দেখেন কি অবস্থা....নারীরা কি অবহেলিতই থাকবে ?
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে: সাহিদা বেগম। আওয়ামী লীগের জানবাজ কর্মী। দিন আনেন দিন খান। তিনি বস্তিতে থাকেন। লেখাপড়া জানেন না। তবে সততা ও সাহসিকতার কারণে এলাকায় খুবই জনপ্রিয় তিনি। এটিকে কাজে লাগিয়ে পরপর দুটি নির্বাচনে ২নং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। কিন্তু তার পরও এবার আওয়ামী লীগের সমর্থন পেলেন না সাহিদা বেগম। তার দলীয় সমর্থন না পাওয়ার পেছনে রয়েছে সদ্য পদত্যাগী মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেকের হাত; আর এমনটাই অভিযোগ করলেন সাহিদা বেগম। তিনি একমাত্র কাউন্সিলর যিনি তালুকদার খালেকের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন। গত বছর ১৬ই ফেব্রুয়ারি সাহিদা বেগম তার বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিতভাবে নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন। এ প্রতিবাদই ছিল সাহিদার জন্য কাল। আর এ কারণে তিনি আওয়ামী লীগের সমর্থন পাননি বলে সাহিদা বেগম মনে করেন।
গত নির্বাচনে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর চেয়ে ৩ হাজার ২শ’ ভোট বেশি পেয়ে সংরক্ষিত-২ আসনের মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। বড় অভিমানী কাউন্সিলর সাহিদা বেগম গত বছরের ৭ই ফেব্রুয়ারি নগর ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কর্তব্যরত পুলিশ ও কিছু মানুষ তাকে জাপটে ধরে উদ্ধার করেন। কি কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন? কি ঘটেছিল সেদিন নগর ভবনে- এ প্রশ্নের জবাব এত দিন তিনি বুকের ভেতরে রেখেছিলেন। ভেবেছিলেন, নগরপিতা হয়তো সুষ্ঠু বিচার করবেন। বিচার না পেয়ে অবশেষে মুখ খুলেছিলেন কাউন্সিলর সাহিদা বেগম। সাহিদা বেগম বলেন, তার নির্বাচিত এলাকায় তুহিন নামে এক গরিব ছেলে কেসিসিতে মাস্টাররোলে চাকরি করে। তাকে স্থায়ী করার জন্য এপিএস গোপাল কুমার সাহাকে অনুরোধ করলে সে ২ লাখ টাকা দাবি করে। আমি ২ লাখ টাকা গত বছর ৫ই ফেব্রুয়ারি গোপালকে দিই। ৭ই ফেব্রুয়ারি নিয়োগে তুহিনের স্থায়ীকরণ না হওয়ায় গোপালের কাছে টাকা ফেরত চাইলে সে দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। তখন ধমক দিয়ে টাকা ফেরত চাইলে সে আমাকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করে। তখন আমি রাগ-ক্ষোভ সহ্য করতে না পেরে নগর ভবনের তিনতলা থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করি। তখন আশপাশের লোকজন এবং পুলিশ জাপটে ধরে আমাকে রক্ষা করেন।
সাহিদা আরও বলেন, মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের নেতৃত্বে কেসিসিতে দুর্র্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অন্যায়, অত্যাচার, স্টিম রোলার চালিয়ে কেসিসিকে দেউলিয়া প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। এপিএস গোপাল কুমার সাহা, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ, সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ হোসেনের মাধ্যমে সব বিভাগে থেকে টাকা তুলে পকেটস্থ করেন মেয়র। যানবাহন শাখায় কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়। বছরে কতবার যে গাড়ির বিভিন্ন পার্টস পাল্টানো হয় তা ফাইল তদন্ত করলে ধরা পড়বে। কেসিসি’র যানবাহন ঢাকায় মেরামত দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে। পেট্রল, অকটেন ও ডিজেলের হিসাব দেখলে দুর্নীতি বেরিয়ে আসবে। মেয়র প্রতিদিন সকালে কেসিসিতে হাজিরা দিয়ে রামপাল-মংলায় চলে যান এবং রাতে ফেরেন। তার এ যাতায়াতের জ্বালানি তেল কেসিসি’র কাঁধের ওপর দেয়া হয়। ট্যাক্স অ্যাসেসম্যান্টে ব্যাপক দুর্নীতি হয়। যার অর্থ গোপাল তুলে এনে মেয়রকে দেন। এ শাখায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু আজও সেই তদন্ত রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি। মেয়রের নির্দেশেই তদন্ত রিপোর্ট চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে। কাউন্সিলর সাহিদা বেগম আরও বলেন, সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ হোসেনের ২০ থেকে ২৫টি বেনামীয় ঠিকাদারি ফার্ম রয়েছে। গত বছর ৭ই ফেব্রুয়ারি ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকার কাজের সিডিউল কম বিক্রি হয়। মেয়রের নির্দেশে কম সিডিউল বিক্রি করে সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ হোসেনের বেনামি ফার্ম আজাদ ইঞ্জিনিয়ারিংকে পাইয়ে দিতে সহায়তা করেন।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, মেয়র তাদের সঙ্গে কুকুরের মতো আচরণ করেন। তার কাছে গিয়ে কোন কথা বলা যায় না। তিনি একটি বিশেষ গালি ব্যবহার করেন। আমরা এতিমের মতো তার দরজায় দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে আসি।
ওই সময় তালুকদার আবদুল খালেক কাউন্সিলর সাহিদার এ বক্তব্যের কোন প্রতিবাদ পাঠাননি বা কোন মন্তব্যও করেননি। বরং ওইসব কর্মকর্তা এখনও করপোরেশন দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
গতকাল সাহিদা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভাই আমার কপালটাই খারাপ। আমার দোষ, আমি মুখের ওপর সত্য কথা বলি।’ সংবাদ সম্মেলনে তার বিরুদ্ধে বলার কারণে আমি সমর্থন পাইনি। তিনি আমাকে সমর্থন না দিলেও আমার জনপ্রিয়তার ভাটা পড়েনি। দেখবেন আল্লাহ’র রহমতে এবারও আমি জিতবো।
এদিকে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের এক দায়িত্বশীল প্রভাবশালী নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তার (সাহিদার) অভিযোগ মিথ্যা নয়। অভিযোগের অনেকটাই সত্যতা রয়েছে, যা এখন পত্রপত্রিকায় প্রকাশ পাচ্ছে।
সূত্র
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি
মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন
=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=
০১।
=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।
পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।
জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সমস্যা মিয়ার সমস্যা
সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।
তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন