মধ্য দুপুর। খাঁ খাঁ রোদ। আকাশে মেঘের ছিটেফোঁটাও নেই। অনেক উচুঁতে দুটো চিল উড়ছে আপনমনে। শীপুর স্কুল আজ কোন কারণে একটু তাড়াতাড়িই ছুটি হলো। রাস্তার দু'পাশে ছাত্রছাত্রীর ঢল। শীপু তার বন্ধুকে নিয়ে হাটছে। গরমে রাস্তার পীচ গলা শুরু হয়েছে। হঠাৎ এক জায়গায় দাঁড়িয়ে শীপু পীচ গলা দেখলো। তারপর আবার হাটতে শুরু করল। শীপু বেশ উত্তেজিত ভঙ্গিতে বন্ধুকে কি যেন বলছে...
'দেখেছিস নাকি, আজকে অংক স্যার কি করল......'
সম্ভবত স্কুলে কোন ঘটনা ঘটেছে, সেটাই আলোচনা হচ্ছে।
'এই বাদাম এই' - শীপু বাদামওয়ালাকে ডাকল।
'তোর ঝুড়িতে আচার আছে?'
শীপু কি মনে করে দু'প্যাকেট আচার কিনল। তারপর পকেটে রেখে দিল।
'আচার কিনলি, আমাকে দিবি না', শীপুর বন্ধু বলল।
'তোকে কেন দেবো? সেদিন আইসক্রীম কিনে আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে খেলি, মনে আছে?'
'যা। কথাটা মনে থাকবে', তার বন্ধু দুঃখিত গলায় বলল।
শীপু কিছু বলল না। সে কিছুটা অন্যমনষ্ক।
বাসায় ঢুকেই স্কুলব্যাগটা ছুড়ে দিল টেবিলে। তারপর জুতো খুলতে বসল। তার মা লাগালেন ধমক, 'কাঁচের টেবিলে এভাবে কেউ ব্যাগ ছুড়ে?' শীপুর সেদিকে কান দেবার সময় নেই। কোনমতে জুতাটা খুলে ছুটে গেল ভিতরের ঘরে।
'আপু, শুনে যাওনা, আজ স্কুলে মজার এক......'
শীপুর কথা আটকে গেল। দেখল তার মা তার দিকে তাকিয়ে আছেন। চোখ বিষন্ন। শীপু কথা না বলে ধীর পায়ে পড়ার রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করল। এবং সাথে সাথেই কেঁদে ফেলল ঝরঝর করে। পকেট থেকে আচার দু'টো বের করে দেখল ঝাপসা চোখে।
শীপুর বোনটি মারা গেছে আজ দু'মাসের মতো হল। শীপু এভাবে প্রতিদিন স্কুল থেকে আসে হইচই করে। বাসায় এসেই তার মন খারাপ হয়। তার মনে যে অনেক কথা জমে আছে। সেগুলো শোনানোর জন্য কাউকে পায় না।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




