সময়টা ১৯৯৫ সাল। আমি তখন ক্লাস টু-এ পড়ি, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বেড়াতে গিয়েছি আম্মুর কাছে.........আমি জীবনে তখনো মেলা দেখি নাই। খালি নানা মানুষের
কাছ থেকে বর্ননা শুনেছি । মেলায় যাওয়ার প্রবল আগ্রহ নিয়ে আব্বুকে বললাম মেলায় নিয়ে যেতে, আব্বু বললেন ঠিক আছে কাল নেবো। আমি তো শুনে মহাখুশি।
পরের দিন বাপ-বেটা রওনা দিলাম মেলার উদ্দেশ্যে.........মেলা হচ্ছিল গজড়া নামক হাটে।
মেলায় এসে তো আমার চক্ষু চড়ক গাছ!! এত সুন্দর!!!!!...এতো আমার ভাবনার বাইরে। চারিদিকে রঙ বেরং এর বেলুন, মাটির খেলনা, মিষ্টি জাতীয় নানা খাবার, নাগরদোলা, সাপের খেলা সহ আরো কত কি!!! আমি তো অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছি। আব্বু আমায় একটি বেলুন কিনে দিলেন আমি সেটা হাতে নিয়ে বাবার পাশে হাঁটছিলাম...।প্রচন্ড ভীড় চারিদিকে, এরই মধ্যে আব্বু আমায় বলছিলেন এটা অমুক এটা তমুক। আমি মনোযোগী ছাত্রের মতো সব শুনছিলাম ও অবাক বিস্ময়ে উপভোগ করছিলাম । হঠাৎ দেখলাম মাটির পুতুলের দোকান, আমি কিছু না বুঝেই সেই ভিড়ের মাঝে ঢুকে পড়লাম। এটা সেটা দেখতে লাগলাম। তখনো আমার মাথায় আসেনি যে আব্বু আমার পাশে নাই। হঠাৎ বাবাকে দেখানোর কথা মনে হতেই পাশে তাকাতেই দেখি বাবা নাই চারিদিকে সব অপরিচত মুখ। আমি ভীড় ঠেলে বেরিয়ে আসলাম। চারিদিকে তাকাচ্ছি কিন্তু কোথাও বাবা নাই। কাঁদা শুরু করলাম(আমি ছোট বেলায় ঠোট উলটে এমন ভাবে নাকি কাঁদতাম যে কোন শব্দ হোত না শুধু অঝোরে চোখ বেয়ে পানি পড়তো, আসলে জোরে কাঁদতে লজ্জা পেতাম)চোখ বেয়ে অঝোরে পানি পরছে কোথাও বাবা নাই, হঠাৎ এক মহিলা আমায় খপ করে ধরে একটু সাইডে নিয়ে আসলেন , আমিকিছুই বুঝতে পারছিলামনা। আমাকে প্রশ্ন করে বসলেন এই তোর মা-বাপ কই? আমি জানিনা বলে আবার কাঁদতে থাকলাম। মহিলা দিল এক ধমক আমি চুপ করে গেলাম চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে। পরে প্রায় একঘন্টা পর আব্বু আমায় খুঁজে পেলেন। আমায় পেয়ে তিনি কি করে ছিলেন সেটা এখন দেখতে পেলে ভালই হতো ।
ভাবতে ভালই লাগে শেষ পর্যন্ত বাবা মার কাছে ফিরে আসতে পেরেছিলাম। নাহলে জীবনটা হয়ত অন্যরকমই হত। প্রিন্স হাইয়ান হয়ে যেতাম রহিম বাদশা হা হা হা

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




