বাবার পেশা ছিল কামারের কাজ। বাবাকে সাহায্য করার জন্যই তাকে উঠতে হতো সকাল সকাল, কারন কাজ শেষে আবার স্কুলেও যেতে হবে। এত পরিশ্রম করেও আর চলছিল না তাদের। সংসারের বোঝা দিন দিন বেড়েই চলতে থাকে। বাবা ১৯০৬ সালের ১৭ই নভেম্বর তারিখে একটা সাইকেল মেরামতের দোকান চালু করে। গ্রামের পরিবেশ আর ভঙ্গুর অর্থনীতির সাথে লড়াই করে টিকে থাকার প্রানান্তকর চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়না। বাবার কষ্টের অংশীদার হতে সইশিরো মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে পারি জমায় টোকিওতে। আশা একটাই- একটা চাকরী। অনেক ঘুরে ফিরে খেয়ে না খেয়ে ক্লান্ত শরীরে ঘুমিয়ে যেত, পরদিন আবার পথচলা… একটা চাকরির আশায়। অবশেষে টোকিওর একটা গ্যারেজে কাজ করার সুযোগ পায় ১৯২২ সালে। ১৯২২ সাল থেকে ১৯২৮ সাল পর্যন্ত অত্যন্ত মনযোগ দিয়ে গাড়ী মেরামতের কাজ শেখে এবং দীর্ঘ ৬ বছর পর নিজেই একটি ছোট গাড়ী মেরামতের কারখানা খুলে বসে। যদি একেই ভাগ্য বলে থাকে তবে তাই… সইশিরোর ভাগ্য দ্রুতই বদলাতে থাকে। সেই ছোট্ট কারখানাটি ধীরে ধীরে রূপ নেয় গাড়ীর পিষ্টন রিং বানানোর কারখানায়। সে তার কারখানার নাম দেয় “The Tokio Seiki Co. Ltd”।
এবার বোধহয় একটু ঝামেলাই বাঁধলো তার ভাগ্যের সাথে। দীর্ঘ সাত বছর কোম্পানীটি চালিয়েও তেমন ভাল কিছু করতে পারলোনা সইশিরো। তবে সে হতাশ হবার পাত্র না, সে ছিল অনেক চিন্তাশীল মানুষ। মাত্র ১৫ বছর বয়সে ঘর ছেড়েছে, ছেড়েছে লেখাপড়াও, তারপরেও সে বেশ বুঝতে পেরেছিল যে নিশ্চই তার কাজ শেখায় কোন ঘাটতি আছে। তাই ১৯৩৫ সালে সে কারিগরি স্কুলে ভর্তি হয়। যে স্বপ্নের জন্য সে ঘুমাতে পারতোনা সেটা ছিল একটা কারখানা, যেখানে বানানো হবে গাড়ীর পিষ্টন রিং।

সে স্কুল তাকে অনেক কিছুই দিয়েছে। সে এতটাই মনযোগ দিয়ে কাজ শেখে যে পরবর্তীতে তার কারখানায় শুধু গাড়ী নয় মোটর সাইকেল এমনকি এরোপ্লেনেরও পিষ্টন বনানো শুরু হয়। ১৯৪৮ সালের দিকে সে চিন্তা করলো যে, ব্যাবসাই যখন করতে হবে তখন ভিন্ন রকম কিছু করলে মন্দ হয়না। সে চিন্তা করলো মোটর সাইকেলের চাহিদা এখন অনেক বেশি এবং খুব কম কোম্পানীই এটি তৈরি করে। সে খুব দ্রুত মাত্র ১৩ জন কর্মচারী নিয়ে হামামাতসুতে মোটর বাইক তৈরীর কোম্পানী চালু করে। যে ছাউনিতে তারা কাজ করতো তার আয়তন ছিল মাত্র ১২ বাই ১৮ ফুট।
এক বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম করে তারা তাদের প্রথম মোটর সাইকেল বাজারে আনে যার নাম Dream-D এবং দুই বছর পর তারা ১৫০০ সিসির E-Dream নামের আরকটি মডেল বাজারে আনে। প্রতিটি মডেল থেকে তারা অভুতপূর্ব সাফল্য পায়। সইশিরো আর পেছনে ফিরে তাকায়নি। ১৯৫৯ সালে সে একটি অনেক বড় কারখানা স্থাপন করে যেখানে প্রতি বছর ৫০০০০০ ইউনিট মোটর সাইকেল বানানো যাবে।
এত সফলতার পর সে ভাবতেই পারে তার নিজ দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশের বাজারে প্রবেশ করতে। কারন তার মোটর সাইকেলগুলো চালানোয় ছিল সহজ, দামে সস্তা এবং টেকসই। তার পরামর্শকরা তাকে পরামর্শ দেয় প্রথমে এশিয়া এবং ইউরোপে বাজার স্থাপন করতে তারপর আমেরিকাতে। কারন আমেরিকার মানুষ মোটর সাইকেলে চড়তে অভ্যস্থ নয়।
বাকীটা পড়তে এখানে ক্লিকান

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



