আজ আপনাদের সাথে আমার জীবনে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা শেয়ার করবো। সেই ৬ বছর বয়স থেকে আমি ঢাকায়। আম্মু চাকরির কারনে তখনো চাঁদপুরে। আমি নানুবাড়িতে থেকে ঢাকায় পড়ি। আম্মু চাঁদপুর আমি ঢাকা, খুবই যন্ত্রনাময় সেই স্মৃতি আমার কাছে। এভাবে আমায় ৩ বছর মা কে ছাড়া থাকতে হয়েছে। যাই হোক মূল কথায় আসি.........
সময়টা ১৯৯৫ সাল। আমি তখন ক্লাস টু-এ পড়ি, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বেড়াতে গিয়েছি আম্মুর কাছে.........আমি জীবনে তখনো মেলা দেখি নাই। খালি নানা মানুষের
কাছ থেকে বর্ননা শুনেছি । মেলায় যাওয়ার প্রবল আগ্রহ নিয়ে আব্বুকে বললাম মেলায় নিয়ে যেতে, আব্বু বললেন ঠিক আছে কাল নেবো। আমি তো শুনে মহাখুশি।
পরের দিন বাপ-বেটা রওনা দিলাম মেলার উদ্দেশ্যে.........মেলা হচ্ছিল গজড়া নামক হাটে।
মেলায় এসে তো আমার চক্ষু চড়ক গাছ!! এত সুন্দর!!!!!...এতো আমার ভাবনার বাইরে। চারিদিকে রঙ বেরং এর বেলুন, মাটির খেলনা, মিষ্টি জাতীয় নানা খাবার, নাগরদোলা, সাপের খেলা সহ আরো কত কি!!! আমি তো অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছি। আব্বু আমায় একটি বেলুন কিনে দিলেন আমি সেটা হাতে নিয়ে বাবার পাশে হাঁটছিলাম...।প্রচন্ড ভীড় চারিদিকে, এরই মধ্যে আব্বু আমায় বলছিলেন এটা অমুক এটা তমুক। আমি মনোযোগী ছাত্রের মতো সব শুনছিলাম ও অবাক বিস্ময়ে উপভোগ করছিলাম । হঠাৎ দেখলাম মাটির পুতুলের দোকান, আমি কিছু না বুঝেই সেই ভিড়ের মাঝে ঢুকে পড়লাম। এটা সেটা দেখতে লাগলাম। তখনো আমার মাথায় আসেনি যে আব্বু আমার পাশে নাই। হঠাৎ বাবাকে দেখানোর কথা মনে হতেই পাশে তাকাতেই দেখি বাবা নাই চারিদিকে সব অপরিচত মুখ। আমি ভীড় ঠেলে বেরিয়ে আসলাম। চারিদিকে তাকাচ্ছি কিন্তু কোথাও বাবা নাই। কাঁদা শুরু করলাম(আমি ছোট বেলায় ঠোট উলটে এমন ভাবে নাকি কাঁদতাম যে কোন শব্দ হোত না শুধু অঝোরে চোখ বেয়ে পানি পড়তো, আসলে জোরে কাঁদতে লজ্জা পেতাম)চোখ বেয়ে অঝোরে পানি পরছে কোথাও বাবা নাই, হঠাৎ এক মহিলা আমায় খপ করে ধরে একটু সাইডে নিয়ে আসলেন , আমিকিছুই বুঝতে পারছিলামনা। আমাকে প্রশ্ন করে বসলেন এই তোর মা-বাপ কই? আমি জানিনা বলে আবার কাঁদতে থাকলাম। মহিলা দিল এক ধমক আমি চুপ করে গেলাম চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে। পরে প্রায় একঘন্টা পর আব্বু আমায় খুঁজে পেলেন। আমায় পেয়ে তিনি কি করে ছিলেন সেটা এখন দেখতে পেলে ভালই হতো ।
ভাবতে ভালই লাগে শেষ পর্যন্ত বাবা মার কাছে ফিরে আসতে পেরেছিলাম। নাহলে জীবনটা হয়ত অন্যরকমই হত। প্রিন্স হাইয়ান হয়ে যেতাম রহিম বাদশা হা হা হা । উপরওয়ালাকে অসংখ্য ধন্যবাদ বাবা মার কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্যে। ঘটনাটার পুরোটাই বাবার মুখে শোনা। সেটাকেই আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। সবাইকে কষ্ট করে পড়ার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ। সবার জন্য শুভকামনা।
আলোচিত ব্লগ
জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না
নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা
সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১
নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়
সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।
হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন
আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই
সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন