somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ সময়-ঘড়ির দশটি আঙুল

০৪ ঠা জুন, ২০১৮ রাত ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১. স্থবির


আমি সময় কাটাতাম মানুষ দেখে।

আর তেমন করার মত কিছু নেই আসলে। অমর হবার এই এক ঝামেলা। প্রতি হাজার খানেক বছর পর পর আমার স্মৃতি হারিয়ে যায়, নতুন স্মৃতির নিচে জমতে জমতে পুরাতন স্মৃতিরা বেওয়ারিশ হয়ে যায়। মনে পড়ে না কিছু। মানুষের চেহারা কাজ ইতিহাস কিছুই মনে থাকে না। আমার কাজের কোন প্রভাব মনে হয় না দুনিয়ায় পড়ে। যা-ই প্রতিষ্ঠা করি, একটা না একটা সময় ধসে পড়ে। যাকেই বন্ধু বানাই, চোখের সামনে সে শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে যৌবন ফুরিয়ে বুড়িয়ে যায়, মরে যায়। একটা সময় মনে হয়, কি দরকার? আমি যেন একটা পাথর, আর মানবজাতি একটা ব্যাপ্তিহীন সীমানাহীন স্রোতের মতন আমাকে এড়িয়ে বয়ে চলেছে, আজীবন, কোন শেষ নেই, শুরু নেই। কালের গহ্বর গিলে নিচ্ছে সবাইকেই। কাউকেই মনে থাকে না।

একজন বাদে।

তাকে দেখেই কেন যেন মনে হয়েছিল- আলাদা। কখনো এখানে দেখতাম, কখনো ওখানে। সময়ের একঘেয়ে মুঠো থেকে পিছলে পিছলে চলছে। দেখা হোত পাঁচ বছর পর, কিংবা পাঁচ শতাব্দী পরে। যুবতী অবস্থায়, কিংবা বৃদ্ধা। কিন্তু চিনতে কখনো ভুল হোত না আমার। আমাকে প্রথম খুঁজে নিয়েছিল ও-ই। কিংবা ওকে খুঁজে নিয়েছিলাম আমি, তারপর বারবার ফিরে ফিরে এসেছে ও। কি জানি। মনে পড়ে না ঠিক। শুরুর দিকের কথা এটা। আমি তখন কেবল বুঝতে শিখেছি আমার বয়স বাড়ে না, আমি মরতে পারি না। এই ব্রহ্মাণ্ড আমাকে ভুল করে তৈরি করে ফেলেছে, তারপর থেকেই এড়িয়ে চলছে। অমরত্বের শাপ। মিশরে ছিলাম আমি তখন। ফারাওদের আমল। নীলনদের পাড়ে বসে ছিলাম। পানির আস্তে আস্তে ঢেউ ভাঙ্গাটা দেখছিলাম। ও পেছন থেকে এসে আমার পাশে বসল। একজন অপরিচিত বৃদ্ধা মহিলা।

'সুন্দর না?'
-'...হ্যাঁ', আমি একটু অবাক হয়ে উত্তর দিলাম। মহিলার চেহারা আর কথার টানে বিদেশি মনে হচ্ছে। 'আপনাকে ঠিক চিনলাম না।'
সে হাসল আমার দিকে চেয়ে, 'তাই তো! ভুলেই গিয়েছিলাম যে এখনো দেখা হয় নি আমাদের।' তারপর একটা হাত বাড়ালো আমার দিকে, 'আমি জল।' তার কালো চোখে কৌতুক খেলা করছিল কেমন যেন, বয়সের ভারে কুঁচকে যাওয়া ঝুলে পড়া চেহারাটা তরুণ মনে হচ্ছিল অনেক।

আমি এক মুহূর্ত ভেবে তার হাতটা আমার হাতে নিলাম। কেন যেন পরিচিত মনে হল স্পর্শটা। 'আমি স্থবির।'
-'জানি।' আবার সেই কৌতুকমাখা হাসি।
'জানেন কিভাবে? কখনো দেখা হয়েছে কি আমাদের?'
-'হ্যাঁ। অনেকদিন আগে, আজ হতে অনেক বছর পর।'
'বুঝলাম না। মানে?'
'মানে হচ্ছে আমি তোমার মতই বিশেষ একজন, স্থবির। তোমার মতই, কিন্তু একটু আলাদা', সেও নীলনদের দিকে তাকালো এবার।

আমি আপনি বলতে গিয়েও সামলে নিলাম। এই মানুষটাকে কেন যেন তুমি বলতে ইচ্ছে করছে। 'তুমিও অমর?'
-'না। আমি সময়ের খাঁজেভাঁজে চলতে পারি। অতীতে যেতে পারি, ভবিষ্যতে যেতে পারি। সামনে পেছনে। কিন্তু নিজের ইচ্ছেমতন না', ও হাসল, হাসিতে বিষাদ, 'এতোটা অতীতে, এতোটা পেছনে আগে কখনো আসি নি আমি।'

'ও। কেমন লাগছে অতীত?'
-'তোমাকে পেলাম, ভালো লাগছে এখন। নিশ্চিত ছিলাম না পাবো কি না।' হাতে একমুঠ বালি তুলে নিলো ও, অনামিকা আর তর্জনীতে নিয়ে ডলছে আস্তে আস্তে। আমি এক মুহূর্ত ভাবলাম কি জিজ্ঞেস করা যায়।

'আমরা কি...ভালো বন্ধু?'
সে এই প্রশ্ন শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে পূর্ণদৃষ্টিতে তাকালো আমার দিকে, 'তারচে বেশি কিছু।'

তারপর, হারিয়ে গেল ও।

পরের প্রায় এক শতাব্দী ওর সাথে দেখা হয় নি আমার। এই কথোপকথনটা তবু তাজা হয়ে বেঁচে ছিল করোটির ভেতর।

পরের বার যখন ওকে আমি দেখি, তখন ওর বয়েস কম। একেবারেই কম। বাচ্চা শিশু বলা যেতে পারে। আমি জানি না কিভাবে খুঁজে পেলাম। হয়তো বা বেমানান লাগছিল, খাপছাড়া লাগছিল ওকে ওই পরিবেশে। যেন এই সময়ের মানুষ নয় সে। কাপড় চোপড় অদ্ভুত রকমের পড়ে ছিল। চেহারাও ভিন্ন সবার চে। তার চে বড় কথা, ভয় পাচ্ছিল মেয়েটা। চোখ বেয়ে অবিরাম ঝরে যাচ্ছিল নোনা পানি।

আমি প্রথমে চিনতে পারি নি ওকে। স্রেফ বেখাপ্পা বলে চোখে লাগছিল ওর উপস্থিতি, তাই দেখার জন্যে কাছে গিয়েছিলাম। মেয়েটার সামনে গিয়ে হাঁটু গেড়ে বসলাম, আর একজোড়া কালো চোখ আরো কুচকুচে কালো চুলের আড়াল থেকে বেরিয়ে আমার দিকে তাকালো। চোখে চোখে পড়তেই আমি চিনে ফেললাম। মাথার ভেতরে কোথাও ঘণ্টী বেজে উঠল একটা টং করে। এক শতাব্দী আগে এক বৃদ্ধার সাথে আমার দেখা হয়েছিল, কথা হয়েছিল কতিপয়, এই মেয়েটা সে-ই। বৃদ্ধা নেই আর, ক্ষুদে। একাকী। কিন্তু সেই মানুষটাই।

'জল?' আমি প্রায় ফিসফিস করে নামটা উচ্চারণ করলাম।
ওর চোখগুলো বড় বড় হয়ে গেল। কব্জির উল্টোপাশ দিয়ে চোখ মুছে কাঁদোকাঁদো গলায় জিজ্ঞেস করল, 'আমি কোথায়? তুমি আমার নাম জানো কিভাবে?'

আমি ডান হাত বাড়িয়ে দিলাম ওর দিকে, ঠিক যেমনটা শত বছর আগে বৃদ্ধা থাকতে ও করেছিল। মেয়েটা এক মুহূর্ত ইতস্ততঃ করলো, তারপর হাতে হাত নিয়ে নিলো। আমি ওকে সাহস দেবার জন্যে হাতে আস্তে চাপ দিলাম, 'আমি স্থবির। তোমার সাথে দেখা হয়েছিল আমার অনেকদিন আগে। বুড়ি হয়ে গেছিলে তুমি তখন।'

ও বোকার মত তাকিয়ে থাকল আমার দিকে, 'মানে কি? আমি বুঝি না!' তারপর ভেঙ্গে পড়ল কান্নায়, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করল।

আমি এবার বুকে টেনে নিলাম ওকে, 'তুমি বিশেষ একটা মানুষ, জল। আমার মতোন। সময় তোমাকে টানে। এখন থেকে যেখানেই যাবে, আমাকে খুঁজে নিও। আমি বদলাবো না। একই রকম থাকব, তোমার অপেক্ষায় থাকব। প্রমিস।'

মেয়েটা আমার কাঁধে মুখ বুজে কাঁদতে লাগল। বিচার দিচ্ছিল আমার কাছে, সে এরকম কেন, এরকম হতে চায় না, স্বাভাবিক হতে চায়। বোঝার চেষ্টা করছিল, কিন্তু পারছিল না। আমি সান্ত্বনা দেবার চেষ্টা করছিলাম।

তারপর, হারিয়ে গেল ও।

কেটে গেল আরো কয়েকশো বছর। ওর দেখা নেই। এই সময়টায় ধৈর্যহীন হয়ে পড়েছিলাম আমি কিছুটা। পাথর হয়ে নিস্ক্রিয় পড়ে থাকতে আর ভাল্লাগছিলো না। মানুষের সাথে কিছুদিন মিশলাম। নেতৃত্ব দিলাম। লড়লাম। রক্ত ঝরালাম। কিছুদিন শাসন করলাম, কিছুদিন শোষণ। কিছুদিন শোষিত হলাম। কোন কিছুই সময়ের বালুচরে দাগ কাটল না। দিনশেষে বদলালো না কিছুই। আমার অভিশপ্ত জীবনের সবচে বড় ট্রাজেডিই হয়তো এটা - না দুনিয়া আমার কিছু বদলাতে পারে, না আমি দুনিয়ার। আমার পাগল পাগল লাগছিল। সব মানুষের মধ্যে ওকে খুঁজছিলাম। এমন কেউ, যে আমাকে বুঝবে। যাকে আমি বুঝব।

তারপর দেখলাম ওকে।

আমার বয়েসি একজন মানুষ। যদিও কাগজে কলমে আমি হাজার বছর পার করে এসেছি। চেহারার দিক থেকে আর কি। যুবতী। ধানক্ষেতের একপাশে দাঁড়িয়ে ছিল। মুখে আবছা হাসি। বাতাসে চুল এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল ওর। আমি পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। কি বলে ডাকব তারে?
'জল', আমি হাত বাড়ালাম।
- 'স্থবির', ও হাত টেনে নিলো হাতে। আমি হাতটা চেপে ধরলাম শক্ত করে, হারিয়ে না যায় মানুষটা, হাতের উষ্ণতা অনুভব করলাম, 'অনেকদিন পর।'
'তাই কি?' ও প্রশ্ন করল আমাকে, 'অনেকদিন? আমার বোধ ঠিক থাকে না। কতদিন?'
আমার তর্জনী ওর হাতের পিঠে স্পর্শ বুলিয়ে যেতে লাগলো আলতো করে। একটার পর একটা নকশা করে করে। আস্তে আস্তে, সাবধানে। 'তিনশো বছর।'
- 'এতোদিন?'
'হ্যাঁ।'
'শেষ কবে দেখেছিলে আমায়?'
'গ্রীসের এক ফলের বাজারে। তুমি কাঁদছিলে। বাচ্চা ছিলে তখন', আমি আমাদের জোড়া লাগানো হাতের দিকে মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে থাকি। এমনটা যদি থাকতে পারতাম দুজন! জানি হবে না সেটা। আমার হাতে সময় অফুরন্ত। ওর সময় এইটুকুন।

ও মাথা নাড়ে, 'হু, তখনই প্রথম দেখেছিলাম তোমাকে আমি।'
-'ঠিক আছো তো তুমি?'
'এখন ঠিক আছি। তোমাকে দেখার পর।'
-'কেন?'
'তুমি আমার ধ্রুবতারা। তোমাকে দেখে আমি পথ চিনি, নইলে হারিয়ে যেতাম কবেই!'
আমার হয়ে আমার ভেতর থেকে কেউ একজন সাথে সাথে উত্তর দেয়, 'আর তুমি আমার সোনার হরিণ। তোমার জন্যেই পথে নামি।'

আমরা কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকি। বাতাস বহে, কখনো আবার বহে না। একটু পরে ও বলে, 'শান্তি লাগছে আমার এখন। ভয় পেয়ে গেছিলাম।'
-'কেন?'
'এবার অনেক সামনে চলে গিয়েছিলাম আমি, স্থবির। বহু কষ্টে ফিরে এসেছি। দুনিয়া এরকম সুন্দর থাকবে না সবসময়। ভাঙ্গন আসছে।'
-'কি হবে তখন?'
'সেসব নিয়ে ভাবব না আর। তুমি পাশে আছো, এটা সত্যি। এই মুহূর্তটা সত্যি। এই সত্য নিয়ে বাঁচতে চাই। যা হবার, হবে।'

আমি কিছু না বলে ধানক্ষেতের সবুজে চোখ ফেরাই। ওর হাতটার অস্তিত্ব মুখস্ত করার চেষ্টা করতে থাকি।

তারপর, হারিয়ে গেল ও।




২. জল




আমার মনে আছে প্রথমবারের কথা। সাত-আট বছর বয়েস তখন। প্রথম যখন সময়ের টানটা অনুভব করলাম। জানি না কেন ঘটে, কিভাবে হয়, কিন্তু চোখের ঠিক পেছনে একটা চাপ শুরু হয়। বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে, একসময় অসহ্য লাগতে শুরু করে, আমি চোখের পলক ফেলি - তারপর চোখ খুললে দেখি অজানা কোথাও দাঁড়িয়ে আছি। অন্য কোথাও, অন্য কোন সময়ে।

এই ব্যাপারটা ঘটে যখন তখন। কোন ঠিক নেই। প্রতিবার চোখ বন্ধ করার আগে ভয় হত আমার - চোখ খুললে দুনিয়াটা একই থাকবে তো? চোখ বন্ধ করি, আর সময়ের স্রোত এসে ভাসিয়ে নেয় আমাকে। পালহীন, উদ্দেশ্যহীন। আব্বু আমাকে ছোটবেলায় রোমাঞ্চ উপন্যাস পড়ে শোনাতেন। 'এডভেঞ্চার' করে যারা, দুনিয়া জুড়ে ঘুরে বেড়ায়। শুনতে কি ভালো লাগত, রোমাঞ্চ হোতো। বিপদ মোকাবেলা করে এগিয়ে চলেছে অভিযাত্রীদল। মৃত্যুর হুমকি এসে অকস্মাৎ ইতি টেনে দিকে পারে যখন তখন, চোখের পলকে।

চোখের পলকে।

মানুষ বেঁচে থাকতে পারে, কারণ জীবনের একটা ধারাবাহিকতা আছে। একটা ঘটনার পর লজিকালি আরেকটা ঘটনা ঘটে। দিনের পর রাত আসে, রাতের পরে দিন। মানুষ প্ল্যান করে, সেই অনুপাতে কাজ করে, তারপর সেই কাজের ফল পায়। দুনিয়া আর দুনিয়ার মানুষ - এদের মাঝখানের যোগসূত্র হচ্ছে এই ধারাবাহিকতা। কিন্তু একটা মানুষের জীবনে যদি এই ধারাবাহিকতাই না থাকে? যদি প্রতিবার চোখের পলক ফেলার সাথে সাথে তার দুনিয়াটাও পালটে যেতে পারে - এমন একটা সম্ভাবনা কাজ করে? সেই জীবনটাকে কি আদৌ জীবন বলা যায়? সেই বেঁচে থাকার লাভ আছে কোন?

তারপর, পলক ফেললাম আমি।

রাস্তাঘাট নোংরা, বিভিন্ন রকমের শব্দ-চিৎকার ভেসে আসছে চারিপাশ থেকে। আশেপাশে মানুষ আর মানুষ, কিন্তু কেউ নজর দিচ্ছে না আমার দিকে। ঠেলাঠেলি করে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। কারুর কথা আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না। সবার চেহারা অন্যরকম, কাপড় চোপড় বিজাতীয়। আমার মাথায় কিছু ঢুকছে না। আমি তো এইমাত্র আব্বুর কাছে বসে ছিলাম, আব্বু গল্প বলবেন সেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কি হল? আমি এখানে কেন? আমি কি স্বপ্ন দেখছি? আমার আব্বু কই??

আমার প্রচণ্ড কান্না পেতে থাকে। আমি প্রথমে আটকাতে চেষ্টা করি, কারণ আব্বু বলেন আমি অনেক বড় হয়ে গেছি, আর বড়রা কাঁদে না, কিন্তু এটা মনে পড়তেই আমার আব্বুর কথা মনে পড়ে যায় আবার। আমি কাঁদতে শুরু করি।

তখনই মানুষটাকে দেখলাম আমি। অদ্ভুত কাপড় পরা এক লোক, চোখগুলো বাদামি। মানুষটা হাঁটু গেড়ে বসল আমার সামনে, তারপরে চোখে চোখ রেখে তাকাল। উষ্ণ, বন্ধুত্বপূর্ণ একটা ভাব আছে চেহারায়। আমি সাহস পেলাম একটু - অন্ততঃ কেউ তো আছে যে আমাকে দেখতে পাচ্ছে! মানুষটার দিকে তাকিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করলাম, বলতে চাইলাম আমি হারিয়ে গেছি, আব্বুকে খুঁজে দাও, কিন্তু গলা আটকে যাচ্ছিল কান্নায়।

'জল?' লোকটা ফিসফিস করে বলল।

মানুষটা আমাকে চেনে! আমি হারাই নি, একটা মানুষ আছে যে আমার নাম জানে! আমি চোখ মুছলাম, জিজ্ঞেস করলাম, 'আমি কোথায়? তুমি আমার নাম জানো কিভাবে?'

লোকটা হাত বাড়িয়ে দিল আমার দিকে। আমি হাতটা ধরলাম, তারপর হাতটা কেন্দ্র করে দাঁড়িয়ে ফোঁপানি থামানোর চেষ্টা করতে লাগলাম। লোকটা বলল, 'আমি স্থবির। তোমার সাথে দেখা হয়েছিল আমার অনেকদিন আগে। বুড়ি হয়ে গেছিলে তুমি তখন।'

আমি বুঝলাম না কথাটার অর্থ। মাথার ভেতরে পাক খেতে লাগল শব্দগুলো, কিন্তু লাভ হোলো না। 'মানে কি? আমি বুঝি না!' বুঝতে পারছি না কেন আমি? আমি আবার কাঁদতে লাগলাম।

লোকটা আমাকে এবার বুকের ভেতরে নিয়ে নিল। আমি চিনি না তাকে, কিন্তু আশ্চর্য, একটুও ভয় লাগল না আমার, বরঞ্চ মনে হল প্রচণ্ড শীতের দিনে গায়ে কাঁথা জড়িয়ে দিয়েছে কেউ। নিজেকে নিরাপদ লাগছিল আমার। লোকটা নরম গলায় বলল, 'তুমি বিশেষ একটা মানুষ, জল। আমার মতোন। সময় তোমাকে টানে। এখন থেকে যেখানেই যাবে, আমাকে খুঁজে নিও। আমি বদলাবো না। একই রকম থাকব, তোমার অপেক্ষায় থাকব। প্রমিস।'

আমার কোন ইচ্ছে নেই বিশেষ কেউ হওয়ার। কিন্তু যাই হোক, এই স্থবির নামের মানুষটা সব সময় এক থাকবে বলেছে। প্রমিস দিয়েছে। তার মানে আমি একা না। আমি হারিয়ে যাবো না। শুধু এই মানুষটাকে খুঁজে নিলেই হবে। একইসাথে স্বস্তি আর বিভ্রান্তি মিশে আমার বুকের ভেতরে ছিঁড়ে ছিঁড়ে যাচ্ছিল। আমি লোকটার কাঁধে ঝাঁপ দিয়ে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলাম।

তারপর, পলক ফেললাম আমি।

চোখ খুলে দেখি মানুষটা নেই। তার উষ্ণতা লেগে আছে। আমি দাঁড়িয়ে আছি একটা জঙ্গলের মধ্যে। রাত। তুষার পড়ছে আকাশ থেকে। মাটিতে পড়ে থাকা শাদা তুষার পা জমিয়ে দিচ্ছে আমার। স্থবির কই? আমি এদিক ওদিক দেখতে শুরু করলাম।

'স্থবির?' প্রথমে ফিসফিস করে ডাক। তারপর জবাব না আসায় চিৎকার, 'স্থবিইইইর্!'

কিচ্ছু না। শুধু শীতের মাঝখানে ঘুমিয়ে থাকা একটা জঙ্গলের শব্দ চারিপাশে। 'আমি কাঁপতে শুরু করলাম। আমার গায়ের কাপড়ে এই শীত মানবে না। জানি না কোথায় আছি, কিন্তু আমি জানি আমার কি করা উচিত। আমি এখন স্থবির নামের মানুষটাকে খুঁজব। তাকে খুঁজে পেলে আর শীত লাগবে না।

আমি জঙ্গলে হোঁচট খেতে খেতে এগোতে লাগলাম। শীত করতে লাগল আরো বেশি। কই সে? বলল যে আমার জন্য অপেক্ষা করবে? প্রমিস করল?

এভাবে কেটে গেল বহু বছর। এক সময় থেকে আরেক সময়ে ছিটকে ছিটকে যাচ্ছিলাম, আর তারই মাঝখানে তাকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা। যখনই তাকে খুঁজে পেতাম, চেষ্টা করতাম চোখের পলক না ফেলে থাকা যায় যতক্ষণ সম্ভব। ভয় করত - যদি হারিয়ে যাই, যদি আর কখনো তাকে খুঁজে না পাই, আর কখনো ফিরে আসতে না পারি! ভয় করত খুব। মাঝে মাঝে নিজেকেই খুঁজে পেতাম না, এত কম সময় পেতাম, তাকে পাওয়া তো দূর।

চেষ্টা করতাম তবুও। প্রতিটা চোখের পলক। প্রতিবার হারিয়ে যাওয়া। প্রতিবার নতুন করে খোঁজ শুরু।

কখনো তাকে আমি দেখতাম অনেক দূর থেকে। পাগলের মত চিৎকার করতে করতে তার দিকে দৌড়ে যাওয়ার চেষ্টা করতাম, সে হয়তো শুনে আমার দিকে তাকাত, তার বাদামি চোখ হেসে উঠত আনন্দে, কিন্তু কাছে পৌছানোর আগেই, সময়ের টানে হারিয়ে যেতাম। তবু এই ক্ষুদ্রস্য ক্ষুদ্র মুহূর্তগুলোই আমাকে বাঁচিয়ে রাখত, স্বপ্ন দেখাত। আমি জানতাম আমার জন্য সে এখনো অপেক্ষা করে আছে। আমাদের সুতো এখনো ছেঁড়ে নি।

মাঝেমধ্যে ভাগ্য সহায় হত। আমরা একসাথে হতাম, হাত ধরে উপভোগ করতাম কয়েকটা মুহূর্ত। কথা বলতাম, নিজেদের সঙ্গ উপভোগ করতাম। সবসময় যে সুযোগগুলো আসত তা না, কিন্তু আসতো। এই সুযোগগুলোকে কেন্দ্র করে আমি আমার জীবন গুছিয়ে নেবার কথা ভাবতাম। ধারাবাহিকতার কথা ভাবতাম। একটা মানব জীবনের স্বপ্ন...

এই স্বপ্ন আমাকে ভবিষ্যৎ ভুলিয়ে রাখত।

কারণ অনেক সময়েই আমি ভবিষ্যৎ দেখি। আমাদের ভবিষ্যৎটা অন্ধকার, বিষাদে ভরা। আমরা কত ভুল করি, সেসব ভুলের যে প্রতিক্রিয়া আছে- তা ভুলে যাই। ভবিষ্যতের দরজায় একটা মৃত দুনিয়া পড়ে আছে। যাকে খুন করেছি আমরা, আমাদের লোভ দিয়ে, আমাদের অহংকার দিয়ে। একটা বন্ধ্যা জমির মতন। আমার চোখের সামনে পলকে পলকে এই খুনটা সংঘটিত হতে থাকে, আমি থামাতে পারি না, কেবল দেখে যাই।

তারপর, পলক ফেললাম আমি।

বাতাসে নুইয়ে পড়ছে ধানক্ষেত। সোনালী সবুজ স্রোতে স্রোতে উত্তাল মাঠ। এত সব মৃত্যু দেখার পর এরকম জীবনের উচ্ছ্বাস আমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে ফেলে। আমি নিশ্চুপ হয়ে দেখি।

তারপর ও দাঁড়িয়ে আছে আমার পাশে। নাম ধরে ডেকে হাত বাড়াল। আমি উত্তর দিলাম। হাত টেনে নিলাম হাতে, আমার প্রিয় মানুষটাকে পেয়েছি।
ও আমার হাত শক্ত করে ধরল, যেন ভয় পাচ্ছে হারিয়ে যাবো, তারপর ফিসফিস করে বলল, 'অনেকদিন পর।'
'তাই কি?' আমি তাকালাম ওর দিকে, 'অনেকদিন? আমার বোধ ঠিক থাকে না।' আমি প্রায় পনেরো-ষোল পলক আগে ওকে দেখেছি, যদিও কাছে যেতে পারি নি, আর ও-ও বুঝতে পারে নি। তবু, মনে হচ্ছিল আমরা কাছাকাছিই আছি। যোগসূত্র ঠিক আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, 'কতদিন?'

ওর উত্তর এলো এত আস্তে, শোনাই কঠিন, 'তিনশো বছর।'
আমার বুক কেঁপে উঠল। মানুষটা কত কষ্ট পেয়েছে! 'এতোদিন?'
'হ্যাঁ।'
'শেষ কবে দেখেছিলে আমায়?'
'গ্রীসের এক ফলের বাজারে। তুমি কাঁদছিলে। বাচ্চা ছিলে তখন', ও আমাদের হাতের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে কি যেন দেখছে।

আমি মাথা নাড়ি, 'হু, তখনই প্রথম দেখেছিলাম তোমাকে আমি।' ও আমার হাতে আঙ্গুল দিয়ে নকশা কাটছে। আমি সেই প্রথমবারের পর শতবার ওকে দেখেছি, স্পর্শ করেছি অনেকবার। কিন্তু ওর কাছে এই স্পর্শটা এখনো নতুন।
-'ঠিক আছো তো তুমি?' ও জিজ্ঞেস করল আমাকে।
'এখন ঠিক আছি। তোমাকে দেখার পর।'
-'কেন?'

কি উত্তর দেব আমি? কিভাবে বোঝাই যে এই মানুষটা আমার সবকিছু, আমার কেন্দ্রবিন্দু, আমার বেঁচে থাকার একমাত্র কারণ? কি বললে সে বুঝবে, কতটা আপন সে আমার? আমি আস্তে আস্তে বলি, 'তুমি আমার ধ্রুবতারা। তোমাকে দেখে আমি পথ চিনি, নইলে হারিয়ে যেতাম কবেই!'
সে বলে, 'আর তুমি আমার সোনার হরিণ। তোমার জন্যেই পথে নামি।'

আমি কিছুক্ষণ নীরব থেকে বলি, 'শান্তি লাগছে আমার এখন। ভয় পেয়ে গেছিলাম।'
-'কেন?'
'এবার অনেক সামনে চলে গিয়েছিলাম আমি, স্থবির। বহু কষ্টে ফিরে এসেছি। দুনিয়া এরকম সুন্দর থাকবে না সবসময়। ভাঙ্গন আসছে।' আর সবচে বড় ব্যাপার, আমাদের কারুর ক্ষমতা নেই সেই ভাঙ্গন থামানোর। যা ক্ষতি হবার, হয়ে গেছে। এখন কেবল অপেক্ষা।
সে জিজ্ঞেস করে, 'কি হবে তখন?'
'সেসব নিয়ে ভাবব না আর। তুমি পাশে আছো, এটা সত্যি। এই মুহূর্তটা সত্যি। এই সত্য নিয়ে বাঁচতে চাই। যা হবার, হবে।'

আমরা হাতে হাত রেখে দাঁড়িয়ে থাকি। মুহূর্তটাকে আরেকটু বড় করার জন্যে আমি চোখ আর এক সেকেন্ড খুলে রাখার চেষ্টা করি, আমার চোখ দিয়ে দরদর করে পানি ঝরতে থাকে, আর এক সেকেন্ড, আর এক সেকেন্ড...

তারপর, পলক ফেললাম আমি।

এভাবে জীবন কেটে যেতে লাগল আমার। এক চোখের পলক থেকে আরেক চোখের পলকে। হারাও, খোঁজো, পাও, ভালবাসো। হারাও, খোঁজো, পাও, ভালবাসো। পুনরাবৃত্তি। স্থবির তার প্রমিস ভাঙেনি, ও একই আছে প্রতিবার। আমি আস্তে আস্তে পরিণত হতে লাগলাম। দুনিয়াকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন চশমায় দেখতে দেখতে একটা সময় বুঝতে পারলাম দুনিয়ার উদ্দেশ্য। কি সুন্দর একটা জায়গা, কি ভয়ানক নাজুক আর সুন্দর এই মানুষগুলো! আমার বিশ্বাস হতে চাইতো না যে এই মানুষেরা একদিন থাকবে না। আমি চেষ্টা করলাম বারবার ধ্বংসটা থামাতে। কিছু করতে। পরিবর্তন আনতে। মানুষকে পরিণতি বোঝাতে। কিন্তু আমার হাতপা বেঁধে রাখল প্রত্যেকবার এই পলকগুলো। এ যেন আমার অভিশাপ, সব দেখব, কিন্তু কাউকে দেখাতে পারব না।

স্থবির আমাকে ভালবেসেছে। আমি তারে। পলকের মাঝের মুহূর্তগুলোয় আমরা আমাদের জীবন বানিয়ে নিয়েছি। সময়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব মিলিয়ে কতটা সময় একসাথে কাটিয়েছি আমরা? এক ঘণ্টা? খুব বেশি হলে দেড়? সেটাই যথেষ্ট। একজন আরেকজনকে পেয়েছি, আর কিছু লাগে না।

ব্রহ্মাণ্ডের সমস্ত কাজ থেমে গেল একসময়। আমার যাত্রা শেষ হোলো। যা দেখার ছিল, দেখেছি, আমার কাজ শেষ। এবার বিশ্রাম।

শেষের আগে, আমাকে সুযোগ দেওয়া হল একটাবার তাকে দেখার। তারে প্রথমবারের মত দেখার।

তারপর, পলক ফেললাম আমি।

আমার সামনে বয়ে চলেছে বিশাল এক নদী, কুলুকুলু শব্দ তুলে। এক যুবক বসে আছে নদীর পাড়ে। স্রোতের ছন্দ দেখছে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে। আমি খোঁড়াতে খোঁড়াতে তার পাশে গিয়ে বসলাম।

'সুন্দর না?' জিজ্ঞেস করলাম আমি।
-'...হ্যাঁ', একটা ছোট্ট দ্বিধামাখা বিরতি। তারপর তার প্রশ্ন, 'আপনাকে ঠিক চিনলাম না।'

না চেনাই স্বাভাবিক, তার জন্যে এ তো কেবল শুরু! আমি মুচকি হেসে বললাম, 'তাই তো! ভুলেই গিয়েছিলাম যে এখনো দেখা হয় নি আমাদের।' আমি একটা হাত বাড়ালাম তার দিকে, ঠিক যেমন করে সে বাড়িয়েছিল গ্রীসের সেই ফলের বাজারে, 'আমি জল।'
সে এক মুহূর্ত ভেবে হাতে হাত রাখল, 'আমি স্থবির।'
-'জানি।' তুমি আমার ধ্রুবতারা। তুমি আমার সমগ্র অস্তিত্ব।
'জানেন কিভাবে? কখনো দেখা হয়েছে কি আমাদের?'

কি বলব তাকে? নিজের মানুষকে সত্য ছাড়া কিই আর বলা যায়? 'হ্যাঁ। অনেকদিন আগে, আজ হতে অনেক বছর পর।'
-'বুঝলাম না। মানে?'
'মানে হচ্ছে আমি তোমার মতই বিশেষ একজন, স্থবির। তোমার মতই, কিন্তু একটু আলাদা', আমিও স্রোতের নৃত্য দেখতে লাগলাম এবার।
-'তুমিও অমর?'
-'না। আমি সময়ের খাঁজেভাঁজে চলতে পারি। অতীতে যেতে পারি, ভবিষ্যতে যেতে পারি। সামনে পেছনে। কিন্তু নিজের ইচ্ছেমতন না', আমি আমাদের দুজনের কথা ভাবলাম। পৃথিবীর সকল বিশৃঙ্খলা নিয়ে তৈরি এক নারী, আর পৃথিবীর সকল অবিচলতায় সৃষ্ট এক পুরুষ - বসে আছে পাশাপাশি, নদের কিনারে। বুকের ভেতরে শান্তি লাগতে শুরু করল কেন যেন। বললাম, 'এতোটা অতীতে, এতোটা পেছনে আগে কখনো আসি নি আমি।'
-'ও। কেমন লাগছে অতীত?'
'তোমাকে পেলাম, ভালো লাগছে এখন। নিশ্চিত ছিলাম না পাবো কি না।' কি সৌভাগ্য আমার, শেষটায় তারে পেলাম।
-'আমরা কি...ভালো বন্ধু?'
না, স্থবির। স্রেফ ভালো বন্ধু না।

'তারচে বেশি কিছু।'

তারপর, পলক ফেললাম আমি।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০১৮ ভোর ৫:৪৪
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×