somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভুতুড়ে জাহাজ........................ B:-) B:-) B:-)

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রহস্যময় পৃথিবীতে রহস্যের কোনো শেষ নেই। এই অশেষ রহস্যের একটি সম্ভবত 'ভূত'। ভূত আছে,নাকি নাই এ নিয়ে যখন সহস্রাব্দ পুরনো বিতর্ক চলে আসছে, তখন আবার নানান অলৌকিক ঘটনা ঘটছে আমাদের চার পাশে। এসব ঘটনা এমনই কিম্ভূত যে, এগুলোর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না। ফলে সবগুলোকে বলা হয় ভুতুড়ে কাণ্ডকীর্তি। এই ভুতুড়ে কাণ্ডের হাত থেকে রেহাই পায়নি গভীর সমুদ্রে ভেসে চলা জাহাজগুলোও। কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই রহস্যজনকভাবে হারিয়ে গেছে অনেক জাহাজ, নিশ্চিহ্ন হয়েছে শত শত যাত্রী। আবার হারিয়ে যাওয়া এসব জাহাজ প্রায়ই ভেসে ওঠে সমুদ্রের বুকে!
কুইন মেরি


ভুতুড়ে জাহাজ হিসেবে খ্যাতি আর আলোচনার শীর্ষে পেঁৗছালেও এমন সব কাণ্ডকীর্তির আগ থেকেই বিলাসবহুল জাহাজ হিসেবে আলাদা নাম করেছিল বৃহৎ জলযান কুইন মেরি। সুবিশাল অ্যাটল্যান্টিক পাড়ি দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত জাহাজটি ১৯৩৬ সাল থেকে সমুদ্রের বুকে চলাচল শুরু করে। আর যাত্রা শুরুর অল্পদিনের মধ্যেই এটি ক্যালিফোর্নিয়ার সবচেয়ে বড় সমুদ্র রুটে সবচেয়ে বেশি চলাচলের খেতার অর্জন করে। এই জাহাজটি একদিকে যেমন বৃহৎ, আধুনিক এবং বিলাসবহুল ছিল, ঠিক তেমনি এটি তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে দ্রুতগামী জাহাজ ছিল। কুইন মেরি জাহাজটি মাত্র পাঁচ দিনে সুবিশাল অ্যাটল্যান্টিক পাড়ি দিতে পারত। যে জাহাজের প্রাপ্তির খাতায় এত সব অর্জন, সেটি কিন্তু আস্তে আস্তে প্রশ্নবিদ্ধ হতে শুরু করে। কারণ যাত্রা শুরুর একেবারে প্রথম দিন থেকেই জাহাজটিতে অদ্ভুত অদ্ভুত সব কাণ্ড ঘটতে শুরু করে।যাত্রার প্রথম দিনেই জাহাজটির ক্রু, যাত্রীসহ প্রত্যেকেই এর ভেতরে রহস্যময় ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন বলে দাবি করেন।কিন্তু শুরুর দিকে এদের কথা কেউ সেভাবে পাত্তা দেয়নি। কুইন মেরির এই রহস্যময় আচরণের কথা সর্বপ্রথম বড় পরিসরে তুলে ধরেন কুইন মেরিতে চাকরিরত ১৭ বছরের এক যুবক। কুইন মেরির ইঞ্জিন রুমে কয়লা সরবরাহ করা ছিল তার কাজ। সে জানায়, জাহাজটির করিডরে একটি অস্পষ্ট ছায়াকে ব্যাগ পাইপ নামক বাঁশি বাজাতে বেশ কয়েকবার দেখা গেছে। এরপর অনেকেই নড়েচড়ে বসেন। সবার সতর্ক দৃষ্টি থাকল কুইন মেরির দিকে। তাই বলে এদের যাত্রা কিন্তু বন্ধ হয়নি। এ ছাড়াও সুইমিংপুলে সাঁতার কাটার সময় অনেক যাত্রীই সাদা পোশাকধারী একজন নারী এবং আট থেকে নয় বছরের একটি মেয়েকে ডেকের ওপর দিয়ে ভেসে ভেসে চলতে দেখেছেন। জাহাজটির কেবিনে প্রেতাত্দা দেখা ও রহস্যময় শব্দ শুনেছেন বলেও দাবি করেন অনেকেই।কুইন মেরিকে ঘিরে এমন রহস্যময় প্রশ্ন আর অভিজ্ঞতার পাল্লা দিনের পর দিন কেবল ভারীই হতে থাকল কিন্তু কেউই এগুলোর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।তবে দিনের পর দিন জাহাজ বিষয়ে এমন অভিজ্ঞতার পাল্লা ভারী হওয়ায় আস্তে আস্তে সারা বিশ্বেই কুইন মেরির এই রহস্যময়তার গল্প ছড়িয়ে পড়ে।রহস্যময় এ জাহাজটি আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে একে সৈন্যদের জাহাজে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ কিউরা কেরার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে একবার কুইন মেরির প্রায় ৩০০ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটেছিল।ধারণা করা হয়, এসব মৃত ব্যক্তির আত্দাই জাহাজটিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পরবর্তীতে ১৯৬৭ সালে দ্য সিটি অফ লং বিচ নামক একটি প্রতিষ্ঠান কুইন মেরিকে কিনে নেয় এবং জাহাজটিকে একটি ভাসমান হোটেল হিসেবে গড়ে তোলা হয়। কিন্তু হোটেল হওবার পরও এখানে রহস্যময় এ ঘটনাগুলো বারবার ঘটতে থাকে।

লেডি লোভিবোন্ড


ভুতুড়ে জাহাজের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের দিনপুরনো ঐতিহ্য রয়েছে। বিশ্বের আলোচিত সব ভুতুড়ে জাহাজের অধিকাংশই যুক্তরাজ্যের। আর এর মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত একটি জাহাজ হচ্ছে লেডি লোভিবোন্ড। এই জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিলেন সাইমন রিড। ১৭৪৮ সালে ক্যাপ্টেন সাইমন রিড তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে পর্তুগালের উদ্দেশে রওনা হন। উদ্দেশ্য ছিল জাহাজে চড়ে নতুন স্ত্রী ও অন্যান্যকে নিয়ে নিজের বিয়ে উদযাপন। কিন্তু জাহাজের আরেক কর্মকর্তা জন রিভারস সাইমনের স্ত্রীর প্রেমে পড়ে যান। তিনি নব-দম্পতির প্রেম সহ্য করতে পারলেন না। ফলে জন সাইমনকে খুন করে জাহাজের দায়িত্ব নিয়ে নেন। এরপর রহস্যজনকভাবে একে একে মারা যায় সবাই। বলা হয়ে থাকে, প্রতি ৫০ বছর পর পর নাকি জাহাজটির প্রেতাত্দা সমুদ্রে ভেসে ওঠে। সেই ভেসে ওঠে মৃত মানুষগুলোও।

এলিজা বেটেল


১৮৫২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানায় যাত্রা শুরু করা এলিজা বেটেল ছিল ইন্ডিয়ানা রাজ্যের মেয়র এবং অন্যান্য সম্মানিত ব্যক্তির বিলাস ভ্রমণের জন্য তৈরি বিশেষ একটি জাহাজ। ১৮৫৮ সালে ফেব্রুয়ারি মাসের এক শীতের রাতে জাহাজটিতে দুর্ঘটনা ঘটে যায়। জাহাজের প্রধান ডেকে আগুন লেগে দ্রুত সেটি গোটা জাহাজে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই কাঠের আবরণে মোড়া জাহাজটি ভস্মীভূত হয়ে পড়ে। ঝড়ো বাতাসের কারণে আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ফলে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় ১০০ যাত্রীর মধ্যে ২৬ জন মারা যান। মুহূর্তের মধ্যেই সমুদ্রের ২৮ ফুট নিচে ডুবে যায় জাহাজটি। লোকমুখে শোনা যায়, পূর্ণিমার রাতে জাহাজটিকে পানির নিচ থেকে জ্বলন্ত অবস্থায় ভেসে উঠতে দেখা যায়। ভেতর থেকে ভেসে আসে গানের শব্দ। এ এক অপার রহস্য।

এমভি জয়িতা


আরেকটি বিলাসবহুল ভুতুড়ে জাহাজ ছিল এমভি জয়িতা। এই জাহাজটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে তৈরি তৎকালীন সময়ের অন্যতম আধুনিক প্রযুক্তির একটি বিলাসবহুল মোটরচালিত নৌযান। জাহাজটির নকশা এমন ছিল যে, চাইলেও ডোবানো সম্ভব নয়। ১৯৩১ সালে রোনাল্ড ওয়েস্ট নামের এক চলচ্চিত্র পরিচালকের নির্দেশে এটি বানানো হয়। ২য় বিশ্বযুদ্ধে নৌযানটি কাজে লাগানো হয়। ১৯৫৫ সালে ২৫ জন যাত্রী নিয়ে টোকিলাও দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা হয় জয়িতা। রওনা হওয়ার দুই দিনের মধ্যে গন্তব্যে পেঁৗছার কথা থাকলেও জয়িতার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পাঁচ সপ্তাহ অনুসন্ধানের পর নৌযানটি অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেলেও মেলেনি কোনো যাত্রী। অক্ষত জাহাজ থেকে ভুতুড়ে ঘটনার মতোই গায়েব হয়ে যায় যাত্রীরা। কারও মতে, ক্রুদের বিদ্রোহের বলি হয়েছিল যাত্রীরা, আবার কারও মতে, ইঞ্জিন কক্ষে পানি ঢুকে যাওয়ায় পালিয়ে যায় সবাই।
curtsy: Bangladesh pratidin
Google
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×