আজ হতে বহু বছর পর পূর্বে বাংলার ঘরে ঘরে ছিলো যৌথ পরিবার। দাদা, দাদী, জেঠা-চাচা, জেঠী-চাচী, মা-বাবা, ফুফু, ভাই-বোন সবাইকে নিয়ে। সাথে থাকতো পরিবারের গৃহভূত্যগন, যারাও ছিলো একান্ত আত্বীয়ের মতোই।
সেই প্রথা ভেঙ্গে দিতে প্রচন্ডভাবে আন্দোলন শুরু করলো নাটক, সিনেমা ও কিছু পরিচিত বুদ্ধীজীবী ।
৭০/৮০ দশকে প্রত্যেকটি নাটক সিনেমার মূল বিষয় ছিলো যৌথ পরিবার ভেঙ্গে কিভাবে সিঙ্গেলতে পরিনত করা যায়। কিভাবে সংসারে সবাইকে ঠকিয়ে নিজে সুখী হতে হয়, প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় পরিবারের বড়দের অপমান করে তাদের কর্তৃত্ব কিভাবে শেষ করতে হয়, শিখানো হয় সবার মঙ্গল বাদ দিয়ে কিভাবে একা থাকা যায়, কিভাবে শুধু নিজেকে ভালো রাখতে হয় সেই সবই শুধু শিখানো হয়।
এরপরের ধাপ আরোও ভয়ংকর। প্রেম ভালোবাসার দিক্ষা দেওয়া হয় যুবক-যুবতীদের। সেই প্রেমের টানে কিভাবে বাবা-মা সহ পরিবারের বড়দের অপমান অপদস্থকরতে হয় তাই শিখানো শুরু করা হয়। কিভাবে পালিয়ে, বাবা-মাকে না জানিয়ে বিয়ে, তাদের পছন্দকে তোয়াক্কা না করে নিজের পছন্দকে প্রাধান্য দেওয়া, বাবা-মা ও পরিবারের সম্মান, ইচ্ছা, অধিকারকে অস্বিকার করার প্রয়াস। ফলশ্রুতিতে আজ দেশে সর্বত্রই সিঙ্গেল পরিবার ও প্রেমের বিয়ে সর্বত্র। আর আজ বিংশ শতাব্দিতে এসে বহু বিবাহের জায়গায় দখল করেছে বহু প্রেম। এক এক জন তরুন-তরুনী, যুবক-যুবতী ডজন ডজন প্রেম করে। ভালোবাসার চেয়ে সেই প্রেম শারীরিক সম্পর্কই বেশী। বর্তমান ট্রেডিশন হচ্ছে কথায় কথায় ব্রেক আপ, আবার কথায় কথায় প্রেমে পরে যাওয়া। প্রেমে পড়তেও বেশী সময় লাগে না, আবার ব্রেক আপ হতেও সময় লাগে না। সকালে প্রেম, বিকালে ব্রেক আপ! হওয়ার মতো অবস্থা চলছে। অন্তত চার পাচটা বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ড না থাকলে ইজ্জত থাকে না এখন আর।
আর এসব অধ:পতনের মূলে আছে নাটক ও সিনেমাগুলো। এসব বাজে কাজে ব্যাপক উৎসাহ যুগিয়েছে তারা, কিছু অভিভাবক নামক জানোয়ার ও অশিক্ষিত সমাজপতিগন।
কালের বিবর্তনের মতো নাটক সিনেমাগুলোতে প্রেম আর পালিয়ে বিয়ে করা ছাড়া আর কিছু নাই। রঙিন স্বপ্নে বিভোর তরুন তরুণিরা রঙিন পর্দায় এসব দেখে আর মাতোয়ারা হয়ে যায় অবৈধ কাজে।
এক সময় অভিভাবকদের মুখের দিকে চেয়ে যে বাঙ্গালী যুবকরা কথা বলতে পারতো না, সেই যুবকরা আজ বাবা-মাকে এসে বলে এ আমার বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ড। এই সাহসের পিছনে আছে নাটক ও সিনেমাগুলো।
আমাদের দেশে কয়েকজন এর সাথে প্রেম করা সাহসের কাজ, কিন্তু বহু বিবাহ পাপের কাজ।
আমাদের দেশে প্রেমের নামে শারিরীক সম্পর্ক সমস্যা নাই, একই সময় বয়সর অজুহাতে বিবাহ নিষেধ।
আমাদের দেশে বিয়ে বহির্ভূত গর্ভপাত সমস্যা নাই, কিন্তু বিয়ে করে ২ এর অধিক সন্তান নিলে সমস্যা।
আমাদের দেশে কয়েকজনের সাথে শারীরক সম্পর্ক করলেও কোন অসুবিধা নাই, কিন্তু বিয়ে একটার বেশী করলে মামলা খেতে হয়।
আর এসব অনৈতিক কাজে অভ্যস্ত কিন্তু এক দিনে করনি, যুগের পর যুগ, বছরের পর বছ, দিনের পর দিন বস্তা পচা প্রেমের নাটক ও সিনেমা খাইয়ে তারা আজ সফল। আর আমরা বিনোদনের নামে জেনার কারখানায় রুপান্তর করেছি দেশটাকে।
আর আজ শুরু হয়েছে বিয়েহীন একাকি জীবন। নিজের জৈবিক চাহিদ মেটাতে করে লীভ টুগেদার। যে কয়দিন ভালো লাগে, একসাথে চাহিদা শেষতো যে যার পথে।
আমরাও চলছি ধ্বংসের পথে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:১৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



