somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবকিছু ভার্চুয়াল হয়ে যাচ্ছে

২৪ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে কিছুটা আতঙ্ক মনে কাজ করলেও বাসায় বসে থাকার সময়গুলো কম-বেশী উপভোগ করেছি। যদিও আমাদের এলাকায় মৃত্যুর দীর্ঘ সারি দেখে মাঝে মাঝে ঘাবড়ে যেতাম। তবুও দীর্ঘদিন ধরে কাজ পড়াশোনা করতে করতে কিছুটা বিরক্তি চলে এসেছিলো। একটা লম্বা কর্ম-বিরতির ইচ্ছে থাকলেও নানা কারনে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। অবশেষে করোনার কারণে, প্রকাশনীর মতো বিলাসী প্রজেক্ট ব্যক্তিগত উদ্যোগে শুরু করতে পেরেছি। কিছু ব্যবসায়িক ধারনা মাথায় আসায় সেগুলো নিয়েও কাজ করছি। এক প্রকার ব্যক্তিগত ব্যস্ততায় ভালোই কেটেছে প্রথম ক'টা মাস। আর্থিক কোন সিরিয়াস ধরনের সংকটে না পড়ায়, ততটা খারাপ কাটেনি রাব্বুল আলামিনের দয়ায়। তবে বছরের মাঝামাঝি চলে যাওয়ার পর থেকে কিছুটা বিরক্তি আসতে শুরু করেছে।

মনে হচ্ছে জীবন থেমে গেছে। মনে হচ্ছে কাজে ফিরে যাওয়া উচিত, কিন্তু কাজ কোথায়?! সবতো বন্ধ, আমার পরিচিত কম-বেশী অনেকেই বাসায় থেকে কাজ করছে। আমার মন টানেনি। আমি আরো অনেক আগে থেকেই ভার্চুয়াল ভাবে বাসা থেকে কাজ করে অভ্যস্ত। কাজের ধরনের জন্য হয়তো আমার সুবিধেটা একটু বেশী। তবুও ইচ্ছে করেই, কোন নতুন চাকুরীতে এ্যাপ্লাই করিনি। গত সপ্তাহে মনে হয়েছে আর এভাবে বসে থাকার মানে নেই। কোন একটা কাজে যোগ দেয়া প্রয়োজন। যেই ভাবা, সেই কাজ।

গত সপ্তাহে কয়েকটা সাইটে রেসিউমি আপডেট করে জমা দেয়ার পর থেকেই ফোন আসা শুরু করেছে। প্রায় প্রতিদিনই, কম বেশী ফোন আসে, কিন্তু অপরিচিত নাম্বার হলে আমি সাধারণত কল রিসিভ করিনা। আজ দুপুরের লাঞ্চ করতে যাওয়ার আগেই ক্যালেফোর্নিয়া থেকে কল এলো। রিসিভ করতেই মেয়েলি কন্ঠস্বর, জানতে চাইলো এটা আমার নাম্বার কি না! বললাম হ্যাঁ। কিছু কথা হতেই বুঝতে পারলাম, তারা অনলাইনে আমার রেসিউমি দেখে আমাকে কল করেছে। জানতে চাচ্ছে আমি কাজ করতে আগ্রহী কিনা! মন চাইছিলো না "হ্যাঁ" বলি, অনেকটা মুখ ফসকে বলেই ফেললাম, "নির্ভর করছে আপনারা কত বেতন দিতে চাচ্ছেন তার উপর"। এরপর কথা যতটুকু এগুলো তাতে আর না করতে পারিনি।

সবকিছু বিবেচনায় অফারটা বেশ ভালো মনে হয়ছে। যেটাতে সবচেয়ে বেশী অবাক হয়েছি সেটা হলো, তারা বলছে এই জব পজিশনটা সব সময়ই "রিমোট" পজিশন থাকবে, তাই করোনা কোন ইস্যু নয়। ব্যাপারটা বুঝতে দেরী হয়তো হয় নি, কিন্তু এই প্রথম কোন জব অফার পেলাম যেখানে কোনদিনও অফিস যেতে হবে না। কোনদিনও অফিস কলিগদের সাথে কোন রেস্তোরায় গিয়ে এক সাথে লাঞ্চ করতে হবে না। কোনদিনও ক্রিসমাাসের আগে হলিডে উপলক্ষ্যে বা কোন কলিগের বার্থ ডে পার্টিতে যেতে হবে না। অথচ আমি এগুলোতেই বেশ ভালোভাবে অভ্যস্ত। আরো বেশ কিছু জবের অফার নিয়ে চিঠি চালাচালি হচ্ছে, সবগুলোই নিউ ইয়র্কে এবং সবগুলোতেই আপাতত রিমোট কিন্তু সবকিছু ঠিকঠাক হলে পরে অফিসে গিয়ে কাজ করতে হবে। আমি এমনটাই চাচ্ছিলাম। ভাবছি, করোনা কিভাবে আমাদের অস্বাভাবিক প্রফেশনাল লাইফকে স্বাভাবিক বানিয়ে দিলো!

সবকিছু কেমন যেন ভার্চুয়াল হয়ে যাচ্ছে! তাহলে কি এখন থেকেই এই অস্বাভাবিকতা নতুন স্বাভাবিকতায় রূপ নেবে? আমিতো দিন শেষে আবারো অফিসে যেতে চাই, আবারো অফিস শেষে আড্ডা কিংবা কোন পার্টিতে যেতে চাই। তার কি হবে?!
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১০
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×