মুক্তি সংগ্রামের ডাকটিকিট
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৭১ সাল। বছরের শুরু থেকেই দেশের রাজনীতিসচেতন মানুষ অনুমান করছিল, কোনো অবস্থাতেই পাকিস্তানি শাসকরা নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে তারা প্রয়োজনে যুদ্ধ করবে। হত্যা করবে লাখ লাখ বাঙালিকে। ফলে বঙ্গবন্ধু সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার প্রস্তুতি নিতে বাংলার মানুষকে ডাক দেন। তার ডাকে সাড়া দেয় আপামর জনতা। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে গ্রেফতারের আগেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে গঠিত হয় বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার। এ সরকার বের করে বাংলাদেশের নামাঙ্কিত প্রথম ডাকটিকিট। ২৯ জুুলাই প্রথম ডাকটিকিটটি ছাপা হয়। পরপর ছাপা হয় আরও আটটি ডাকটিকিট। ডাকটিকিটগুলোর নকশা করেছিলেন বিমান মলি্লক নামে এক শিল্পী। লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে ডাকটিকিটগুলো ছাপানো হয়েছিল। এক সহৃদয় ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ এবং এমপি জন স্টোনহাউজ ডাকটিকিটগুলো ছাপানো এবং বিক্রির কাজে বিশেষভাবে সহায়তা করেছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই ডাকটিকিটগুলো সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বে জনমত গঠনে এগুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করে। মুক্তিযুদ্ধে বিপন্ন মানুষের সহায়তার জন্য হাসিমুখে এ ডাকটিকিট সংগ্রহ করে বিশ্ববাসী বাড়িয়ে দিয়েছে সহায়তার হাত। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ ডাকটিকিটগুলো আবার ছাপানো হয়। এগুলোই পরে হয়ে ওঠে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ডাকটিকিট। উল্লসিত মানুষ প্রিয়জনের কাছে চিঠি পাঠাতে ব্যবহার করেছে নিজের দেশের ডাকটিকিট। যুদ্ধ শুরুর পর বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ডাক ব্যবস্থা। বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এ ডাক যোগাযোগ ব্যবস্থা আবার চাঙ্গা করা হয়। ডাক যোগাযোগ সৃষ্টি করা হয় বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গেও। প্রথম ডাকটিকিটে ছাপা হয়েছিল বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ মানচিত্র। বেগুনি রঙের ওপর বাংলাদেশের মানচিত্র ছাপা হয়েছিল লাল রঙে। হায়েনার আক্রমণে যুদ্ধে বাংলাদেশ রক্তে রঞ্জিত, মানচিত্রের লাল রঙ ছিল তারই প্রতীক। পাশাপাশি লাল রঙ ছিল পরাধীনতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ডাকটিকিটের ওপর বাংলায় এবং ইংরেজিতে লেখা ছিল বাংলাদেশ। মানচিত্রের মাঝখানেও লেখা ছিল বাংলাদেশ। ডাকটিকিটটির মূল্য ছিল মাত্র দশ পয়সা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে অস্থায়ী সরকার যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ডাকটিকিট প্রকাশ করেছিলেন, তাদের সে উদ্দেশ্য সার্থক হয়েছিল।
সংগৃহীত
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
লিখেছেন
ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।...
...বাকিটুকু পড়ুন
মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন...
...বাকিটুকু পড়ুনবড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল...
...বাকিটুকু পড়ুন

জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি...
...বাকিটুকু পড়ুন