১৯৭৫ সালে জিয়াউর রহমান উপসেনাপ্রধান হিসেবে থাকায় নিয়মানুযায়ী তিনি বাকশালের সদস্য হতে পারতেন না। কিন্তু তার সমসাময়িক কে. এম. শফিউল্লাহ, খালেদ মোশারফ প্রমুখ বাকশালের সদস্য হওয়ায় জিয়াও মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন বাকশালের সদস্য হওয়ার জন্য। বাকশালে যোগ দেওয়ার জন্য জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করেও তিনি বাকশালের সদস্য হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা পোষণ করেন।
এই সত্যটা বিম্পির কোনো পুরোনো নেতাও অস্বীকার করতে গেলে তাকে দশবার ভাবতে হবে। ২০১০ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়ার বাকশালে যোগ দেওয়ার আবেদনের কথা বললে একমাত্র মেজর হাফিজ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরোধিতা করেন এবং রেডিও তেহরানকে দেওয়া বক্তব্যে জিয়ার বাকশালে যোগদানে আবেদনের কথা অস্বীকার করেন।
কিন্তু শালারা, অস্বীকার করবি ভাল কথা। মিথ্যা দিয়ে একটি ধ্রুব সত্যকে অস্বীকার করতে গেলে যা হয় মেজর হাফিজের অবস্থা সেটাই হয়েছিল।
রেডিও তেহরানকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে মেজর হাফিজ বলেন, "১৯৭৩-৭৪ এই দুই বছর আমি জিয়াউর রহমানের পিএস ছিলাম। তখন বাকশালের সদর দপ্তর থেকে জিয়ার কাছে বাকশালে যোগ দেওয়ার জন্য একটি ফর্ম আসে। জিয়া আমার কাছে বুদ্ধি-পরামর্শ চান। আমি তাঁকে বলি, এই ভুল করবেন না। তখন জিয়া বাকশালে যোগ দেওয়ার ফর্মটি পেপার বাস্কেটে ছুঁড়ে মারেন।"
মেজর হাফিজ যে একটা ধ্রুব সত্যকে ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা করেছেন সেটা রেডিও তেহরানকে দেওয়া মেজর হাফিজের বক্তব্য থেকেই প্রমাণিত। কারণ, বাকশাল গঠন করা হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি। আর হাফিজ বলছেন ১৯৭৩-৭৪ সালের কথা। সুতরাং, মেজর হাফিজ যে মিথ্যা বলেছিলেন এটা প্রমাণ করার জন্য তার বক্তব্যই কি যথেষ্ট নয়?
মিথ্যা দিয়ে সত্য ঢাকা যায় না। ইতিহাস চাপা দিয়ে রাখার জিনিস নয়। ইতিহাস একদিন না একদিন প্রকাশিত হয়ই। সুতরাং, মিথ্যা বলার আগে সাবধান !! ইতিহাস কখনো প্রতারণা করে না।
গতকাল তোফায়েল আহমেদ জিয়াউর রহমানের বাকশালে যোগ দেওয়ার আবেদনের পুরোনো কথা আবার নতুন করে মনে করিয়ে দিয়েছেন। তারপরও বিম্পির কিছু ইতিহাস না জানা আবাল বিশ্বাস করতে চায় না জিয়া বাকশালের সদস্য হতে চেয়েছিল। জিয়া শুধু বাকশালের সদস্যই হতে চায় নি, তার উদ্দেশ্য আরোও গভীরে ছিল। বাকশাল গঠন করায় বঙ্গবন্ধু সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছিল। শুধু তাই নয়, জিয়া বাকশাল সরকার কর্তৃক নিযুক্ত প্রত্যেক জেলা গভর্নরকে অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি লিখেছিল। প্রমাণস্বরূপ আমি এখানে ১৯ জুলাই, ১৯৭৫ সালে পাবনার সদ্য নিযুক্ত জেলা গভর্নর অধ্যাপক আবু সায়ীদকে লেখা জিয়ার একটি চিঠি উপস্থাপন করছি।
চিঠিতে লেখা ছিল-
//প্রিয় অধ্যাপক সায়ীদ,
পাবনা জেলার গভর্ণর নিযুক্ত হওয়ায় আমার আন্তরিক অভিনন্দন গ্রহণ করুন।
দোয়া করি যাতে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আপনার কর্মক্ষমতাকে উৎসর্গ করার জন্য আল্লাহ আপনাকে সাহস ও শক্তিদান করেন।
আন্তরিকতার সহিত
জিয়া//
এরপরেও যদি বিম্পির পোলাপাইন ম্যা ম্যা বা হাম্বা হাম্বা করতে চায় তো তাগো মুখে ছ্যাড় ছ্যাড় কইরা মুইতা দিলাম।