এই দেশের ইতিহাস বারবার আমাদের একটাই শিক্ষা দেয় দাসত্ব কখনো টিকে না। নাম বদলায়, মুখ বদলায়, কিন্তু দাসত্বের চরিত্র বদলায় না। শেখ হাসিনার শাসন সেই দাসত্বেরই এক নগ্ন রূপ, যেখানে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সার্বভৌমত্ব বিক্রি করা হয়েছে, জনগণের কণ্ঠ রুদ্ধ করা হয়েছে, আর ভিন্নমত মানেই শত্রু।
আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই আগামী দিনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি বা যে কোনো রাজনৈতিক শক্তি যদি এই একই দাসত্বের পথে হাঁটে, জনগণ তাদেরও ছাড় দেবে না। প্রশ্ন দল নয়, প্রশ্ন আদর্শ। প্রশ্ন একটাই আপনি আজাদীর পক্ষে, না গোলামির দালাল?
বাংলাদেশের মানুষ কখনো অন্যায়ের সামনে মাথা নত করেনি। ভারতীয় আগ্রাসন হোক বা অভ্যন্তরীণ ফ্যাসিবাদ এই জাতি বারবার প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। আর সেই প্রতিরোধের প্রতীক হয়েই আমাদের সামনে এসেছিলেন ওসমান হাদী।
ওসমান হাদী কোনো দেবদূত ছিলেন না, তিনি আমাদেরই একজন ছিলেন। কিন্তু তিনি সাহস করেছিলেন। তিনি দাসত্বের রাজনীতিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের কথা বলতে গিয়ে তিনি ভয় পাননি। আর ঠিক সেই কারণেই তাকে বাঁচতে দেওয়া হয়নি।
ফ্যাসিবাদের দোসর আওয়ামী লীগ ও তাদের মদদপুষ্ট শক্তিগুলো তাকে হত্যা করেছে কারণ তারা জানত, একটি কণ্ঠস্বর কখনো কখনো হাজারো অস্ত্রের চেয়েও ভয়ংকর।
স্বাধীনতার পর এই দেশে অনেক রাজনীতি হয়েছে, অনেক নেতা এসেছে-গেছে। কিন্তু ওসমান হাদীর মতো করে দাসত্বের বিরুদ্ধে এমন স্পষ্ট ভাষায় খুব কম মানুষই কথা বলতে পেরেছে। তিনি বলেছিলেন ইনসাফের রাজনীতির কথা ইনসাফ নিয়ে বাঁচার, ইনসাফের পথে থাকার কথা। কিন্তু দোসররা তাকে সেই সুযোগ দেয়নি।
আজ অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও আমি দেখি আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো সক্রিয়। তারা এখনো গুম, হত্যা আর অস্থিতিশীলতার স্বপ্ন দেখে। তারা ভাবে, সময় বদলালেও তারা ধরা পড়বে না। কিন্তু তারা ভুলে যায় এই দেশের মানুষ ভুলে যায় না, ক্ষমাও করে না।
আরও ভয়ংকর বিষয় হলো এখনো কিছু তথাকথিত সুশীল আছে, যারা আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা আজও ভারতের দাদাদের পায়ে মাথা রেখে আমাদের দেশটাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে চায়। এরা মুখে গণতন্ত্র বলে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে দাসত্বকে জায়েজ করে।
আজ আমাদের সামনে কোনো জটিল প্রশ্ন নেই। প্রশ্নটা খুব সোজা
আজাদী না গোলামি?
আমার উত্তর পরিষ্কার আজাদী। শুধু আজাদী।
যারা এই দেশকে ভালোবাসেন, যারা ওসমান হাদীর কণ্ঠে নিজেদের স্বপ্ন খুঁজে পেয়েছেন, যারা তার মতো সাহসী হতে চান—তাদের এখন আর বসে থাকার সুযোগ নেই। চুপ থাকা মানেই অন্যায়ের পাশে দাঁড়ানো।
দাসত্বের রাজনীতির বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার থাকতে হবে।
যারা নিজেদের বিকিয়ে দিয়ে এই দেশটাকে জাহান্নাম বানাতে চায়—তাদের বিরুদ্ধেই আগামীর লড়াই।
ওসমান হাদীকে হত্যা করা গেছে, কিন্তু তার মতো কণ্ঠস্বরকে থামানো যাবে না।
একজন হাদী গেছে হাজারো হাদী আসবে।
আজাদী না গোলামি?
আজাদী। ইনসাফ। প্রতিরোধ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




