somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনি কি জীবনের লক্ষ্য খুজে পেয়েছেন, চলুন খুজে দেখিঃ দি এলকেমিস্ট (বুক রিভিউ)

১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :








“যখন মানুষ সর্বান্তকরনে চায় কিছু একটা পেতে, মহা বিশ্বের প্রতিটি কনা যোগসাজশে লেগে পরে সেই চাহিদা মেটাতে”

কখন স্বপ্ন দেখেছেন । সেটা ঘুমিয়ে বা জেগে থেকে হতে পারে । স্বপ্নেরও ব্যাখ্যা রয়েছে । তবে সবাই স্বপ্ন ছুতে পারে না । স্বপ্ন অনেক সময় স্বপ্ন ই থেকে যায় । কেউ কেউ ছুটে চলে তার স্বপ্নের দিকে । স্বপ্নের ব্যাখ্যা খুজে বেড়ায় মানুষ । হর হামেশা ই তারা খুজতে থাকে তাদের স্বপ্ন কে । কিন্তু কত জন তাদের স্বপ্ন কে ধরতে পারে । কত জন ই বা সফল হতে পারে তাদের স্বপ্ন নিয়ে । আদৌ কি স্বপ্ন কে ছুতে পারা যায় । নাকি সে কেবল এক মরীচিকা । সেটা জানা সম্ভব শুধু স্বপ্নের লক্ষন অনুভব করে ।

জীবনের লক্ষ্য কি? কোন উদ্দেশ্যেই বা আমরা পৃথিবীতে এলাম । সেটা কি জানার কোন উপায় রয়েছে নাকি আমরা এখানে এসে সব ভুলে গিয়েছি । নাকি পৃথিবীটা সবার কথা জানিয়ে দেবে এক এক করে । জীবনের লক্ষ্য কি খুজে পাওয়া সম্ভব । সবার জীবনের লক্ষ্য কি সবাই খুজে পায় । নাকি সবাই তাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে জীবনের অর্থ খুজে বেড়ায় । সত্যিকার অর্থে জীবন আসলে কি ?

আন্দালুসিয়ার রাখাল বালক সান্তিয়াগো । একদিন স্বপ্ন দেখে গুপ্তধনের । তাকে যেতে হবে পৃথিবী ভ্রমনে । খুজে বের করতে হবে সেই গুপ্তধন । যা রয়েছে পৃথিবীর অপর প্রান্তে । কিন্তু সেখানে যাওয়াটা খুব সহজ নয় । তাকে পেরিয়ে যেতে হবে অনেক পথ । যেতে হবে বহুদূর । রাস্তায় অনেক বিপদ এবং সংকটপূর্ন । হয়ত গুপ্তধন পাওয়া যেতেও পারে, আবার নাও পারে । তবে তাকে যেতে হবে । যেভাবেই হোক খুজে বের করতে হবে সেই গুপ্তধন । তবে কিভাবে সেটা হবে?

সবার আগে বের করতে হবে কিভাবে যাওয়া যায় । স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিয়েছিল এক জিপসি । তার কাছ থেকে কোন পথ না পেয়ে নিজেই বেড়িয়ে পরে পথের সন্ধানে । যদিও সে জানে না কিভাবে খুজে বের করবে । কারন সে পথিক তবে সে পথের দিশা জানে না । তবে সেটা এটা জানে সে পথ খুজে পাবেই । পথেই দেখা হয়ে যায় এক বুড়োর সংগে যিনি নিজেকে সালেম এর রাজা বলে পরিচয় দেন । তিনি রাখাল বালকে পথ খুজে পাবার কিছু নির্দেশনা দেন । খুজে বের করতে বলেন আলকেমিস্ট কে । হয়ত সেই জানে কোথায় রয়েছে গুপ্তধন । যদিও সালেম এর রাজা বলেছেন পৃথিবীর সবাই এক । শুধু চিন্তা ভাবনাতে পার্থক্য হয় মানুষের । আর এই পার্থক্যটাই মানুষে মানুষে পার্থক্য গড়ে দেয় ।

সান্তিয়াগোও সেই দলের একজন যারা নিজেদের স্বপ্নের কথা ভাবে । ছুটে চলে তার অভিষ্ট লক্ষ্যে । ভেড়ার পাল বিক্রি করে যাত্রা শুরু করে ছুটে চলে তার স্বপ্নের পানে । এগিয়ে চলে তার লক্ষ্য পূরনের দিকে । যদিও সে জানে না ভবিষ্যৎ কি হবে । তবুও আত্মবিশ্বাস আর সাহস নিয়ে এগিয়ে যায় সামনের দিকে । হয়ত সুদিন আসবে ।

সে লক্ষণ দেখে এগিয়ে চলে । পথে দেখা হয় সেই আলকেমিস্ট এর সাথে । তিনি তাকে শেখান মহাবিশ্বের ভাষা, শুনতে সাহায্য করেন আত্মার কথা । পৃথিবীর মধ্যেও আত্মা রয়েছে, তাদের ভাষা । প্রতিটি বিন্দু ধুলিকনার ভাষা বুঝতে শেখান । কিন্তু সান্তিয়াগোর মনের মধ্যে রয়েছে একজন ফাতিমা । তার কথা বারবার ই মনে পরে । তবে সে জানে তার লক্ষ্য পূরন হলেই কেবল তাকে পাওয়া যাবে । আলকেমিস্ট তাকে পথ নির্দেশনা দিয়ে দেন । এরপর তার পথ চলা শুরু একা এবং নিঃসঙ্গ ।

সান্তিয়াগো কি পারবে তার লক্ষ্যে পৌছুতে?

যেই বইটার কথা বলছি সেটা আর অন্য কোন বই নয় সেটি হচ্ছে “দি আলকেমিস্ট” । বইটি মুলত পুর্তগীজ ভাষায় লেখা হয়েছিল । বইটি এই পর্যন্ত ৫৬টির ও বেশি ভাষায় রুপান্তর করা হয়েছে । বিশ্বের অন্যতম বই যেটি এত ভাষায় রূপান্তর করা হয়েছে । বইটি এত ভাষায় রুপান্তর হবার কারন কি?

কারন আছে । তার কারন হচ্ছে বইটি যেন আপনার মনের কথা একদম সামনে থেকে তুলে ধরেছে । আপনি জীবনে কি করতে চান কোথায় যেতে চান সেটার বর্ননা দেয়া হয়েছে । এক রাখাল বালকের মাধ্যমে আপনার ভেতরের জীবন বোধ কে তুলে ধরা হয়েছে । আসলে আপনার জীবনের লক্ষ্যটা কি সেটা আপনি জয় করতে চান কিনা আর কিভাবে করতে চান সেটাই মুখ্য বিষয় ।

বইটির সবচেয়ে ভাল দিক হচ্ছে আপনি চাইলেও বইটি থেকে উঠতে পারবেন না । তারচেয়ে বড় কথা বইটি যেন আপনাকে নিয়েই লেখা হয়েছে । রাখাল বালকের চিত্র যেন আপনাকে বর্ননা করছে । কথা হচ্ছে আপনি যেন সেই রাখাল বালক যে খুজে ফিরছে গুপ্তধন । খুজে ফিরছে নিজেকে । খুজে ফিরছে নিজে অস্থিত্ব কে ।

বইটির খারাপ দিক নেই । কারণ বইটি জীবনবোধের বড় অনুভূতি দেয় । যদিও বইটি ছোটদের জন্য নয় । তবে আপনি এর গভীরতা বুঝতে পারলে আপনিও হয়ে যাবেন সেই রাখাল বালক । দেরি না করে শুরু করে দিন ।

তা কবে শুরু করছেন আপনার যাত্রা?

বইঃ দি আলকেমিস্ট
লেখকঃ পাওলো কোয়েলহো
অনুবাদঃ মোঃ ফুয়াদ আল ফিদাহ
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৩০
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×