somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পার্বত্য চট্টগ্রাম কি বাংলাদেশ নয়, বাঙালীরা কি মানুষ নন- ১

২৯ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেহেদী হাসান পলাশ

সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় ‘সার্বভৌমত্ব বিরোধী’ পার্বত্য চুক্তি করে আওয়ামী লীগ সরকার পার্বত্য বাঙালীর মনে যে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছিল ‘আদিবাসী’ বিষয়ে সরকারের কঠোর ও সঠিক অবস্থান সেই ক্ষতে প্রলেপ লাগিয়েছিল অনেকখানি। কিন্তু গত ৩ জুন হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগ সরকার জেএসএস নেতা সন্তু লারমার দাবী পার্বত্য ভ’মি কমিশনের সংশোধনী প্রস্তাব পাশ করে ক্ষতটি খুচিয়ে আবার রক্তাক্ত করে দিল। ফলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের অর্ধেক জনগোষ্ঠী বাঙালীরা। ইতোমধ্যে তারা ৫ দিন নজিরবিহীন সফল হরতাল পালন করছে। সামনে আরো কঠিন কর্মসূচী আসছে।

এদিকে বাঙালীদের এই কর্মসূচীর বিরুদ্ধে প্রথমে চুপচাপ থাকলেও ধীরে ধীরে মাঠে নামতে শুরু করেছে পাহাড়ী বিভিন্ন সংগঠন। ফলে আগামী দিনে ভয়াবহ জাতিগত দাঙ্গা ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের দিকে পরিস্থিতি ধাবিত হচ্ছে এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়।
প্রশ্ন হচ্ছে, ক্ষমতার শেষ দিকে এসে হঠাৎ করে সরকার কেন এই ধরনের একটি বিতর্কিত ও সংবেদনশীল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিল? পাহাড় সংশ্লিষ্টদের ধারণা, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে ও এর আওতায় ভূমি কমিশন আইন সংশোধনী অনুমোদন বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে সক্রিয় বিভিন্ন পাশ্চাত্যের দেশ, দাতা সংস্থা ও খ্রিস্টান মিশনারীদের প্রবল চাপ ছিল। ড. ইউনূস, পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে কোণঠাসা সরকার পাশ্চাত্যে তার আন্তর্জাতিক ভাবমর্যাদা উদ্ধার করতেই ক্ষমতার শেষদিকে এসে এ ধরণের একটি সংবেদনশীল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমার মধ্যে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঐতিহাসিক পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তি স্বাক্ষরের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চুক্তির ঘ খণ্ডের ৪ নং ধারায় প্রত্যাবাসিত উপজাতীয়দের পুনর্বাসনের সহায়তায় তাদের ভূমির মালিকানা ফিরিয়ে দিতে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি ভূমি কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয় এবং ২ নং ধারায় ‘যথাশীঘ্র সম্ভব ভূমি জরীপ কাজ শুরু’ করার কথা বলা হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় এই চুক্তি ও আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাপাঠ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আলোচনার সুবিধার্থে এই আইনের সংশ্লিষ্ট কয়েকটি ধারা উল্লেখ করা হলো:
শান্তিচুক্তির ঘ খণ্ডের ৪ নং ধারায় বলা হয়েছে,
‘জায়গা-জমি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তিকল্পে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিশন(ল্যান্ডকমিশন) গঠিত হইবে। পুনর্বাসিত শরণার্থীদের জমি জমা বিষয়ক বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তি করা ছাড়াও এ যাবত যেইসব জায়গা জমি ও পাহাড় অবৈধভাবে বন্দোবস্ত ও বেদখল হইয়াছে সেই সমস্ত জমি ও পাহাড়ের মালিকানা স্বত্ব বাতিলকরণের পূর্ণ ক্ষমতা এই কমিশনের থাকিবে। এই কমিশনের রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আপীল চলিবে না এবং এই কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া বিবেচিত হইবে। ফ্রীঞ্জল্যান্ডের(জলে ভাসা জমি) ক্ষেত্রে ইহা প্রযোজ্য হইবে।’
৬(খ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কমিশন পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন, রীতি ও পদ্ধতি অনুযায়ী বিরোধ নিষ্পত্তি করিবেন।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভূমির বৈশিষ্ট বিবেচনায় ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির আগে ভূমি জরীপ সম্পন্ন হওয়া জরুরী ছিল। ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে একাধিকবার এ বিষয়ে সরকারকে তাগিদ দেয়া হয়েছিল। তাদের যুক্তি ছিল আগে ভূমি জরীপ করে ভূমির সীমানা ও মালিকানা নির্ধারণ করার পর বিরোধিত জমির সিদ্ধান্ত ভূমি কমিশনের কাছে হস্তান্তর করা হোক। কিন্তু উপজাতীয় সংগঠনগুলোর প্রবল বিরোধিতার কারণে ভূমি জরীপ নিষ্পন্ন করা যায়নি। এভাবে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলে সরকার বিভিন্ন পক্ষের চাপের মুখে ভূমি জরীপ ছাড়াই ২০০১ সালের ১৭ জুলাই ভূমি কমিশন আইন পাস করে। এরপরও ভূমি জরীপ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে কিন্তু নিরাপত্তার কারণে বা অজুহাতে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
বিস্তারিত দেখুন: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৪০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×