Memorandum About The Death Of Chaitaly Panday, Beloved Wife Of Our Teacher Dr. Pradip Panday
by Meherul Hasan Sujon on Wednesday, May 4, 2011 at 10:25am
তারিখ : ০৪ মে ২০১১
বরাবর
পরিচালক
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
রাজশাহী
বিষয় : চিকিৎসকের অবহেলায় গর্ভের শিশুসহ একজন মায়ের মৃত্যু প্রসঙ্গে
জনাব
শ্রদ্ধা প্রদর্শনপূর্বক নিবেদন এই যে, আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিৰার্থী। আমাদের বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পা-ের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী চৈতালী পা-ে ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর থেকে আপনার কলেজের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. হাসিনা আখতারের অধীনে নিয়মিত চিকিৎসা নিয়ে আসছিলেন। গত ২০ এপ্রিল ২০১১ তারিখ থেকে চৈতালী পা-ের রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুর্ব করে। এরপর ২৬ এপ্রিল তা আরো বেড়ে গেলে ওইদিন সন্ধ্যায় ডা. হাসিনার পরামর্শক্রমে রোগীকে ডা. সুজিত কুমার ভদ্রের অধীনে নগরীর মুক্তি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে রোগীর অবস'া আরো খারাপ হলে এবং কয়েকবার বমি করলে ডা. ভদ্র ইসিজি করিয়ে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে ভর্তির নির্দেশ দেন। এখানে উলেৱখ্য চৈতালী পা-ের কখনোই হৃদরোগ সম্পর্কিত সমস্যা ছিলো না।
২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় মুক্তি ক্লিনিকে চৈতালী পা-েকে আনার পর থেকেই ড. প্রদীপ ডা. হাসিনা আখতারকে লৰীপুর মোড়ের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে একবার এসে রোগীকে দেখার অনুরোধ করেছিলেন। ডা. হাসিনা ওই সময় পপুলারে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছিলেন। ডা. ভদ্রের পরামর্শমতে চৈতালী পা-েকে হাসপতালের হৃদরোগ বিভাগে ভর্তি করাতে গেলে সেখানে কর্তব্যরতরা অন্তঃসত্ত্বা একজন রোগীকে ওই বিভাগে ভর্তির জন্য নিতে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন। এসময় ডা. ভদ্র মোবাইল ফোনে তাদেরকে রোগী ভর্তির নির্দেশ দিলে চৈতালী পা-েকে ভর্তি করা হয়। এখানে তার অবস'ার আরো অবনতি হলে ঘণ্টাখানেক পরে তাকে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে গাইনি বিভাগে ভর্তি করা হয়। ড. পা-ে এসময় বারবার ডা. হাসিনাকে একবার এসে রোগীকে দেখার অনুরোধ করলেও রাত ১২টার আগে তিনি একবারও আসেন নি ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে। ১২টার দিকে তিনি এসে কিছুৰণ রোগীকে দেখে পরদিন ভারতে যাবেন এই ব্যস্ততা দেখিয়ে চলে যান। ওয়ার্ডের তত্ত্বাবধানে রাত ৪টার দিকে চৈতালীর অবস'া কিছুটা ভালো হলেও ভোর ৫টার দিকে ফের অবনতি হয়। অতিরিক্ত উচ্চ রক্তচাপ ও প্রচ- শ্বাসকষ্টে ভুগে ভোর সাড়ে ৬টার দিকে আট মাসের সন্তানকে গর্ভে রেখেই মারা যান তিনি।
মহোদয়,
হাসপাতাল থেকে দেয়া মৃত্যুসনদে চৈতালী পা-ের মৃত্যুর কারণ হিসেবে এক্লামশিয়ার কথা লেখা হয়। অথচ, ২০ এপ্রিল থেকে তার রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুর্ব করলেও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই রোগের কোন চিকিৎসা তাকে দেয়া হয়নি। ছয় মাস ধরে তার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন থাকলেও ডা. হাসিনা ২৬ এপ্রিল যথাসময়ে রোগীকে দেখতে আসেন নি। ডা. ভদ্রও গুর্বতর অসুস'্য রোগীকে অ্যাক্লামশিয়ার কোন চিকিৎসা দেন নি। সুতরাং, এবিষয়টি এখানে পরিষ্কার যে চিকিৎসকদের অবহেলা ও যথাসময়ে ব্যবস'া না নেয়ার কারণেই শিশুসহ একজন মায়ের এই কর্বণ মৃত্যু ঘটে।
অতএব, এই ঘটনাটি পূর্ণাঙ্গভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস'া নেয়ার জন্য আপনার কাছে বিনীত অনুরোধ করছি। সেই সঙ্গে আমরা অনুরোধ করছি, গাইনি বিভাগসহ অন্য সব বিভাগের চিকিৎসকরা যেন রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেন। আমরা চিকিৎসকদের অবহেলায় আর কোন মা, শিশু বা অন্য কোন প্রাণের অকাল মৃত্যু দেখতে চাই না। এই বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে পারলেই এই কলেজ ও হাসপাতালের মর্যাদা অৰুণ্ন থাকবে-এই আমাদের বিশ্বাস।
নিবেদক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সকল শিৰার্থী
সংযুক্তি :
১. বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদের ফটোকপি
২. চৈতালী পা-ের ব্যবস'াপত্র, রোগ নির্ণয়ের বিভিন্ন প্রতিবেদন ও মৃত্যুসনদের ফটোকপি
অনুলিপি :
১. মাননীয় মন্ত্রী, স্বাস'্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
২. মাননীয় সচিব, স্বাস'্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
৩. মাননীয় মহাপরিচালক, স্বাস'্য অধিদফতর
৪. মাননীয় জেলা প্রশাসক, রাজশাহী
৫. মাননীয় অধ্যৰ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ