সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:১৫
বিরোধী দল ছাড়াই বাজেট অধিবেশন?
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
সংসদে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে। মিডিয়ার সাহায্যে আমরা ইতিমধ্যেই জেনে গেছি বেশী ব্যায় এবং বড় দায়ের বাজেট আসছে। এ সংবাদ যতটা না আলোচিত তার অধিক আলোচিত বিরোধীদলের সংসদে যোগদানে অনিশ্চয়তা। আজ তারা সংসদে যোগ দিলেও ওয়াক আউট করেছে মুহুর্তেই। বিএনপি এখনও পর্যন্ত পরিস্কার করে কিছু না বললেও বোঝা যাচ্ছে তাদরে আগ্রহটা নিন্মগামী। বাজেট অধিবেশনে বিরোধী দলের উপস্থিতি অনেকগুলো কারনেই জরুরী। প্রথমত, বাজেট ঘোষনার পরপরই বিরোধী দলগুলো ফলাও করে প্রকাশ করতে থাকে, সরকার কল্পনা প্রসূত এবং জনস্বার্থ বিরোধী বাজেট ঘোষনা করেছে। কিন্তু বিরোধী দল যদি সংসদে উপস্থিত থেকে বাজেট সম্পর্কে গঠনমূলক বক্তব্য প্রদান করে তবে জনগন এ ধরনের উদ্ভট কথা শোনা থেকে মুক্তি পায়। দ্বিতীয়ত, সরকার যে সব খাতে ব্যায় ধরেছে বিরোধী দলের তাতে আপত্তি থাকতেই পারে। সেটি যদি তারা সংসদে গিয়েই উপস্থাপন করেন তবে আর পল্টনে গগন বিদারী জনসভার আয়োজন করতে হয় না কিংবা ডাকতে হয়না জনস্বার্থ বিঘ্নকারী হরাতাল। তৃতীয়ত, জনগনের প্রত্যাশা সাংসদরা তাদের দাবীর কথা সংসদে উপস্থাপন করবেন। জনগনের জন্য বাজেট একটি গুরুত্বপূর্ন ইস্যূ। এ ইস্যূতে যদি বিরোধী দলের কোন ভূমিকাই না থাকে তবে জনগনের হতাশ হবার যথেষ্ট কারন রয়েছে। সংসদে বিরোধী দলের এ ভূমিকার কথা অবশ্য বিএনপিরও অজানা নয়। তবু জনগনের প্রত্যাশা উপো করে কেন বাজেট অধিবেশনে অংশ নিচ্ছে না তাঁরা ? এ প্রশ্নের উত্তর সাধারণ মানুষের কাছে পরিস্কার হয়ে যায়, যখন বেতন ভাতা বাড়ানোর দাবী এবং মেয়াদ শেষ হবার শংকায় তারা সংসদে হাজির হন। বাজেট অধিবেশনে বিরোধী দল উপস্থিত থাকা মানে চাইলেই সরকার তাদের খুশি মত মনগড়া বাজেট পাশ করাতে পারবে না। এখন বিরোধী দল সংসদে না গিয়ে যদি পল্টন কিংবা শাহবাগে গলা ফাটিয়ে বাজেটের বিরুদ্ধে কথা বলেন সেটি হাস্যকর মনে হবে। আমরা চাই বিএনপি সংসদে গিয়ে কথা বলুক। বাংলাদেশে বিরোধী দলের সংসদ বর্জনের যে প্রথা চালু রয়েছে সেটি ভেঙ্গে দিক। সংসদে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকলে সরকারের কার্যক্রম মনিটরিং করার অভাব দেখা দেয়। সরকারী দল হয়ে ওঠে বেপড়োয়া। এখন বিএনপি যদি সরকারী দলকে সে সুযোগ করে দেয় তবে জনগনের পাশাপাশি তারাও সমান তিগ্রস্থ হবে। বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি এখনও পর্যন্ত সরকারের বিরুদ্ধে এমন কোন শক্তিশালী আন্দেলন গড়ে তুলতে পারেনি যাতে সরকারের ভীত নড়বড়ে হয়ে ওঠে। ফলে বাজেট অধিবেশনেও যদি তারা উপস্থিত না থেকে ব্যর্থতার পরিচয় দেয় তবে রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশে তাদের পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক এগারোর পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে যে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে তাতে একটি বিষয় পরিস্কার, যেকোন সময়ের চাইতে জনগন এখন অধিক সচেতন। কোনটি তাদের পে আর কোনটা বিপে যাচ্ছে জনগন সেটি ভালই বুঝতে পারে। ফলে ‘আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি’ বলে চিৎকার চেচামেচি করবেন কিন্তু সংসদে গিয়ে জনগনের কথা বলবেন না সেটি তারা মেনে নেবে না। এবারের বাজেট অধিবেশনে সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করে বিএনপির আন্দেলনের পথ প্রসারিত করার একটি ভাল সুযোগ রয়েছে। কেননা যুদ্ধাপরাধ ইস্যূতে সরকারের অগ্রগতি লক্ষনীয় হলেও খাদ্যদ্রব্য, বিদ্যুৎ, অপরাধদমনসহ বেশ কিছূ গুরুত্বপূর্ন বিষয়ে কাঙ্খিত সাফল্য অর্জনে তারা এখনও ব্যার্থ। তাছাড়া ফেসবুক, চ্যানেল ওয়ান এবং সর্বশেষ আমারদেশ বন্ধ করে দিয়ে বেকায়দায় সরকার। অমরা আশা করব বিরোধী দল আন্দোলনে যাবার এ সুযোগটিকে কাজে লাগাবে। সংসদের বাজেট অধিবেশনে হাজির হয়ে যুক্তি-তর্কে অবতির্ন হবে এবং জনগনের কথা বলবে। এবার একটি গল্প বলি। বিয়ের পর থেকে মাসুদ এবং তানজিলার সংসারে অশান্তি লেগেই আছে। সংসারের কোন বিষয়েই তারা মতৈক্যে পৌঁছতে পারে না। মাসুদ ডানে তো তানজিলা চলে বায়ে। মাসুদ গাড়ি কিনতে চাইলে তানজিলা চায় ফাট। এত অমিলের মধ্যেও তারা একটি বিষযে একমত। একমাত্র সন্তান অর্নবের উন্নয়নে তারা যে কোন বিষয়ে একে অপরের মতামতকে প্রধান্য দেয়। বাংলাদেশের অবিভাবক দুই শক্তিশালী রাজনৈতিক দল কেন যে দেশের উন্নয়নে একমত হতে পারছেন না সেটিই ভাবনার বিষয়।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
অল্প পুঁজিতে অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসার সন্ধান, যে কেউ চাইলে শুরু করতে পারে

কেউ একজন জানতে চেয়েছেন ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে কিভাবে মাসে ১/২ লাখ টাকা ইনকাম করা যায়? বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করে দেখলাম বাংলাদেশে ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন
রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন
নীল নকশার অন্ধকার রাত

কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন
আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে
আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[
স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।