somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রকৃতির সাথে বেড়ে উঠা (১) – ঝড়ের দিনে আম কুড়ানোর সুখ!!! :) B-)

০৪ ঠা জুন, ২০১৩ দুপুর ১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


“ঝড়ের দিনে মামার দেশে, আম কুড়াতে সুখ;
পাকা জামের শাখায় উঠি, রঙিন করি মুখ!
পল্লী কবির এই দুটি লাইন দিয়েই শুরু করলাম! সোনালী সেই দিন গুলো কত দূরে যে ফেলে এসেছি... কিন্তু তার ছোঁয়া যেন এখনও লেগে আছে।

ব্যস্ত নাগরিক জীবনে পথ চলতে চলতে মাঝে মাঝে খুব ক্লান্ত লাগে। মনে হয়, ইশ! একবার যদি সেই দিন গুলিতে ফিরে যেতে পারতাম!! সেটা কি আর এজীবনে সম্ভব হবে?? বিদেশে থাকলে এই অসহয়ত্বটা আরো প্রবল হয়ে উঠে। কত সুন্দর ছিল যে সেই ছন্দময় দিনগুলো! ফেরা তো আর হবে না কোন দিন; তাই সৃতি গুলোকে নাড়াচাড়া করে যতটুকু তৃপ্তি!! আমার মতে যাদের ছোট বেলাটা গ্রামে কাটেনি তারা বড়ই অভাগা; জীবনের অর্ধেক সবাধ থেকেই তারা বঞ্চিত!/:)

প্রকৃতির সাথে বেড়ে উঠা প্রকৃতির সন্তান আমরা। ভাবছি ছেলে বেলার সোনালী সৃতি গুলি নিয়ে একটা সিরিজ লিখব; অনেক কিছুই ভুলে যেতে বসেছি, সুন্দর স্মৃতি গুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করতে ভালই লাগে। সারাক্ষণ শুধু অতীতের ভুল, বর্তমানের ব্যর্থতা আর ভবিষতের শঙ্কা নিয়ে ভাবতে ভাবতে আমরা জীবনটাকে বিষিয়ে তুলি। আসুন না কিছু সময়ের জন্য ফিরে যায় ছেলে বেলার সেই দুরন্ত দিনগুলোতে!

শুরু করি আম কুড়ান দিয়ে; আম কূনোর জন্য পারফেক্ট বয়স সম্ভবত ৮ থেকে ১৫ বছর! স্কুল থেকে ফিরে কোন মতে কিছু গলাধকরন করে বেরিয়ে পড়তাম দল বেঁধে। ইংলিশ প্যান্টের (যে প্যান্টের চেইন মাঝে মধ্যেই বিপদ ঘটাত ;)) পকেটে থাকত কাগজে মুড়ান লবন আর শুকনা মরিচ পোড়া। তখন পর্যন্ত ছুরি কাছে রাখার পারমিশন পাওয়া যায়নি; ছুরির কাজ সারতাম ঝিনুকের উল্টা পাশ ঘষে ধারালো ফূটা বানিয়ে। এগাছ সেগাছের তলা দিয়ে ঘুরে ঘুরে কুড়াতাম আমের গুটি; সুযোগ বুঝে চ্যাঙ্গা/ডিল ছুড়ে পরের গাছের আম পাড়া তো ছিলই। চুরি করা আমের কস দেখলে মালিক টের পেয়ে যাবে, তাই সেটাকে ধুলা দিয়ে ডলে পুরাণ বানানোর টেকনিক ও জানা ছিল।;) তারপর সব আম এক জায়গা করে; ছোবা ছিলে, কলাপাতায় ঝাল-লবন মাখিয়ে একসাথে খাওয়া! ইশ! জিভে পানি চলে এল ... !! :-*

ঝড়ে আম কুড়ান ছিল সবচেয়ে মজার! ঝড়ে পড়া আমের কোন মালিক থাকে না, যে কুড়িয়ে পাবে সেটা তার। আমাদের আর একটা এগ্রিমেন্ট ছিল, কোন আম যদি কারো গায়ে পড়ে তবে সেই আম অন্য কেও নিতে পারবে না, সেটির মালিক সে! তখনো বড় ঝড়ে বাইরে যাওয়ার মত বয়স হয়নি; রাতে ঝড় হলে তো কথায় ছিল না। সারা রাত টেনশনে ঘুম হতো না; কখন ভোর হবে আর সবার আগে আম কুড়াতে যাব; একটু দেরী হলেই অন্যেরা কুড়িয়ে নিবে! আমার এক চাচাত বোন ছিল, আমার থেকে ৪/৫ বছরের বড়; বদের হাড্ডি! সে প্রথমে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির কাছের আম গুলো কুড়িয়ে তারপর আমাকে ডাকত জঙ্গলের ভিতরের গাছে যাওয়ার জন্য। জঙ্গলের ভিতরের গাছে আম কুড়াতে যাওয়া ছিল রীতিমত হরর মূভির গল্পের মত। কত ভয়ঙ্কর ঘটনা যে ঘটেছে!! বিশাল একটা “মালদই আম” গাছ ছিল নদীর পাড়ে শ্মশান এর কাছে; কিন্তু ওই গাছের আম-ই ছিল সবচেয়ে বড় আর মজার! ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই সেই গাছে যেতাম আম কুঁড়াতে, এখনও চিন্তা করলে গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায়!

অন্ধকারে চোখে ঠিকমত দেখা যেত না, শুকনা পাতার উপর দিয়ে হাতড়িয়ে হাতড়িয়ে খোজা হত আম; হাতে শক্ত আমের মত কিছু একটা পড়লেই মনে হত মনি-মুক্তার সন্ধান পেলাম!! মাঝে মাঝে অবশ্য হাতে নরম নরম ভেজা কিছুর ছোঁয়াও লাগত; নাকের কাছে নিয়ে শুকে দেখলে ... ... ... ছি, ঘেন্না!! কি! দুর্গন্ধ!!!
শালারা হাগার আর জায়গা পাইনি!!!!!! X((X((X((X((X(X(X(X(X(X(


আম কুড়ানোর গল্প এপর্যন্তই; কারো সাথে মিলে গেলে শেয়ার করলে ভাল লাগবে ...
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ দুপুর ১:০৯
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×