চাঁদের কতগুলি ডাকনাম আছে জানেন?
অম্ভোজ, অর্ণবোদ্ভব, ইন্দু, উড়ুপ, ঋক্ষেশ, এণকতিলক, ওষধিনাথ, ওষধিপতি, কলাধর, কলানাথ, কলানিধি, কলাভৃৎ, কান্তিভৃৎ, কুমুদনাথ, কুমুদপতু, কুমুদবান্ধব, কৌমুদীপতি, ক্ষীরাদ্ধিজ, ক্ষীরোদনন্দন, চন্দ্র, চন্দ্রক, চন্দ্রমা, চন্দ্রিমা, চাঁদ, ছায়াঙ্ক, তারাধিপ, তারাধিপতি, তারানাথ, তারাপতি, তারাপীড়, তুহিনাংশু, দ্বিজপতি, দ্বিজরাজ, দ্বিজেন্দ্র, নক্ষত্রপতি, নক্ষত্রাধিপতি, নক্ষত্রেশ, নিশাকর, নিশানাথ, নিশাপতি, নিশামণি, নিশারত্ন, নিশিকান্ত, নিশিনাথ, নিশিপতি, পক্ষচর, পক্ষজ, পক্ষধর, বিধু, মৃগাঙ্ক, যামিনীকান্ত, যামিনীনাথ, যামিনীপ্রকাশ, রজনীকর, রজনীকান্ত, রজনীপতি, রজনীরাজ, রজনীশ, রজনীসখা, রাকাপতি, রাকেশ, রাত্রিকর, রাত্রিমণি, রেবতীরমণ, শশধর, শশবিন্দু, শশভৃৎ, শশলক্ষণ, শশলাঞ্ছন, শশাঙ্ক, শশী, শিতরশ্মি, শীতকিরণ, শীতময়ূখ, শীতাংশু, শ্বেতধাম, সিতকর, সিতরশ্মি, সিতরুচি, সিতাংশু, সুধধার, সুধাংশু, সুধাকর, সুধাধামা, সুধানিধি, সুধাবর্ষী, সুধাময়, সোম, হরিণাঙ্ক, হিমকর, হিমকিরণ, হিমধামা, হিমাংশু ইত্যাদি।
চাঁদ নিয়ে ঘাটাঘাটি করার সময় হঠাৎ মাথায় এলো রবিবাবুর কোন কোন ছড়া-কবিতা-গানে চাঁদের উপস্থিতি আছে তা খুঁজে দেখি। প্রথম ৮টি পর্বে সেগুলি দেখিয়েছি। এরপর চাঁদের সমার্থক শব্দ চন্দ্র নিয়ে কবিতাংশ ৯ থেকে ১৫ তম পর্ব পর্যন্ত দিয়েছি। তারপর চাঁদের সমার্থক শব্দ শশীকে উপস্থাপন করেছি ১৬ ও ১৭তম পর্বে। ১৮তম পর্বে ছিলো ইন্দু নামের কবিতাংশ গুলি। আর সব শেষে ১৯ মত পর্বে ছিল চাঁদের আরেক নাম বিধু সংক্রান্ত কবিতাংশ। সব মিলিয়ে ১৯ পর্বে ১৮১টি চন্দ্র পংক্তি দিয়েছে।
এবার কাজী নজরুল ইসলাম তার কোন কোন ছড়া-কবিতা-গানে চাঁদেকে তুলে এনেছেন তার খোঁজ করলাম। প্রথম ১৪টি পর্বে চাঁদ নিয়ে কি কি পেয়েছি সেগুলি দেখিয়েছি। এরপর চাঁদের সমার্থক শব্দ চন্দ্র নিয়ে কবিতাংশ হাজির করছি।
০১।
গম্ভীর আরতি নৃত্যের ছন্দে।
হে প্রভু! তোমারে প্রকৃতি বন্দে।।
চন্দ্র সূর্য কত শত গ্রহ তারা
তোমারে ঘিরি’ নাচে প্রেমে মাতোয়ারা,
অনন্ত কাল ঘোরে ধূমকেতু উল্কা আগুন জ্বালায়ে বুকে উগ্র আনন্দে
লীলায়িত সিন্ধু অবোধ উল্লাসে,
মেঘ হ’য়ে উড়ে যেতে চায় তব পাশে।
নব নব সৃষ্টি বৃষ্টিধারার প্রায়
সেই ছন্দের তালে অবিরাম ঝ’রে যায়,
ধরণীর গোপন অনুরাগ ভক্তি ফুটে ওঠে নীরব পুষ্প-সুগন্ধে।।
০২।
আসিবে তুমি, জানি প্রিয়!
আনন্দে বনে বসন্ত এলো –
ভুবন হ’ল সরসা প্রিয়–দরশা, মনোহর।।
বনান্তে পবন অশান্ত হ’ল তাই, কোকিল কুহরে,
ঝরে গিরি–নির্ঝরিণী ঝর ঝর।।
ফুল্ল–যামিনী আজি ফুল–সুবাসে
চন্দ্র অতন্দ্র সুনীল আকাশে,
আনন্দিত দীপান্বিত অম্বর।।
০৩।
কত নিদ্রা যাও রে কন্যা জাগো একটু খানি
যাবার বেলায় শুনিয়া যাই তোমার মুখের বাণী।।
নিশীথিনীর ঘুম ভেঙে যায় চন্দ্র যখন হেসে তাকায় গো
চাতাকিনী ঘুমায় কি গো দেখলে মেঘের পানি।।
০৪।
সোনার মেয়ে! সোনার মেয়ে!
তোমার রূপের মায়ায় আমার নয়ন- ভুবন গেল ছেয়ে'।।
ঝরে তোমার রূপের ধারা—
চন্দ্র জাগে তন্দ্রাহারা,
আকাশ-ভরা হাজার তারা তোমার মুখে আছে চেয়ে'।।
০৫।
মধুর আরতি তব বিশ্ব সভাতে
নিত্য হেরি নাথ সন্ধ্যায় প্রভাতে।।
চন্দ্র, সূর্য, দীপ গগন-থালা
শ্বেত মেঘ-চন্দন, তারার মালা
মলয় সমীর পূজা-ধূপের গন্ধ
ঝরা ফুল-অঞ্জলি ধরণীর হাতে।।
০৬।
টইটুম্বুর ঝিলের জলে
কাঁচা রোদের মানিক ঝলে
চন্দ্র ঘুমায় গগন-তলে সাদা মেঘের আঁচল পেতে।।
০৭।
আমার বিফল পূজাঞ্জলি অশ্রু-স্রোতে যায় যে ভেসে
তোমার আরাধিকার পূজা হে বিরহী, লও হে এসে॥
খোঁজে তোমায় চন্দ্র তপন
পূজে তোমায় বিশ্বভুবন,
আমার যে নাথ ক্ষণিক জীবন মিটবে কি সাধ ভালবেসে॥
০৮।
সখি গো বৃথা প্রবোধ দিস্নে ললিতে
কোন্ প্রাণে তুই বলতে পারিলি মোর শ্রীকৃষ্ণে ভুলিতে।।
সেই নন্দপুরের চন্দ্র বিহনে নাহি আনন্দ মোর।
০৯।
তোমার প্রিয় নামে, হে বঁধূ,
ফুলের বুকে পুরে মধু।
তোমার নামের মাধুরি মাখি’
গান গেয়ে যায় বনের পাখি,
নিখিল পাগল ও নাম ডাকি’ — কোটি চন্দ্র তপন।।
১০।
নৃত্যময়ী নৃত্যকালী নিত্য নাচে হেলে দুলে।
তার রূপের ছটায়, নাচের ঘটায় শম্ভু লুটায় চরণ-মূলে।।
সেই নাচেরি ছন্দ-ধারা,
চন্দ্র, রবি, গ্রহ, তারা,
সেই, নাচনের ঢেউ খেলে যায় সিন্ধু জলে পত্রে ফুলে।।
আগামী পর্বে আরো ১০টি চন্দ্র পংক্তি থাকবে।
=================================================================
সিরিজের পুরনো পর্বগুলি দেখতে -
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০১, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০২, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৩, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৪
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৫, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৬, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৭, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৮
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৯, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১০ , নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১১ , নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১২
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১৩ , নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১৪
রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০১, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০২, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৩, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৪, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৫, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৬, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৭, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৮, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৯, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১০, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১১, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১২, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৩, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৪, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৫, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৬, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৭, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৮, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৯।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:১০