তখন ইন্টারিমিডিয়েটে পড়ি, তো বিকেলে মাঝে মাঝে বাসার সামনের রাস্তায় ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের সাথে ফুটবল খেলতাম।
সাত সাতটা বাদর মার্কা চাচার সাথে বড় হওয়াতে আমার চেহারাটা ১৬ আনা বাঙালী মেয়েদের মত হলেও স্বভাবটা ছিলো ছেলেদের মত। মানে বাধা নিষেধের কোন বালাই ছিলো না। তুমি মেয়ে এটা করতে পারবে না, ওটা করতে পারবে না-এসব কখনও শুনিনি । তাই ওদের সাথে খেলতে গেলে বাধা দেবার মত কেউ তখন ছিলো না। একটা জিনিস দেখতাম এলাকার মাস্তান টাইপের ছেলেরা অন্য মেয়েদের টিজ করত কিন্তু আমাকে কখনও টিজ করত না বরং সমস্যা হলে হেল্প করতে আসতো। আপুনি বলে ডাকতো ( আমার কোন বড় বোনও ছিলো না, ছোট বোনও না)
একদিন এলাকার বড় ভাইয়া ( যার বোনদের সাথে আবার আমার বন্ধুত্ব) আমাদের বলল ঘুরতে নিয়ে যাবে চিড়িয়া খানাতে। আমরা তো খুশিতে লাফিয়ে উঠলাম। নিদিষ্ট দিনে প্রায় ১০ জন গেলাম, ভাইয়ার তিন বোন দুই ছোট ভাই, আমি, ভাইয়া ভাইয়ার বন্ধৃ আরও কে যেন।
চিড়য়াখানাতে গিয়ে আমরা তো খুব খুশি, হঠাৎ দেখি আমার বান্ধবীরা মিটিমিটি হাসছে, আমি জিজ্ঞেস করতেই বলল ভাইয়ার এক বন্ধুর ছোট ভাই আমার সাথে কথা বলতে চাইছে। আমি বললাম কতা বলতে চাইছে বলুক তাতে হাসার কি আছে। আরেকজন বলল না তোমার সাথে একা কথা বলতে চাইছে, তোকে নাকি প্রায়-ই ফুটবল খেলতে দেখে বাচ্চাদের সাথে-খুব নাকি ভালো লাগে। আমি ভাবলাম আমার ফুটবল খেলার প্রশংসা করছে । আমি বললাম-" কিন্তু আমি তো ভাল ফুটবল খেলতে পারি না, ও তো এমনি-ই বাচ্চাদের সাথে খেলি।
এমন সময় বড় ভাইয়া একজনকে সাথে এনে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলল ও তোমার সাথে একটু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলবে, তোমরা এখানে বসে কথা বল, আমরা পাশেই আছি। ভাইয়ারা একটু দুরে গিয়ে সবাই দাড়ালো।
আমি ছেলেটিকে বললাম" বলেন, কি বলবেন?
ছেলেটি আর কথা বলে না, এক মিনিট যায়, দুই মিনিট আমি তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছি কি বলে শোনার জন্য- মহা ঝামেলা সে কিছুই বলে না।
যখন ভাবছি ভাইয়াদের দিকে যাবো তখন সে হঠাৎ বলে উঠেলো- " আপনি আচার বানাতে জানেন?"
আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম- জি? ফুটবলের মাঝে আচার এলো কোথা থেকে!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




