somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অর্থহীন চুলকানিতে বিকৃত সুখানুভূতি, বেকুব জনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনামলম। বিশ্বব্যাংক কর্তৃক আওয়ামী জোঁকের মুখে লবণ?

১৬ ই জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আলোচিত পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ হওয়ায় বিব্রত আম্লীগ নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে নানান সময়ে নানান ধরণের ফতোয়া নিয়ে হাজির হচ্ছে। কখনো বিশ্বব্যাংক বদমায়েশ, কখনো ব্যক্তি ইউনুস, কখনো যুদ্ধাপরাধী ও দেশবিরোধী একটি অংশকে আবিস্কার করছে নিজ চরিত্রানুযায়ী এবং অভিযোগ করছে এরাই এই ফান্ড বন্ধ হওয়ার জন্য দায়ী!! নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখা কিংবা দলীয় দূর্ণীতিকে তারা দেখতে চায় না, বা দেখতে পায়না। বিষোদগারে কি পদ্মা সেতু ফিরে আসবে কিংবা নিজেদের অপকর্মকে মানুষ মাফ করে দিবে? ব্যক্তি বিশেষকে চুলকিয়ে আম্লীগ বরাবর বিকৃত সুখানুভূতি খোঁজে-যা তাদের ঐতিহাসিক ধারাবাহিক চরিত্র। কিন্তু দেশ যাচ্ছে বিপদজনক পথে, বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।।

আওয়ামী চুলকানিতে রক্তাক্ত যারাঃ
সভাপতি ড. কামাল দলকে বাচাঁনোর তাগিদে জিয়ার অনুমতি নিয়ে হাসিনাকে দেশে আনেন। কিন্তু এক সময় ঐতিহাসিক চুলকানিতে ড. কামাল রক্তাক্ত হয়ে দল থেকে বের হয়ে যান। দীর্ঘদীন প্রবাসে থেকে প্রথম বারের মতো দেশে ফিরে বঙগবীর কাদের সিদ্দিকীও এই চুলকানিতে রক্তাক্ত হয়ে দল থেকে বিতাড়িত হন। সর্বজন শ্রদ্ধেয় রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন, লতিফুর রহমানও রক্তাক্ত হন। এবার ক্ষমতায় এসে উপর্যুপুরি চুলকাতে থাকে দেশের একমাত্র নোবেল জয়ী ড. ইউনুসকে। যদিও তার অপরাধ আমরা জানতে পারিনি। একই সাথে ভাড়া করা আরেকজন নোবেল জয়ীকে পাশে বসিয়ে বিকৃত সুখানুভূতি পেতে থাকে আম্লীগ। সম্প্রতি গুণী মানুষ অধ্যাপক সাঈদ স্যারকে এরা সংসদে বসে চুলকায়-আম্লীগের মুখে চুনকালি পড়ার দশায় স্পিকার তা প্রশমন করেন।

পদ্মা সেতুর ফান্ড ও আওয়ামী চোরদের হাটে-বাজারে ফতোয়াঃ
দূর্নীতির কারনে বন্ধ হওয়া ফান্ড যোগার করতে, নিজেদের অপকর্মকে ঢাকতে বরাবরের মতোই আম্লীগ হাজির হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মলম নিয়ে। নিজেরাই ফান্ড গঠন করবে, একদিন বাজার করবেনা, মোবাইল কল সেইভ করবে-এজাতীয় মস্করামূলক বাণী আসতে থাকে শীর্ষ পর্যায় থেকে। এই সুযোগে ছাত্রলীগ ফান্ড কালেকশনে নামে!!! সন্দেহ নেই ছাত্রলীগের আয়-উপার্জন ভালো এখন। কিন্তু প্রশ্ন হলো দেশের মানুষ কেন পদ্মাসেতুর জন্য ফান্ড যোগাবে-যখন চোরের বিচার হবেনা? এই ফান্ড কেন আমরা এই চোর সরকারের হাতে দিবো, কেন আমরা চোরঞ্জিতের মতো মহান লোকের ফতোয়ায় বিশ্বাস করবো-যখন তার এপিএস-ই কোটিপতি হয়েছেন সীমাহীন চুরির মাধ্যমে। মাঠে নামা চোরেরা মুক্তিযুদ্ধের বাণী প্রচার করার সাথে সাথে বিশ্বব্যাংক খারাপ-এটা উপলব্ধি করছে। কোনো চোরই কোনো সচেতন গেরস্থকে ভালোচোখে দেখেনা, চুরির প্রত্যাশায়-এটা আমরা জানি। আম্লীগ উল্টা বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির তদন্ত করছে, কখনো কখনো ড. ইউনুসকে জড়িত করে কোরাস গাইছে। দলীয়দাসেরা একবারও সরকারকে বলছেনা, যে চিঠিতে দূর্নীতির অভিযোগ বিশ্বব্যাংক করেছে-সেটা প্রকাশ করা হোক। কারণ তারা জানে এতে করে শীর্ষ থেকে সচিব পর্যন্ত ধরাতল হতে পারে। তাই চেতনার মলমই কার্যকরী হবে ভেবে মাঠের কোরাসে আম্লীগ। মুক্তিযুদ্ধকে দলীয় ও ব্যক্তিগত অপরাধ ঢাকতে ব্যবহার করছে- চূড়ান্তভাবে যুক্তিতে অসহায় হয়ে পড়া বেসামাল আম্লীগ।

একজন অর্থনীতিবিদ ও তার আর্শীবাদ তত্ত্বঃ
আবুল বারাকাইত-দলীয় দাসানুদাস একজন অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেছেন পদ্মাসেতুর ফান্ড বন্ধ হওয়া নাকি দেশের জন্য আর্শীবাদ হয়েছে। জনাব বারাকাইত জীবনের শেষে এসে এটা উপলব্ধি করছেন দলীয় অপরাধকে আড়াল করতে!! এতদিন এটা তিনি বুঝতে পারেননি, অথচ ইনার মতো বেকুব একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান দলবাজির পুরষ্কার হিসাবে!! তা তিনি যদি তার নেত্রীকে বলতেন অধিকতর আর্শীবাদ অর্জনের স্বার্থে বিশ্বব্যাংকের অন্যান্য সকল প্রকল্পের অর্থ বন্ধ করা হোক-তাহলে আমরা বুঝতাম আর্শীবাদ কি জিনিষ। কিন্তু আওয়ামী প্রপাগান্ডা মেশিন থেকে দলীয় স্বার্থ ছাড়া দেশের স্বার্থে কোনো কালেই কোনো কল্যানকর ধারণা আসেনি, আসতে পারেনা। শুরুতেই বিদায়ী বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টকে-ফান্ড বন্ধের জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করে। নতুন প্রেসিডেন্ট যখন একই কথা বললেন, তখন এই পান্ডারা বিশ্বব্যাংকই খারাপ বলে বিদেশী দুটো ম্যাগাজিন পড়ার ফতোয়া দিলো দেশবাসীকে!! নিজেদের পাছারক্ষার আর কোনো পথ খোলা না থাকায়-এটা তাদের করতেই হয়েছে বলে মনে করছি।

অপরাধের রকমফের ও আম্লীগি চোপার কসরতঃ
বিশ্বব্যাংক যেখানে ফান্ড দেয়নি, সেখানে ঘুষ দুর্নীতি হওয়ার সুযোগ কোথায়? এ জাতীয় বাণী স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর উর্বর মস্তিস্ক থেকে এসেছে, আমরা নড়েচড়ে বসেছি, ভাবছি, ঠিকই তো। এই ভাবনার সাথে আরো ভাবছি, পকেটমার পকেটে হাত দিলো, সাথে সাথে ধরলাম, ধরা পড়ার পরও তাকে কিছুই বলা যাবেনা, কারণ টাকা যেহেতু সে তখনো নেয়নি। বাসে অস্ত্রসহ ডাকাতদল ধরা পড়লো, পুলিশ কিছুই বলতে পারবেনা কারণ তখনো তারা ডাকাতি করেনি!! আম্লীগ ঘুষ নিয়ে দেন-দরবার করেছে, কাজের আগেই ঘুষ বিনিময় হয়েছে,তারপরও তাদের কিছু বলা যাবেনা কারণ এখনো বিশ্বব্যাংক ফান্ডই দেয়নি!!! আমার মতো বেকুব জনতাকে বুঝানোর জন্য এর চেয়ে সহজ সুত্র আর কি হতে পারে। কিন্তু ঘুষের স্বর্গরাজ্য বাংলাদেশে আমরা জানি কাজের আগেই ঘুষ দিতে হয়, তারপরও অপেক্ষা করতে হয় কবে কাজ হবে। আর সরকার আমাদের বুঝাচ্ছে ফান্ডই আসেনি ঘুষ কিভাবে হলো? কিন্তু জনতা ইতিমধ্যেই জানে পদ্মাসেতুর পেছনে এ পর্যন্ত ১৫০০ কোটি টাকা কমবেশী ব্যয় হয়েছে, ফান্ড আসার আগেই। নিশ্চয় এই টাকার মধ্যে আমার ১টি টাকা হলেও আছে। আমি ট্যাক্সপেয়ার, আমার টাকার হিসাব দিতে হবে, পদ্মাসেতু দিতে হবে। একই সাথে দূর্নীতির টাকা কোথায় কার কার ফান্ডে গিয়েছে-তার জবাব দিতে হবে। এখন না দিলে নির্বাচনের সময় আরো অনেক গুলো হিসাবের সাথে দিতে হবে।

আওয়ামী দাসদের বর্তমান করণীয় হতে পারে-
--মুক্তিযুদ্ধকে অপরাধ ঢাকার মলম হিসাবে ব্যবহার না করে সরকারকে দূর্নীতির তদন্ত রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করার জন্য চাপ দেওয়া।
--দলীয় স্বার্থেই পদ্মাসেতুকে যেকোনো মূল্যে জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া।
--অন্যান্য চলমান প্রকল্পগুলোকে চালু রাখার জন্য বিশ্বব্যাংকের সাথে বিরোধে গিয়ে বাংলাদেশকে বন্ধুহীন না করা।
--বিশ্বব্যাংককে জাতীয়তাবাদী ব্যাংক হিসাবে না দেখে নির্মোহভাবে দেখে নিজেদের অপকর্মগুলোকে বের করে দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনা।
--প্রধানমন্ত্রীর সাথে অযথা কোরাসে বিলাপ ও বিষোদগার না করে ড.ইউনুসকে তার প্রাপ্য সন্মান না দিতে পারলেও চুলকানী বন্ধ করা।
--গ্রামীন ব্যাংককে আওয়ামী কায়দায় না চালিয়ে ইউনুস কায়দায় চালানোর ব্যবস্থা করা।
--চোরঞ্জিত, আবুল, বারাকাইত, কামুকরুল, মহাবুবস হায়নিফদের মুখে কুলুপ দিয়ে দেওয়া।
এতে হয়তো আগামী দিনে প্রধান বিরোধীদল হিসাবে আম্লীগ সক্রিয় থাকতে পারবে। অন্যথায় হিজরতের জায়গা বুকিং দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে। বহু খুন বহু গুমের দায়ভাব বহন করিবার শক্তি চুলকানীতে ব্যয় করিলে, দলীয়ভাবে সুখানুভূতি পাইলেও স্বাধীনতার স্বাদ জনগণ পায়না, সুশাসন নিশ্চিত হয়না, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়না।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সব সময়ই সুশাসন, ন্যায়বিচার, বৈষম্যহীন জীবনের জন্য, আওয়ামী অপরাধ আর চুরিকে যায়েজ করার চেতনা নিয়ে কেউ মুক্তিযুদ্ধে যায়নি। মহান মুক্তিযুদ্ধ চোরদের চুরির হাতিয়ার হতে পারেনা।
৮৩টি মন্তব্য ৮১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পথ হারিয়ে-খুঁজে ফিরি

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৩


মনটা ভালো নেই। কার সাথে কথা বলবো বুঝে পাচ্ছি না। বন্ধু সার্কেল কেও বিদেশে আবার কেও বা চাকুরির সুবাদে অনেক দুরে। ছাত্র থাকা কালে মন খারাপ বা সমস্যায় পড়লে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×