ছোটকালে মেরিন্ডার অ্যাড হত একটা। আকাশ থেকে কমলা লেবু বৃষ্টির মত পড়ছে। রাস্তা ঘাট ডুবে যাচ্ছে। চারদিকে শুধু কমলা আর কমলা। তখন ভাবতাম ঈদ মানে এরকম কিছু। মক্কা মদিনায় ওরকম কমলা, খেজুর, আঙ্গুর, বেদানার বৃষ্টি হয়। আমরা দুরের দেশ বলে আমাদের এখানে হয় না। তারপরও আনন্দ হত পৃথিবীর কোথাও না কোথাও হচ্ছে। তাদের আনন্দে আমরাও আনন্দ করতে দোষের কিছু নেই।
ছোটবেলায় যে কত অদ্ভুত চিন্তাই থাকে।
ভুল সবই ভুল। বড় হয়ে চিন্তাটা কেটে যায় স্বাভাবিক ভাবেই। তবে আক্ষেপ একটা থেকেই যায়। যে আল্লাহ, যে রাহমানুর রাহিম সকল জ্বগতের মালিক, যার অসাধ্য কিছুই নাই; সে যদি ফেরেশতা পাঠিয়ে অহী পাঠাতে পারে, সে যদি পঙ্খিরাজ ঘোড়ায় চড়িয়ে মুহম্মদ (সঃ )'কে সাত আসমান ঘুরিয়ে নিয়ে আসতে পারে, সে কেন তারই নির্দেশিত ঈদের দিন তারই বান্দাদের জন্য একটু কমলা, খেজুর, আঙ্গুর, বেদানার বৃষ্টি দিতে পারবেনা!!! গল্প শুনেছি আল্লাহ নাকি, অভুক্ত কোন জাতিকে বেহেশত থেকে খাবার এনে দিত। তবে কেন ফলের বৃষ্টি নয়।
আচ্ছা, মানলাম কমলা আঙ্গুর ইহুদী নাসারাদের ফল। নবী করিমের প্রিয় ছিল খোর্মা খেজুর। তবে খোরমা খেজুরেরই বৃষ্টি হোক!!!!
নাহ সেটাও তার দুর্ভাগা মোমিন মুসলিম বান্দাদের কপালে জোটেনি কোন দিন।
ঈদ বান্দাদের কাছে নেয়ামত স্বরুপ। আল্লাহ তার বান্দাদের জন্য একটা খুশির দিন, আনন্দের দিন বরাদ্দ রেখেছেন। যাদের সামর্থ্য আছে, নিজের টাকায় ফুর্তি কর, খুশি থাকো। টাকা নাই তোমার ফুর্তিও নাই। দুয়ারে দুয়ারে ভিক্ষা কর, ফুর্তি করা মানুষগুলোর কাছে হাত পেতে দুই তিন টাকা যা পাও সেটাই তাদের লাভ। তাদের ঈদ ওই ভিক্ষার বাড়তি পাওনাটুক।
হে পারওয়ারদেগার, রাব্বুল আলামিন তোমাকে এই বিত্তপ্রীতি মানায় না। তোমাকে মানায় না এরকম একটা দিনের মালিক হতে, যেখানে বৈষম্যের কাল দাগটা আরও প্রকট আরও গাঢ় হয়ে ওঠে। তোমাকে মানায় না তোমার বিত্তবান বান্দাদের লাচ্চা সেমাইয়ের এটো খেয়ে বিত্তহীন বান্দাদের ঈদ কিংবা খুশি কিংবা আনন্দ যাপন।
হে সমস্ত সম্পত্তির প্রতিপতি; তুমি কি পারতেনা এই একটা দিনের জন্য বৃষ্টি দিতে? খেজুর খোর্মার বৃষ্টি, নতুন জামা কাপড়ের বৃষ্টি, ভুখা নাংগা মানুষগুলোর জন্য এক পিস গরুর মাংশ সহ এক প্লেট পোলাও।
এটা তো তোমারই স্বীকৃতি দেয়া খুশির দিন। তাই না?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



