে । ওকে কোন কিছু করা যাবে না । বুঝেছো ?

আমি মীরার দিকে তাকিয়ে রইলাম । এখনও আমার মাথায় ঠিক ঢুকছে না মীরা আমাকে কেন বিয়ে করলো । কোন কারণ আছে কি?
এতো সময় পরে মীরা আমার হাতের হ্যান্ডকাফ খুলে দিলো । আমি হাত টা একটু ডলতে ডলতে বললাম, একটা প্রশ্নের জবাব দিবে?
-বল । তোমার কথার জবাব তো দিতেই হবে।
-কাজটা কেন করলে তুমি? তাও আমার মত একজনকে ! মানে তোমার তুলনাতে আমি তো কিছুই না !

মীরা হাসলো । তারপর বিছানা থেকে উঠে দাড়িয়ে আমার মুখোমুখি দাড়ালো । আমার চোখে চোখ রেখে বলল, নিলয়, মানুষের মন বড় অদ্ভুত জিনিস । বুঝেছ! যাকে একবার ভাললাগে তার থেকে কোন ভাবেই মন উঠিয়ে ফেলা যায় না । তোমাকে আমি প্রথম যেদিন দেখেছি সেদিন থেকেই পছন্দ করি । কেন সেদিন তোমাকে পছন্দ করেছিলাম আমি জানি না । আমি আজও জানি না কেন! কেবল আমার মনে আছে আমি সেদিন বৃষ্টির সময় বারান্দায় দাড়িয়ে ছিলাম । তোমাকে দেখলাম রাস্তার উপরে তুমি খালি পায়ে আস্তে আস্তে হাটছো আর মাঝে মাঝে আকাশের দিকে তাকিয়ে কী যেন বলছো? সেই দৃশ্য আমি কোন দিন ভুলতে পারি নি । আমার সেদিনই মনে হয়েছিলো এই ছেলের সাথে আমাকে বৃষ্টিতে ভিজতেই হবে ! কলেজ তারপর বিশ্ববিদ্যালয় এরপর চাকরি, কত মানুষের সাথে আমার পরিচয় হল কিন্তু তোমাকে ছাড়া কোন ভাবেই আমি সেই দৃশ্যে অন্য কাউকে কোন দিন ভাবতেই পারি নি ।

মীরা আমার একদম সামনে দাড়িয়ে ছিল । ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আমার মনে হল মেয়েটা কত খানি আবেগ নিয়ে কথা গুলো বলছে ! এতোটা তীব্র আবেক নিয়ে কেউ এর আগে আমাকে নিয়ে কথা বলে নি । এতো কাছে মীরা দাড়িয়ে আছে । ওর নিশ্বাসের আওয়াজ আমি পাচ্ছি । সেদিনের সেই মোহনীয় গন্ধটাও আমি পাচ্ছি নাকে ! আমার পুরো শরীর যেন একটু কেঁপে উঠলো । তারপর আমার কি যে হল আমি ওর কপালে একটা চুমু খেলাম তখনই । দেখলাম ও চোখ বন্ধ করে ফেলেছে । আমি নিজের ভেতরে একটু কাঁপন অনুভব করলাম । জীবনে এই প্রথম আমি কোন নারীর এতো কাছে চলে এসেছি ।
এরপর ঠোঁট দিয়ে ওর নাকে আরও মৃদু ভাবে আরেকটা চুমু খেলাম ।
সব শেষে ওর ঠোঁটে !

যখন আমি চোখ খুলে তাকিয়েছি তখন দেখি মীরার চোখ বেঁয়ে পানি পড়ছে । তবে সেটা অবশ্যই দুঃখের অশ্রু নয় । মানুষের মনে যখন নির্মল আনন্দ এসে জমা হয় তখন চোখ দিয়ে আপনা আপনি পানি বের হয়ে আছে । এই অশ্রুর নাম আনন্দ অশ্রু !

বিয়ে ভীতি যে আমার কেটে গেছে সেটা আমি মোটেও বলবো না । আমি নিশ্চিত জানি যে আমার অবস্থাও আমার সেই বন্ধুদের মত হবে । আর বউ যখন পুলিশ তখন অবস্থা তো আরও খারাপ হবে । তবে মীরার এই তীব্র আবেগ আর আনন্দ অশ্রুর কাছে সে সব সম্ভবত অনেক ছোট হয়ে যাবে ! দেখা যাক সামনে কপালে আমার কী আছে ।



গল্পটি আগে নিজেস্ব ওয়েব সাইটে প্রকাশিত
ছবি ফ্রম পিক্সেল
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:১৪
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×