নদী পাড়ের এই জায়গাটা ঠিক কতকালের চেনা সেটার সমাকলন করতে গেলে সময়ের ট্রে-তে এক কাপ বৃষ্টিভেজা আড্ডা হলেও হতে পারে তবে হিসেবের খাতা নিংড়ে খুব একটা সুবিধা করে ওঠা যাবে বলে মনে হয় না। অজান্তেই ভোর হতে যাওয়া কমলা রঙের সূর্যের সাথে হয়ে গিয়েছে বন্ধুত্ব। সারাদিন শেষে গোধূলি বেলায় হয়েছি বিদায়ের সাক্ষী। একটা প্রজাপতির মনে ঠিক কতটুকু আনন্দ থাকলে তার সাথে রঙলীলা মিশিয়ে একটা নেশাতুর চোখ মায়ায় বুঁদ করে দেয়া যায় সেটা প্রকৃতির খেয়াল এবং খেয়ালি নদীর জলনিনাদে মত্ত হতে যাওয়া শিক্ষানবিশ গুল্ম লতার স্বেচ্ছামৃত্যু ঐ প্রকৃতির-ই ব্যর্থতা।
জনতার কর্মব্যস্ত মুখোশ আমাকে বলে উন্মাদ, ক্ষেত্রবিশেষে বদ্ধ পাগল। আর মুখোশধারীদের গ্রহে চলে বিত্তাকর্ষণের রুটিনমাফিক বটিকা। সভ্যতা তাদের ঢাল আর মেকি ভালোবাসা তাদের পাথরের আবেগ। দেহের খাবার সেখানে আছে বটে তবে মনের খাবারের অভাব তাদের অনুভবের বাইরে।
কতো কাল গেলো, কতো মহাকাল চক্রাকারে ৩৬০ ডিগ্রীর মাঝে হোঁচট খেল তার ইয়ত্তা গুনতে গেলে মোনালিসার হাঁসিও মলিন হয়ে যাবে তবে কবি'র কাছে প্রকৃতির স্তুতি আদৌ সমাপ্তি বিন্দুতে পৌঁছাবে কিনা সেটা নাহয় একটা প্যারাডক্স হিসেবেই থাক। সাধারণ চোখ যেখানে দেখে নর্দমার কালো কবি সেখানে আবিষ্কার করেন অণুজীবের ঘরকন্যার সাথে বৈরিতার মনোমালিন্য। হরিণীর চোখে যে আত্মা মরণ দেখেছে কবির ক্যানভাসে তা প্যাস্টেলে আঁকা হয়েছে হিজলের জলকাব্যে। স্বার্থপর কবি প্রেয়সীকে তুলে এনেছে প্রকৃতি থেকে কিন্তু ফিরিয়ে দিয়েছে সবুজ আর প্রজাপতির চাদরে। আত্মভোলা কবি হয়ত নিজের পুরোটা দিয়েও পরের বার ধানসিঁড়ি নদীর তীরে ফিরে আসার নিশ্চয়তা পায়নি তবে প্রকৃতির কপালে দিয়ে গিয়েছে অসমর্থ্যের মলিন বক্ররেখা।
তবে এবার তোমায় প্রশ্ন করবার পালা।
পাখির দুরন্ত ডানার হাওয়া যখন ডাহুক শাবকের বুকের হাড়ে ক্ষতের সীমানা গড়ছিলো তখন ঝর্নার শীতল জলের গভীরে অনুনাদে ব্যস্ত তুমি, নিঃসন্তান মেঘের ঘামে জন্ম দিলে পাথরকুঁচির উদ্ধৃত সন্তান, কথার পিঠে কথা যখন পোড় খেয়ে খেই হারালো বিশেষণে মিথ্যা হলো তার কলঙ্কের নাম, রুগ্ন কবির শেষ বিন্দু কালি দিয়ে যখন মহাকাব্য লিখলো ইতিহাস তা ছেঁটে দিলো অপয়া বিটপী ভেবে, তোমাকে খুঁজে তৃষ্ণায় শেষ যে জোনাকিটা মারা গেলো তার চোখে প্রশ্ন ছিলো "কেনো"!
প্রিয়তমার চুলের ঘ্রাণে যে প্রেমিক আজীবনের জন্য হারিয়ে যেতে চায় তার বরাদ্দ দিয়ে ভারবাহী অলস কচ্ছপকে তুমি সমৃদ্ধ করেছ...
তবুও তোমার কাছে প্রশ্ন থেকেই গেলো... কেন?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



