somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাঙালিরা চাকমাদের প্রতি ভয়ার্ত দৃষ্টিভঙ্গী পোষণ করে’

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
[img|http://cms.somewhereinblog.net/ciu/image/150390/small/?token_id=e3d827d0ecd74c891b260806208bc7c0

২০০৩ সাল। সবে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে একটি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছি। প্রথম দিন স্কুলে যাবো, মনে মনে খুব শিহরিত। নতুন প্রাঙ্গন, নতুন সহপাঠি, নতুন শিক্ষক- স্বভাবতই কচি মনে একটু উত্তেজনা বোধ হচ্ছিল। আম্মু এসে নতুন ড্রেস পরিয়ে, পরিপাটি করে সাজিয়ে স্কুলের জন্য তৈরী করে দিলেন। আব্বু এসে গাড়িতে উঠিয়ে দেয়ার আগে অদ্ভুদ কিছু কথা বললেন, যেগুলো আমার ছোট্ট মনটাতে একটা দাগ ফেলে দিয়েছিল। আব্বু বললেন, 'স্কুলে মন দিয়ে লেখাপড়া করবে। স্যারদের কথা মনযোগ দিয়ে শুনবে। একদম দুষ্টুমি করবে না।' এতটুকু পর্যন্ত ঠিক ছিল। এরপরই আব্বু সাবধান করার ভঙ্গীতে বলতে লাগলেন,"আর চাকমা ছেলেদের সাথে বেশি কথা বলো না। ওদের সাথে কখনই লাগতে যেও না। কিছু বললে চুপ করে শুনে থাকবে, পাল্টা কিছু বলার দরকার নেই। এমনকি, স্যারকেও কিছু বলবে না।"

অনেক অবাক হয়ে বলেছিলাম,"কেন বাবা?" আব্বু করুণ মুখে বলেছিলেন,"নয়তো, ওরা তোমাকে একা পেয়ে মারবে বাবা।" একথা বলেই আব্বু বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলেন আমাকে। আমাকে ধরে মারবে আর আমি স্যারকেও বলতে পারবো না- এ আমি মানতে পারছিলাম না। তবু অনেক ভয়ও পেয়েছিলাম। পরে বুঝতে পেরেছিলাম আব্বু নিজের ছেলেকে রক্ষা করতেই এরকম কাপুরুষোচিত আচরণ করতে বলেছিলেন। আমি নিশ্চিত, আমাদের প্রত্যেকটি বাঙালি সহপাঠিকে তাদের পিতা-মাতা একই উপদেশ দিয়েছিলেন এবং আজও দিয়ে যাচ্ছেন। এই ঘটনাটিই আসলে পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি বিশেষ করে চাকমাদের প্রতি বাঙালিদের মনোভাব নির্দেশ করে। যদিও জানি সব চাকমাই এমন নয়। কিন্তু কিছু লোকের কারণে ভয়ে এমন ধারণা করতে বাধ্য হয়।

একটা ভয়ার্ত মন নিয়েই ক্লাস করতাম। একবার স্কুলে একটি খেলনা নিয়ে গিয়েছিলাম, লুকিয়েই রেখেছিলাম। কিন্তু কিভাবে যেন এক চাকমা ছেলে সেটা দেখে ফেলে, সে লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল ওটার দিকে। কিছুক্ষণ পর, ছেলেটি আমার কাছে এসে খেলনাটি চাইল। কিছু না বলেই দিয়ে দিলাম। কোনোভাবে উচ্চারণ করলাম, কেন? ছেলেটি বললো, এটা স্যারের কাছে দিয়ে দেব। আমি পুরো ক্লাসে করুণভাবে তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। নাহ, ছেলেটি স্যারকে সেই খেলনাটি দেয়নি। দুইদিন পর দেখি, সেই ছেলেটিই আমার খেলনা স্কুলে এনে খেলছে। আমার দিকে চোখ পড়তেই সে খেলনাটি লুকিয়ে ফেলল। সেদিন ছেলেটিকে কিছুই বলতে পারিনি। প্রতিবাদ করতে পারিনি, সাহস করে জোর গলায় দাবি করতে পারিনি, এমনকি স্যারের কাছেও যাইনি। শুধু ছোট্ট মনটা ভেঙ্গে গিয়েছিল, ফুঁফিয়ে কেঁদেছিলাম।
বিস্তারিত দেখুন- Click This Link

২০০৩ সাল। সবে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে একটি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছি। প্রথম দিন স্কুলে যাবো, মনে মনে খুব শিহরিত। নতুন প্রাঙ্গন, নতুন সহপাঠি, নতুন শিক্ষক- স্বভাবতই কচি মনে একটু উত্তেজনা বোধ হচ্ছিল। আম্মু এসে নতুন ড্রেস পরিয়ে, পরিপাটি করে সাজিয়ে স্কুলের জন্য তৈরী করে দিলেন। আব্বু এসে গাড়িতে উঠিয়ে দেয়ার আগে অদ্ভুদ কিছু কথা বললেন, যেগুলো আমার ছোট্ট মনটাতে একটা দাগ ফেলে দিয়েছিল। আব্বু বললেন, 'স্কুলে মন দিয়ে লেখাপড়া করবে। স্যারদের কথা মনযোগ দিয়ে শুনবে। একদম দুষ্টুমি করবে না।' এতটুকু পর্যন্ত ঠিক ছিল। এরপরই আব্বু সাবধান করার ভঙ্গীতে বলতে লাগলেন,"আর চাকমা ছেলেদের সাথে বেশি কথা বলো না। ওদের সাথে কখনই লাগতে যেও না। কিছু বললে চুপ করে শুনে থাকবে, পাল্টা কিছু বলার দরকার নেই। এমনকি, স্যারকেও কিছু বলবে না।"

অনেক অবাক হয়ে বলেছিলাম,"কেন বাবা?" আব্বু করুণ মুখে বলেছিলেন,"নয়তো, ওরা তোমাকে একা পেয়ে মারবে বাবা।" একথা বলেই আব্বু বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলেন আমাকে। আমাকে ধরে মারবে আর আমি স্যারকেও বলতে পারবো না- এ আমি মানতে পারছিলাম না। তবু অনেক ভয়ও পেয়েছিলাম। পরে বুঝতে পেরেছিলাম আব্বু নিজের ছেলেকে রক্ষা করতেই এরকম কাপুরুষোচিত আচরণ করতে বলেছিলেন। আমি নিশ্চিত, আমাদের প্রত্যেকটি বাঙালি সহপাঠিকে তাদের পিতা-মাতা একই উপদেশ দিয়েছিলেন এবং আজও দিয়ে যাচ্ছেন। এই ঘটনাটিই আসলে পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি বিশেষ করে চাকমাদের প্রতি বাঙালিদের মনোভাব নির্দেশ করে। যদিও জানি সব চাকমাই এমন নয়। কিন্তু কিছু লোকের কারণে ভয়ে এমন ধারণা করতে বাধ্য হয়।

একটা ভয়ার্ত মন নিয়েই ক্লাস করতাম। একবার স্কুলে একটি খেলনা নিয়ে গিয়েছিলাম, লুকিয়েই রেখেছিলাম। কিন্তু কিভাবে যেন এক চাকমা ছেলে সেটা দেখে ফেলে, সে লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল ওটার দিকে। কিছুক্ষণ পর, ছেলেটি আমার কাছে এসে খেলনাটি চাইল। কিছু না বলেই দিয়ে দিলাম। কোনোভাবে উচ্চারণ করলাম, কেন? ছেলেটি বললো, এটা স্যারের কাছে দিয়ে দেব। আমি পুরো ক্লাসে করুণভাবে তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। নাহ, ছেলেটি স্যারকে সেই খেলনাটি দেয়নি। দুইদিন পর দেখি, সেই ছেলেটিই আমার খেলনা স্কুলে এনে খেলছে। আমার দিকে চোখ পড়তেই সে খেলনাটি লুকিয়ে ফেলল। সেদিন ছেলেটিকে কিছুই বলতে পারিনি। প্রতিবাদ করতে পারিনি, সাহস করে জোর গলায় দাবি করতে পারিনি, এমনকি স্যারের কাছেও যাইনি। শুধু ছোট্ট মনটা ভেঙ্গে গিয়েছিল, ফুঁফিয়ে কেঁদেছিলাম।
বিস্তারিত দেখুন- Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৫
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×