somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভারতের বিএসএফ প্রতি চারদিনে একজন বাংলাদেশীকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করছে।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
অধিকার ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আলোচনা : ভারতের বিএসএফ প্রতি চারদিনে একজন বাংলাদেশীকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করছে। সীমান্ত এলাকায় লাখ লাখ বাংলাদেশীর প্রতিটি দিন কাটে আতঙ্কে। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আয়ো-জিত আলোচনায় বক্তারা একথা বলেন। আলো-চনার আগে বিএসএফের গুলিতে নিহত এবং তাদের হাতে নির্যাতিত বাংলাদেশীদের নিয়ে চ্যানেল-ফোরে প্রচারিত ৪ মিনিটের একটি প্রতিবেদন দেখানো হয়।অধিকার এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের যৌথ প্রকাশনা ‘ট্রিগার হ্যাপি : এক্সিসিভ ইউজ অব ফোর্স বাই ইন্ডিয়ান ট্রুপস দ্য বাংলাদেশ বর্ডার’ প্রতিবেদনের ওপর আলোচনায় বক্তারা বলেন, ইসরা-ইলের গাজা সীমান্তের চেয়ে ভয়ঙ্কর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। গাজায় যুদ্ধের সময়ও জনসাধারণকে এভাবে গুলি করে হত্যা করা হয় না। অথচ বাংলাদেশের ভূখণ্ডে থাকা বাসিন্দাদের বিএসএফ নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করছে।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের সরকারগুলো ব্যক্তিত্বহীন, কাপুরুষ, অথর্ব ও ভাবলেশহীন। বিএসএফ গুলি করে বাংলাদেশীদের হত্যা করছে, গরু-মহিষ ও মাছ নিয়ে যাচ্ছে, অথচ সরকার এসব ব্যাপারে নির্বিকার। সরকারের উচিত বিরোধী দলসহ একটি জাতীয় কনভেনশন করে বিএসএফের বাংলাদেশী হত্যার প্রতিবাদ করা। এখনই বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আদালতে দাবি তুলতে হবে। বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরকালেও সীমান্তে বাংলাদেশীকে নির্বিচারে হত্যা করেছে বিএসএফ।
বক্তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, সীমান্তের মানুষ কাকে ভোট দিয়েছিল। এর কি একটুও দায়বদ্ধতা নেই? তার ওপর এখন বলা হচ্ছে, আমাদের নাকি ট্রানজিট দেয়ার জন্যই জন্ম হয়েছে। এটা দিয়েও কি সীমান্তে মানবাধিকার রক্ষা করা গেছে। আজও (গতকাল) সাতক্ষীরা সীমান্তে এক বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ভারতে বানরকে গুলি করার অপরাধে এক চিত্রনায়ককে সাজা দেয়ার কথা উল্লেখ করে এক বক্তা বলেন, ভারতের কাছে বাংলাদেশী মানুষের দাম বানরের চেয়ে কম। তারা আবার জোর গলায় মানবাধিকারের কথা বলে এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে দাবি করে।
‘ট্রিগার হ্যাপি : এক্সেসিভ ইউজ অব ফোর্স বাই ইন্ডিয়ান ট্রুপস ইন দ্য বাংলাদেশ বর্ডার’ নামের ৮১ পৃষ্ঠার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী নির্বিচারে বলপ্রয়োগ, নির্যাতন, আটক করা ও হত্যাসহ অসংখ্য প্রমাণ পেয়েছে অধিকার এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। প্রতিবেদনে ভারত সরকারের প্রতি দায়মুক্তি ব্যবস্থা বাতিল করে মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী বিএসএফ সৈন্যদের বিচার করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, বিএসএফ নিয়ন্ত্রণহীন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দায়িত্ব হলো, সীমান্তের অপরাধ দমন করা। অথচ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে প্রায়ই অত্যন্ত দরিদ্র ও নিরীহ কৃষক বা শ্রমিকরা হত্যা এবং নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা আলাউদ্দিন বিশ্বাস চলতি বছরের মার্চে বিএসএফের গুলিতে সন্দেহভাজন গরু পাচারকারী হিসেবে তার ভাতিজা হত্যার বিষয়টি বর্ণনা করে বলেছেন, ‘আমি লাশ দেখতে গিয়েছিলাম। আমাদের বাড়ি থেকে ৫-৬ কিলোমিটার দূরে পড়েছিল। সেখানে বেশ কয়েকজন পুলিশ ও রাজনীতিবিদ জড়ো হয়েছিলেন। সে যখন চিত্ হয়ে শুয়েছিল, তখন বিএসএফ তাকে গুলি করে। তারা তার কপালে গুলি করেছিল এবং বুলেট মাথা ভেদ করে মাটির কয়েক ইঞ্চি গভীরে ঢুকে পড়েছিল। সে যদি দৌড়াত, তবে গুলি লাগত তার পিঠে। তারা (বিএসএফ) স্রেফ তাকে হত্যা করেছে।
আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত নওগাঁর সাপাহার উপজেলার কৃষক ফারুক হোসেন। যুবক ফারুক জানান, ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি তারা মাঠে কাজ করছিলেন। সীমান্তে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের অনেক ভেতরের ওই মাঠে আসে বিএসএফ সদস্যরা। তারা মদ্যপ ছিল। পাশের নদীর জেলেদের কাছে মাছ চেয়ে না পেয়ে তারা ক্ষুব্ধ হয়। তারা মাঠে এসে কৃষকদের লক্ষ্য করে অতর্কিতে গুলি ছোড়ে। ফারুকের পায়ে গুলি বিদ্ধ হয়।বিএসএফের গুলিতে নিহত ১৫ বছরের কিশোর আবদুর রাকিবের পিতা আবদুস সামাদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত দেশি-বিদেশি মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তাদের উদ্দেশে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার কিশোর ছেলে হত্যার বর্ণনা দেন। আবদুস সামাদ জানান, তার বাড়ি নওগাঁর সাপাহার উপজেলায়। তার ছেলে রাকিব সকালে মহিষ চরাতে বাড়ির পাশের মাঠে যায়। বিএসএফ ওপার থেকে রাকিবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। বিএসএফ এসে তার ছেলের লাশের পা ধরে টেনে সীমান্তের ওপারে নিয়ে যায়। তারা আবদুস সামাদের প্রায় ৬০ হাজার টাকা মূল্যের মহিষটিও নিয়ে গেছে। দুপুর ১২টায় দিনেদুপুরে এ ঘটনা ঘটে বলে তিনি জানান। নিহত রাকিব তার ছোট ছেলে। বড় ছেলেও কৃষিকাজ করে। বিএসএফের হাতে নির্মমভাবে প্রহৃত ৩ ছেলের পিতা কৃষ্ণচন্দ্র মণ্ডল বলেন, সন্দেহভাজনরা পালিয়ে যাওয়ায় বিএসএফ সদস্যরা হতাশ হয়ে পড়েছিল। তারা ৩ ছেলেকে ঘেরাও করে কোনো কারণ না বলেই রাইফেলের বাঁট দিয়ে পেটাতে, লাথি ও চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করে। সৈন্যরা ছিল নয়জন। তারা আমার ছেলেদের নির্দয়ভাবে পেটায়। এমনকি ছেলেরা মাটিতে পড়ে যাওয়ার পরও বিএসএফ সদস্যরা নির্মমভাবে তাদের বুক ও অন্য স্পর্শকাতর স্থানে লাথি মারতে থাকে।
সূত্র: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:১৩
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×