প্রিয়তম অপ্রিয়,
পত্রের সম্বোধনে তোমাকে কেন প্রিয়তম বলিলাম তাহা তুমি নিঃশ্চয় জানিয়া থাকিবে। আমি জানি তোমার না জানিবার মত বিষয় কিছু হইতে পারে না। তবুও বলি, তোমার সকল কিছুই আমার কাছে এতোটাই দূর্বোধ্য, তাহার সিমারেখা বলিয়া যে কিছু আছে , তাহা আমার জ্ঞানের ক্ষুদ্র পরিসীমার কল্পনায় আনা এতদকাল সম্ভবপর হয় নাই। মানুষ যাহা কিছু জানে না, তাহাকে কেউ ভয় পায়, কেহ ভালো মনে করে ভালোবাসে।তুমি ইহার সকল আকাঙ্ক্ষা জ্ঞানের পরিসীমা টানিয়া দিয়া শুধু ইচ্ছাতেই স্থগিত করিয়া দিয়াছ।তাই অজানা বলিয়াই শুধু নয় তোমার সকল ক্ষমতার আধারও তোমাকে প্রিয়তম বলিতে বাধ্য করিয়াছে। তুমি সত্যই আমার আতিপ্রিয় অপ্রিয়।
তুমি অনাদি, এক, অদ্বিতীয়, সর্বক্ষমতাধর সৃষ্টিকর্তা। আর কেনই বা তুমিই সর্বেসর্বা তাহাও আমার অজানা। জানা থাকিবার কোন কারণ তুমি মনুষ্যকুলের ক্ষুদ্রবুদ্ধিতে বপন করিয়াছ কি’না তাহাও আমার অজানাই রহিয়াছে।
বলিতে দ্বিধা নেই তুমি যদি সত্য সত্যই ঈশ্বর হইয়া থাকো, তবে জানিয়া রাখো, মাতৃগর্ভের কালো অন্ধকার হইতে আজ অবধি তোমার প্রতি ক্ষোভ জমা হইতে হইতে আজ চরম ঘেন্নায় তা রুপান্তরিত হইয়াছে। ভাবিয়া অবাক হইয়া যাই, কত মধুর নিঃষ্ঠুরতার ছরিই না তুমি ঘুরাইতেছ সৃষ্টির শুরু হইতে।কত হাজার সহস্র কোটি জীবে প্রান দিয়া পুতুল বানাইয়া উপহাস করিয়া মজা লইতেছ। কি চরম উপহাসই পুনঃপুন অবিরত করিয়া চলিয়াছ।
ঠিকই ধরিয়াছ, তোমার অজানার ভয়ে আমি ভীতু নই।আমি আস্তিক, আমি জানি তুমি আছ। তোমার সর্বক্ষমতা আমি মানিয়া লইয়াছি।আক্ষেপ শুধু এইটুকু, তোমাকে যাহারা ঈশ্বর বানাইল তাহাদের প্রতি তোমার উদাসীনতার স্পর্ধা দেখিয়া। আজ মানুষকুল যদি বলিয়া উঠে তুমি নাই, তাহলে তোমার অস্তিত্ত্ব কি থাকবে মনে করিয়াছ? তুমি আমাদের শুধু ভাবিবার অধিকার দিয়াছ, করিবার অধিকার দিতে তুমি যে ভয় পাহিয়াছ তাহাও যে আমি আমার নিকৃষ্ট মনে অনুবাদ করিয়া পাহিয়াছি। বুঝিয়াছি, তুমি ভীরুতার সর্বোচ্চ উদাহরণ। আর যদি বলি এ ভুল বোঝা না ভাঙিয়ে তুমি প্রমাণ করিয়াছ তোমার অস্তিত্ত্ব শুধুই কল্পনাতে। হ্যাঁ তুমি ভয় পাহিয়াছ। তুমি ভাবিয়াছ , করিবার স্বাধীনতায় জীবকুল তোমার শৌর্য ভূলুন্ঠিত করিয়া ফেলিবে।
তোমার নিচুতা উপলব্ধি করিইয়া আজ আমি নিচু হইয়াছি।এই ভাবিয়া যে, আমি তোমাকে ঈশ্বর ভাবি।
পরিশেষে বলি, তুমি যাহা কিছু দিয়াছ তাহা না দিলেও পারিতে।আর যদি কিছু দিয়েই থাকো তাহার পিছনে শর্ত জুরিয়া দিলে কেন? তুমি না উদার? তুমি আমার কাছে নিঠুর মহাজন বই আর কিছুই না।যাহা কিছু দিয়াছ তাহার দেনা তবে কেন তোমার গুনগানে শুধিতে হইবে? তুমি ঋপু দিয়াছ আবার কর্ম শিখাইয়া অলসতাকে উপহাস করাইতে শিখাইয়াছ।
{পরবর্তীটুকু পরবর্তী পোষ্ট এ দিব}

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




