somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই মৃত্যুর জন্য কারো প্রতি অভিযোগ নেই, এমনকি সৃষ্টিকর্তার প্রতিও!!!!

২৮ শে জুন, ২০১২ ভোর ৫:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বছর বছর মৃত্যু, হিসাবটি কেবল পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি। দুই একদিন আলোচনা সমালোচনা চলে নিজেদের ভিতর, নিজের ভিতর, কখনো কখনো পরিবারের ভিতর। বর্ধিত জনসংখ্যার দেশে যেন ম্যালথাসের জনসংখ্যা তত্ত্বের প্রাকৃতিক নিরোধ!! সৃষ্টিকর্তার নির্মম তামাশা। কিন্তু এই হতভাগারা তো মাটির মানুষ এদের নিয়ে সৃষ্টিকর্তার কেন এতটা তামাশা!!
গৃহহারা, স্বজনহারা, সম্পদহারা নিঃস্ব-দরিদ্ররা যখন চিৎকার করে বিদীর্ণ করছে চট্টগ্রামের বাতাস তখন আমাদের মহান মেছোবাজার সংসদে পাশ হচ্ছে জাতির জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার পাথুরে বাজেট। জানিনা সংসদে এতগুলো মৃত্যুর জন্য দুই/একটি কথা কিংবা একটি মিনিট চুপ থাকার সুযোগ তাদের হযেছিলো কিনা। কিন্তু যথারীতি মিথ্যাচার আর বিরোধীপক্ষকে বিষোদগারের আগুনে ঠিকই ঠেলেছেন আমাদের মহান দেশপ্রেমিক প্রধানমন্ত্রী। চামচারা হাততালি দিয়ে যথারীতি বাতাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে-যিনি স্বঘোষত শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিক। হতভাগ্য জীবিত এবং ভয়ংকর মৃত্যুর স্বাদনেওয়া মৃতদের যার যার ধর্মীয়ভাবে সৎকারের ব্যবস্থা না করেই আমাদের কথাশিল্পী, মাহফুজের বাচালমন্ত্রী ঠিকই বাচাল জাতির জন্য উপহার হিসাবে দিয়েছেন মোবাইল ফোনে কথা বলার বাচালিত সুযোগ, কমিয়েছেন কলচার্জ!! শত সহস্র জনদাবীকে পায়ের তলায় দাবিয়ে বাচালতার জন্যই কেবল কমানো হলো মোবাইল কল চার্জ-এটাও জাতির জন্য উপহারই বলা যায়।


অন্যদিকে আগামীর ক্ষমতা প্রত্যাশী আমাদের বিরোধীদল চট্টগ্রামের বাতাসভারী করা চিৎকার আর গোংগানীর শব্দ শুনতে পাননি-তারা শুনতে পেয়েছেন চুনো ইনোর মাইনাস খালেদা জিয়ার ভাগ্যের কথা। তারা ম্যাচবাতি সাথে নিয়ে রাজপথে নামেন, ইনুর কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন। ইনুকে হনু বানানো আম্লীগ নিজেরা খেলেও এখন ইনুকে দিয়ে খেলাইতে চায়। বেকুব বিরোধীদল মানুষের মৃত্যুকে আগে বিবেচনা করার দায় অনুভব করতে পারলোনা। মানুষের কথা বলে রাজনীতি করলে যারা মৃত্যুবরণ করতে বাধ্য হলো তারা কি মানুষ ছিলোনা?

আমাদের ধর্মীয় দল হামাস জিতলে বাংলামূলুকে মিছিল করে, ব্রাদারহুড জিতলে বাসায় মাংস খাওয়ার উৎসব করে, চেচনিয়ায় জঙ্গী মরলে এখানে চেহলাম করে-কিন্তু চট্টগ্রামে ভূমিধ্বসে মানুষ মরলে তাদের কিছু যায় আসেনা। পাহাড়ীরা মানুষ কিনা এটা নিয়ে তাদের ফতোয়া ক্লিয়ার না হওয়া পর্যন্ত তারা মাঠে নামবেনা। এই ধার্মিকদের বকধার্মিক বললেও বকপাখিকে অপমান করাই হবে, বিশ্বব্যাপী এই ভন্ডদের উপর ডাইরেক্ট গজব চলছে, তবুও এরা মানুষ হওয়ার চেষ্টা করেনা, চেষ্টা করে ধর্মীয় নেতা হতে!!
তাহলে ভূমি ধ্বসের নির্মম শিকার মানুষ কার কাছে যাবে, কে তাদের পাশে দাড়াবে? শুনেছি এখনো ব্লগে, ফেইসবুকে সাহায্যের আবেদন জানায় এদেশের একটি প্রজন্ম-যারা কখনো বিক্রিত কিংবা বিকৃত হবেনা এই রাজনৈতিক নামের ভন্ডদের মিথ্যা কথায়, মিথ্যা আশ্বাসে, মিথ্যা স্বপ্নে কিংবা ধর্মীয় আফিমের নেশায়। তখন বাচঁতে ইচ্ছা করে আরো বহুদিন। আমার অফিসের পিয়ন খালেক ভয়ে ভয়ে কাদোঁ কাদোঁ হয়ে যখন আমাকে প্রস্তাব দেয়, স্যার আমরা কি আমাদের একদিনের বেতন এই হতভাগ্যদের দিতে পারিনা? আমি নির্বাক হয়ে যাই, খালেকের কাছে দূর্বল হয়ে যায় আমার মনূষত্ব। শরম নামের কিছু আমার মধ্যে থাকলে সেটা হয়তো জেগে উঠতো। কিন্তু আমি নির্লজ্জ বলেই খালেকদের সাত-পাচঁ ঝামেলার কথা বলে হয়তো নিরস্ত করার চেষ্টায় থাকবো। মনে মনে প্রশ্ন করেছি, খালেকদের সংখ্যা কেন বাড়েনা, এই সচেতন প্রজন্মটি দ্রুত ক্ষমতাবান হয়না কেন? বাড়ছে কেন ভন্ড নেতৃত্ব?

মানুষ সাপকে বাচাঁনোর আন্দোলন করে, গাছকে বাচাঁনোর আন্দোলন করে, বণ্যপ্রানীকে বাচাঁনোর জন্য এনজিও খুলে ব্যবসার ধান্ধা করে-কিন্তু এই ভন্ডরা মানুষের জন্য নুন্যতম দায়বোধ করেনা। হতভাগা দরিদ্র দেশবাসী ঘুমন্ত অবস্থায় মাটিচাপা হয়ে যায়-যেন প্রাকৃতিক জীবন্ত কবর!! মৃত্যুর আগে তাদের প্রানান্তকর চেষ্টা-বেচেঁ থাকার যুদ্ধ। দরিদ্র হয়েই বাচঁতে চাওয়া, চাহিদাহীন বেচেঁ থাকার প্রচেষ্টা!! তবুও আমরা নির্বিকার থাকি। ভূমিহীন দরিদ্ররা সরকারী রাস্তার পাশে পলিথিন দিয়ে তৈরী খুপড়িতে শুয়েও রাতের রাজপথের ট্রাকের চাপায় মৃত্যুকে বরন করতে বাধ্য হয়-ঘুমন্ত অবস্থায়। রাষ্ট্রব্যবস্থা কখনো ছাগল দিয়ে, কখনো পাচঁ হাজার টাকা দিয়ে দায়মুক্তির তামাশা করে, নিজেদের ঐতিহাসিক জনসভায় যোগ দেওয়ার দাওয়াতও দেয় বেচেঁ থাকাদের, যাতে লাশের সংখ্যার সাথে ক্ষমতার সমানুপাতিক সম্পর্কটা পোক্ত করা যায়। দায়হীন, জবাবহীন নিঃশর্ত মৃত্যুই এই হতভাগাদের প্রাপ্য। দখল হবে বস্তি, বাস্তহারা এই দরিদ্ররা বাচাঁর জন্য পাহাড়ের পাদদেশে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েও থাকতে বাধ্য হয়, শখে নয়।


দরিদ্র মরবে মরবেই---
লঞ্চের ডেকে থেকে জলপান করে,
ট্রাকের তলায় মাতাল মুর্র্খ ড্রাইভারের দায়িত্বহীনতা ও রাষ্ট্রীয় সহযোগিতায়
পাহাড় কাটার সর্বনাশা ভূমিধ্বসের তলায় পড়ে জীবন্ত কবরস্থ হয়ে,
রাজনীতির নামে নিশ্চিত শহীদ হতে হবে গাড়ীতে আগুনে পুড়ে,
কখনো রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বাধ্যতামূলক বীরের বেশে, কারো ক্ষমতারোহনের তাগিদে।
কখনো কখনো ঈশ্বরের তামাশায়------স্রেফ তামাশায়!!

এই হতভাগ্য দরিদ্রদের পক্ষ থেকে, সুযোগ থাকলে সৃস্টিকর্তাকে জিজ্ঞাসা করতাম- সৃষ্টির সাথে তামাশা করার আগে কেন আমার ক্ষমতা এত কম করে দিলে, আমরা তো দরিদ্র, মাটির মানুষ। কেন তোমার গজব পড়েনা ঐ ক্ষমতাবান সর্বগ্রাসীদের উপর, নাকি তাদের ক্ষমতা তোমার থেকেও বেশী?


সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০১২ ভোর ৫:৪৮
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে দেখা - ১৩ মে

লিখেছেন জোবাইর, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:০৩

১৩ মে ২০০৬


দমননীতির অদ্ভুত কৌশল
সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমন নীতির আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্রুত বিচার আইন ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে দমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×