somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মার্স ওয়ান: না ফেরার দেশে যাওয়ার গল্প।

৩০ শে জুন, ২০১৪ রাত ১১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষ কি না বিজয় করেছে? মানুষের জিজ্ঞাসু দৃষ্টির-সীমা দূর থেকে বহুদূর দিয়েছে পাড়ি। উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু, এক মহাসাগর থেকে আরেক মহাসাগর, দূর্গম এভারেস্ট কিংবা আমাজান সবখানেই পৌঁছে গেছে মানুষ। কিন্তু মঙ্গলে পা রাখা হয়নি আজও। এবার সেই মঙ্গলে কেবল পা রাখাই নয়, স্থায়ী বসতি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে নেদারল্যান্ডের একটি অলাভজনক সংস্থা।
প্রকল্পটির নাম দেয়া হয়েছে মার্স ওয়ান, সংস্থাটির নামও মার্স ওয়ান। মঙ্গলযাত্রায় একমুখী টিকেট এটি। বর্তমান প্রযুক্তিতে মঙ্গল থেকে রকেট উৎক্ষেপণের সুযোগ নেই। তাই যারা যাবেন তাদের সেখানাই থেকে যেতে হবে। পৃথিবীতে যেন মৃত্যু ঘটবে তাদের। হয়ত পথিকৃতের ভুমিকার কারণে একদিন মঙ্গলের বুকে তাদের ভাস্কর্য তৈরি হবে।


মার্কিন জ্যোতির্বিদ কার্ল সাগান স্বপ্ন দেখেছিলেন মঙ্গলে একদিন মানুষ উপনিবেশ বা স্থায়ী বসতি স্থাপন করবে। তার সে স্বপ্ন যেন পূরণ হতে চলেছে ‘মার্স ওয়ান’ প্রকল্পের মাধ্যমে। মঙ্গলে একমুখী যাত্রা এবং টেলিভিশন রিয়েলিটি শো’র ধারণাটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০১০ সালে একটি মহাকাশ ম্যাগাজিনের মাধ্যমে। ২০১২ সালে ‘মার্স ওয়ান’ তাদের পরিকল্পনা প্রকাশ করে।
শুরুতে পরিকল্পনা ছিল ২০২৩ সালে মঙ্গলে মানববসতি স্থাপন করা হবে। পরে সেটা পিছিয়ে ২০২৫ করা হয়েছে। ২০২৪ সালে দু’জন পুরুষ ও দু’জন নারী নিয়ে চারজনের দলটি পৃথিবী ছেড়ে যাবে আর পৌঁছুবে ২০২৫ সালে।
শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ আর পদার্থবিজ্ঞানীরা রয়েছেন এ প্রকল্পের নেতৃত্বে, যাদের মধ্যে সাবেক নাসা কর্মীও রয়েছেন। পরিকল্পনা প্রণয়নে দীর্ঘ এক দশক সময় নিয়েছেন তারা। এখন পর্যন্ত যে প্রযুক্তি মানুষের হাতে রয়েছে তা ব্যবহার করেই যে মঙ্গলে বসতি স্থাপন করা যায় সেটা বোঝানোটাও সহজ কাজ ছিল না। আর্থিক দিকটি ছিল আরেক চ্যালেঞ্জ।



মঙ্গলের বৈশিষ্ট্য

পৃথিবীর নিকটতম গ্রহ মঙ্গলের ব্যাস পৃথিবীর ব্যাসের প্রায় অর্ধেক, ঘনত্বও কম। মঙ্গলের আয়তন পৃথিবীর ১৫%, ঘনত্ব ১১% এবং আকর্ষণ বল ৩৮%। আয়রন অক্সাইডের আধিক্যের কারণে এর পৃষ্ঠের বর্ণ অনেকটা লালচে। আকর্ষণ বল কম হওয়ার কারণে বায়ুমন্ডল অত্যন্ত পাতলা, নেই বললেই চলে। মঙ্গলে পৃথিবীর মত চৌম্বকক্ষেত্র নেই। সূর্য এবং অন্যান্য ঊৎস থেকে আসা মহাজাগতিক রশ্নি বা কসমিক রে সরাসরি মঙ্গল পৃষ্ঠে আঘাত করে।
সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে মঙ্গলের লাগে ৬৮৭ দিন। আর পৃথিবীর ২৪ ঘন্টা ৩৯ মিনিটে মঙ্গলের একদিন।

মঙ্গলে না যাওয়ার পক্ষে যেসব যুক্তি

মঙ্গলে গেলে আর ফেরা যাবে না এই সত্যটি ছাড়া আরও কিছু যুক্তি দেয়া যায় যে কারণে মঙ্গলে অনেকেই যেতে চাইবেন না

• মার্স ওয়ানের উদ্যোক্তারাও মানছেন অভিযানটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সামান্যতম ভুল, কারিগরি ত্রুটি বা অপ্রত্যাশিত কোন পরিস্থিতি মিশনটিকে ব্যর্থ করে দিতে পারে যেখান থেকে ফেরার কোন পথ নেই, মৃত্যু অনিবার্য।
• নির্বাচিত হওয়ার পর আট বছর ধরে নিবিড় প্রশিক্ষণ নিতে হবে। এর মধ্যে বড় একটা সময় কাটাতে হবে কৃত্রিমভাবে তৈরি প্রতিকূল পরিবেশে, বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবেন প্রশিক্ষণার্থীরা।
• পরিচিতজনদের ছেড়ে সম্পূর্ণ নতুন কিছু মানুষের সাথে দশকের পর দশক কাটিয়ে দিতে হবে। তখন তারাই হবে পরিবারের সদস্য, বন্ধু, শত্রু এবং সহকর্মী।
• অন্তর্মুখীদের জন্য অস্বস্তির খবর হচ্ছে ব্যক্তিগত জীবন বলে কিছু থাকছে না। প্রতিটি ঘটনা সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘন্টা পৃথিবীতে প্রচারিত হবে। অভিযাত্রীরা সেলিব্রেটিতে পরিণত হবেন ঠিকই, কিন্তু সেলিব্রেটিসুলভ সৌভাগ্যময় জীবন তাদের হবে না।
• ৫০ বর্গমিটারের একটি কোয়ার্টার পাবেন প্রত্যেকে, যা একটি হোটেল কক্ষের চেয়ে সামান্য কিছুটা বড়।
• রকেটের মধ্যে অত্যন্ত সীমিত পরিসরে প্রায় আটটি মাস কাটাতে হবে চার অভিযাত্রীকে। আর সৌর ঝড়ের মত কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হলে আরও সীমিত পরিসরে কাটাতে হবে তাদের।
• মঙ্গলের আকর্ষণ বল পৃথিবীর তুলনায় বেশ কম, কোন সময় মঙ্গল থেকে ফিরলে মানুষ পৃথিবীর আকর্ষণ বলের সাথে মানিয়ে নিতে পারবে কিনা সেটা নিয়েও সংশয় রয়েছে।

তবু যাবেন তারা

মঙ্গলে না যাওয়ার যুক্তি আছে অনেক কিন্তু এসব যুক্তি দমাতে পারেনি আগ্রহীদের। ১৪০টি দেশ থেকে দুই লাখের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। তারা বলছেন মানুষ প্রথমবারের মত মঙ্গলে উপনিবেশ স্থাপন করতে চলেছে এমন একটি প্রকল্পে অংশ নিতে পারাটাই সৌভাগ্য। যেখানে কখনো মানুষের পা পড়ে নি সেখানে অনুসন্ধানী অভিযান চালানোর লোভ তারা সামলাতে পারছেন না। তাদের মতে মানবজাতির ভবিষ্যৎ মঙ্গলেই নিহিত আছে। মঙ্গলে গেলে আর ফেরা যাবে না। সেখানে যাওয়ার আগে পরিবার পরিজন, বন্ধু বান্ধব সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যেতে হবে ঠিকই কিন্তু সেখানে অভিযাত্রীরা একা থাকবেন না। নতুন লোকেদের সাথে পরিচিত হয়ে সবকিছু নতুন করে শুরু করতে হবে। এটি কঠিন কোন বাস্তবতা নয় আগ্রহীদের কাছে। পৃথিবীর সীমানা পেরিয়ে আকাশের তারা ছুঁয়ে দেখার স্বপ্ন পূরণ করতে চান তারা।



বসতি স্থাপনকারীদের দলটি যাওয়ার আগে আরও ছয়টি মিশন মঙ্গলে যাবে মানববসতির অবকাঠামো তৈরির উদ্দেশ্যে। সারিবদ্ধ অবতরণযানের মত করে সেগুলো তৈরি করা হবে। বাতাসভর্তি এই আবাসস্থলেই মানুষ থাকবে। আর তেজস্ক্রিয়তার কারণে মঙ্গল পৃষ্ঠে হাঁটাহাঁটি করতে হবে বিশেষ ধরনের স্পেসস্যুট পরে। প্রথম চার নভোচারীর জন্য খাবার, ওষুধ যোগাযোগ করার যন্ত্রপাতি ইত্যাদি পাঠানো হবে। দুই থেকে তিনটি কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপন করা হবে যোগাযোগের জন্য। লাইভ ফিডের সাহায্যে পৃথিবীর সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকবে। প্রতি দু’বছর অন্তর অন্তর সেখানে নতুন দল যোগ দেবে। এক পর্যায়ে মঙ্গলের বুকে ছোট একটি গ্রাম তৈরি হবে।

মঙ্গলে বাংলাদেশী

সারা পৃথিবী থেকে আবেদনকারীদের মধ্য থেকে দ্বিতীয় পার্যায়ের জন্য নির্বাচিত হয়েছে ৫৮ জন যাদের মধ্যে বাংলাদেশী লুলু ফেরদৌসও আছেন। আকাশে ওড়ার শখ থেকে ২০০০ সালে লুলু ফেরদৌস চেষ্টা করেছিলেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর জিডি পাইলট হওয়ার। কিন্তু সে সময় বিমানবাহিনীতে নারী পাইলট নেয়া হত না।
লুলু ফেরদৌসের জন্ম ঢাকায়। ২০০৬ সালে পড়াশোনার জন্য বাংলাদেশ থেকে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে যাওয়ার আগে ঢাকার কিছু বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। একটি বেসরকারী স্কুলের প্রিন্সিপালও ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার সময় একটি বিমানবন্দরে অপারেশনস ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করেন। এছাড়া ইন্টার্নশীপ করেছেন জেনারেল ইলেকট্রনিক ক্যাপিটাল এভিয়েশন সার্ভিসে। ডিগ্রি নিয়ে নাসা নেব্রাস্কোতে কাজ শুরু করেন। তার কাজ ছিল এক্সপেরিমেন্টাল প্রোগ্রাম টু স্টিমুলেট কমপিটিটিভ রিসার্চ বিভাগে।
উইমেন ইন এভিয়েশন ইউএনও চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট ছিলেন চার বছর। ছাত্রী অবস্থাতেই বেশ কিছু উড্ডয়ন সংস্থার সদস্য ছিলেন, যার মধ্যে আছে

• কলেজিয়েট এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি প্রফেশনালস,
• আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব এয়ারপোর্ট এক্সিকিউটিভস,
• অর্গানাইজেশন অব উইম্যান পাইলটস,
• নেব্রাস্কা বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন

লুলু ফেরদৌসের মা অধ্যাপক এবং বাবা অবসরপ্রাপ্ত ভূ-তত্ত্ববিদ। মঙ্গলযাত্রায় নাম লেখানোর কথা শুনে লুলু ফেরদৌসের বাবা-মা কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিলেন। তবে লুলু ফেরদৌসের বিশ্বাস তারা শেষ পর্যন্ত খুশিই হবেন। তার মতে বাংলাদেশের মানুষ যেমন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে বেঁচে আছে এবং এগিয়ে যাচ্ছে তেমনি মঙ্গলযাত্রাও হবে প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে এক লড়াই।

সাধারণ মানুষের জন্য নভোচারী হওয়ার সুযোগ মার্স ওয়ান

জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে সব মানুষই নভোচারী হওয়ার স্বপ্ন দেখে। সেই স্বপ্ন পূরণের সুযোগ এনে দেয় ‘মার্স ওয়ান’।
২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ইন্টারনেটের মাধ্যমে আবেদনপত্র জমা নেয়া হয়। ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী যেকোন দেশের মানুষই আবেদনের সুযোগ পেয়েছেন। নিরোগ দেহ, সুস্থির মানসিকতা এবং দলগতভাবে কাজ করার মনোভাবই ছিল আবেদনের যোগ্যতা। দুই লাখের বেশি আবেদনপত্র বাছাই করে ৫৮ জনকে নির্বাচিত করা হয়।

পৃথিবীর চিরচেনা রূপ থাকবে না

আমের মুকুলের ঘ্রাণ, কৃষ্ণচূড়ার চাল রং, চুলে বাতাসের খেলা, বৈশাখী ঝড়, তুষারের ওপর হাঁটার শব্দ, পাখির ডাক, পাহাড়, সাগর, নদী ইত্যাদি যাদের আপ্লুত করে তাদের জন্য মঙ্গল অভিযান নয়। জনমানবহীন, রুক্ষ ও শুষ্ক প্রতিকূল এক পরিবেশে দিন কাটাতে হবে মঙ্গলবাসীদের।



মার্স ওয়ানের পরিকল্পনা

২০১৫ সাল, ২০১৫ সালের জুলাই মাস নাগাদ চারজনের ছয়টি দল, অর্থাৎ মোট ২৪ জনের বাছাই সম্পন্ন হবে বলে আশা করছে মার্স ওয়ান। বাছাইপর্ব শেষে কৃত্রিমভাবে তৈরি মঙ্গল গ্রহের পরিবেশে শুরু হবে তাঁদের প্রশিক্ষণ। চলবে একটানা সাত বছর।

২০১৬ সাল, মঙ্গল গ্রহে পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য স্যাটেলাইট স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি, মঙ্গলে পৌঁছে যাবে অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম।
২০১৮ সাল, মঙ্গলে পাঠানো হবে কিছু রোভার। রোবটিক হাতবিশিষ্ট এই স্বয়ংক্রিয় গাড়ি মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসবাসযোগ্য জায়গা খুঁজে বের করবে।
২০২০ সাল, জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামসহ (লাইফ সাপোর্ট ইউনিট), মানুষের বাসস্থান তৈরির কাজ শুরু করবে রোভার।
২০২৪ সাল, বছরের শেষ দিকে যাত্রা শুরু হবে চার অভিযাত্রীর। পৃথিবী থেকে মঙ্গলে পৌঁছাতে তাঁদের সময় লাগবে প্রায় আট মাস।



টেলিভিশন রিয়েলিটি শো

মঙ্গল মিশন হলেও এটি একই সাথে টেলিভিশন রিয়েলিটি শো। মঙ্গল অভিযানের প্রস্তুতি, মঙ্গলযাত্রা এবং মঙ্গলে অভিযাত্রীদের কর্মযজ্ঞ সবই টেলিভিশন রিয়েলিটি শো’র জন্য ধারণ করে প্রচার করা হবে। আর এভাবে অভিযানের খরচ উঠে আসবে বসে আশা করছেন উদ্যোক্তারা।
টেলিভিশন রিয়েলিটি শো 'বিগ ব্রাদার' এর সহ প্রতিষ্ঠাতা পল রমারও জড়িত আছেন এ প্রকল্পে। সরাসরি অনুদান নিলেও প্রধানত রিয়েলিটি শো'র মাধ্যমেই ছয় বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে। 'বিগ ব্রাদার' ধাঁচের এই রিয়েলিটি শো শুরু হবে প্রস্তুতির পর্যায় থেকেই। চূড়ান্তভাবে অংশগ্রহণকারী নির্বাচন, অংশগ্রহণকারী বাদ পড়া, নতুন অংশগ্রহণকারী যোগ দেয়া প্রতিটি ক্ষেত্রে দর্শক ভোটের ব্যবস্থা থাকবে, দর্শকরাও নির্ধারণ করবেন কাদের তারা মঙ্গলে পাঠাতে চান।
১ম পর্যায়ের বাছাই শেষে টিকেছেন ১০৭ টি দেশের আবেদনকারী যাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আবেদনকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। শতকরা ৪৫ ভাগ হচ্ছেন নারী আবেদনকারী। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এসব্ মানুষের মধ্যে বোঝাপড়াটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে রিয়েলিটি শোতে এবং পরবর্তীতে মঙ্গলে বসবাসের ক্ষেত্রে।

মার্স ওয়ান বিতর্ক

নভোচারী বাজ অলড্রিন এক সাক্ষাতকারে বলেন, ২০৩৫ সাল নাগাদ মঙ্গলে মানববসতি দেখতে পেলে তিনি খুশিই হবেন। কিন্তু তার মনে হয় না ‘মার্স ওয়ান’ সর্বপ্রথম এ লক্ষ্যটি অর্জন করতে চলেছে।
কারিগরি এবং আর্থিক বিবেচনায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নযোগ্য কিনা তা নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যাদের কোন মহাকাশযান নেই, রকেট উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা নেই তারা মঙ্গলে মানুষ পাঠাবে এটি অনেকই বিশ্বাস করছেন না। বরং চাঁদে জমি বিক্রির মতই ভাওতাবাজি মনে করছেন তারা।
আবার অনেকে বলছেন, টেলিভিশন রিয়েলিটি শো’র গতি প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা করা কঠিন। দর্শক কমে গেলে আয় কমে যাবে আর তখন মঙ্গল অভিযানেও তার প্রভাব পড়বে।
এছাড়া একটি নৈতিক প্রশ্নও আছে। জার্মান নভোচারী ওয়াল্টার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, বর্তমান ব্যবস্থায় মঙ্গলে জীবিত পৌঁছানোর সম্ভাবনা মাত্র ত্রিশ ভাগ। আর মঙ্গলে পৌঁছাতে পারলে সেখানে তিন মাসের বেশি বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বিশ ভাগেরও কম। মানুষের জীবনের কোন মূল্য তাদের কাছে নেই। তারা কেবল টেলিভিশন রিয়েলিটি শো’র মাধ্যমে টাকা কামাতে চায়। তিনি বলেন যদি তার করের টাকায় এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হত তবে তিনি অবশ্যই এসবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ আয়োজনের উদ্যোগ নিতেন।

অভিযাত্রীদের প্রশিক্ষণ

২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চলবে প্রশিক্ষণ। মঙ্গলের মত প্রতিকূল পরিবেশে দীর্ঘ সময় টিকে থাকা, তারা যেখানে থাকবেন সেখানকার যন্ত্রপাতি ও চলাফেরার বাহন বা রোভার মেরামত করা, মঙ্গলে নিজেদের খাবার উৎপাদন করা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে প্রশিক্ষণসূচিতে। ধীরে ধীরে কঠিনতর পরিস্থিতে নেয়া হবে তাদের।
চারজনের দলে দুই জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে যাতে তারা সব ধরনের যন্ত্রপাতি মেরামত এবং কারিগরি সমস্যার সমাধান করতে পারেন।
দুই জনকে বেশ বিস্তৃতভাবে ডাক্তারিবিদ্যার প্রশিক্ষণ দেয়া হবে যাতে তারা সাধারণ বা গুরুতর ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেবার পাশাপাশি তাদের সাথে থাকা চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারেন।
একজনের প্রশিক্ষণ থাকবে মঙ্গলের ভূতত্ত্বের ওপর। এছাড়া একজনের প্রশিক্ষণ থাকবে এক্সোবায়োলজি’র ওপর, যাতে তিনি পৃথিবীর বাইরে জীবনের অনুসন্ধানের পাশাপাশি জীবদেহের ওপর পৃথিবীর বাইরের পরিবেশের প্রভাব নিয়ে গবেষণায় ভূমিকা রাখতে পারেন। এছাড়া সবাইকেই ফিজিওথেরাপি, মনোবিজ্ঞান এবং ইলেকট্রনিকসের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৪ রাত ১১:৩৩
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×