ট্রাভেল ডায়েরি - আমার কলকাতা ভ্রমন । পর্ব-১
ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন পার হবার পর কেমন জানি একটা অনুভূতি হচ্ছিল । মনে হচ্ছিল দেশ ছেড়ে কিভাবে মানুষ বাইরে চলে যায় । একটা টান হঠাৎ করেই পিছু ডাকছিল । মনে হচ্ছিল সত্যি আমি দেশের বাইরে চলে যাচ্ছি । আর হয়ত ফেরা হবে না । আবার অন্যদিকে ভাল লাগার একটা অনুভূতি । দেশের বাইরে প্রথম বারের মত ভ্রমন । আমার পরিবারের মধ্যে আমিই প্রথম বারের মত দেশের বাইরে । এও এক আলাদা অনুভূতি । এভাবেই আমার ইন্ডিয়ার মাটিতে পা রাখা শুরু হয় ।
এরপর লন্ডন এক্সপ্রেস এর কাউন্টারে চলে যাই । সেখানেই আমাদের পরবর্তি যাত্রা শুরু হবে । তো সেখানে গিয়ে হালকা ফ্রেশ হলাম । তার আগেই টাকা ভাঙ্গিয়ে নিলাম । আমাদের সাথে বাংলাদেশের এক ভাই ছিলেন যার আবার ইন্ডিয়াতেই ব্যবসা আছে । উনি আমাদের সাহায্য করলেন টাকা ভাঙানোতে । এবার বাসে জন্য অপেক্ষা করা । ভেবে ছিলাম বাস তাড়াতাড়ি আসবে বাস আসল প্রায় এক বা দেড় ঘন্টা পর যেটা খুব বেশি পরিমানে আমার কাছে বিরক্ত লেগেছে ।
কাউন্টেরর পাশে এক ছেলে সিম বিক্রি করছিল । সেখান থেকে একটা সিম নিলাম । তবে বর্ডারে বাংলাদেশের গ্রামীন ফোনের সিম কাজ করে । তার নেট পাওয়া যায় । বাসায় ফোন করে জানালাম আমি বর্ডার ক্রস করেছি । বাস আসল উঠে বসলাম তারপর ও প্রায় আধঘন্টা পর বাস ছেড়েছে । আমার কাছে সময়ের দামটা একটু বেশি । বাস যখন ছেড়েছে তখন প্রায় দেড়টা বেজে গিয়েছে । যাইহোক বাস চলা শুরু হল । আমার শরীরটা ক্লান্ত । একটু ঘুম ঘুম চলে আসলো । ঘুম ভাঙ্গলো দেখলাম একটা রেস্ট্রুরেন্ট এর সামনে বাস দাঁড়ানো ।
বাস থেকে নেমে হাত মুখ ধুয়ে বিরিয়ানি খেলাম । এরপর চা । আহা চায়ের স্বাধটাই আলাদা । এখনও মনে পরে । তারপর আবার বাস যাত্রা । জানি না কেন জানি মনে হচ্ছিল বাস কলকাতা যেতেই চাইছে না । গাড়ি যেন চলছেই না । আমি আবার ঘুমের মত ঝিমুনি চলছে । চোখ খুলে দেখি এয়ারপোর্টের মত জায়গা । পরে বুঝলাম এটা দমদম এয়ারপোর্ট । চোখ থেকে ঘুম উবে গেলো । এরপর কলকাতার ভেতর ঢুকছি আস্তে আস্তে । ভাল ই লাগছে । কলকাতার ভিতরেও মানুষ এখনও সবুজ রেখেছে । বিষয়টা ভাল । আমাদের ঢাকা তো সব পুরো কনক্রিটের জঙ্গল । রাস্তার আসে পাশে খোল ডাস্টবিন চোখে পরল না ।
এভাবে করতে করতে মারকুইস স্ট্রীট পৌছে গেলাম । আস্তে আস্তে বাস থেকে ব্যাগ নিয়ে নেমে পরলাম । আহা কলকাতা । এখান থেকেই আমার আর আমার বন্ধুর নতুন কিছু শুরু ।
(চলব)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:৩৭