somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীতে এত খাদ্য থাকতে মানুষ কেন উপাস থাকবে? এত জ্ঞান থাকতে মানুষ কেন মুর্খ থাকবে,তাহ্লে কি গৌতম বৌদ্ব ঠিকেই বলেছেন, ইশ্বর বলতে কেও নেই

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেক্সিম গোর্কি এর "মা" উপন্যাস টি পড়ে নিজেকে খুব বিপ্লবি মনে হচ্ছে। মাক্সিম গোর্কি যার পুরো নাম আলেক্সেই মাক্সিমোভিচ গোর্কি। যার সাহিত্যকর্ম আজো বিশ্বের সাহিত্যাকাশে একেবারে নতুন ও জ্বলজ্বলে নক্ষত্রের মতোই দীপ্তিময়। তাঁর সাড়া জাগানো 'মা' উপন্যাসের কথা কার না জানা!। ১৯০৭ সালে আমেরিকায় বসে তিনি রচনা করেন তাঁর বিশ্ববিখ্যাত উপন্যাস।
মা উপন্যাস নিয়ে লিখতে গেলে অনেক আলোচনা করা যাবে। কিন্ত নিচের উক্তিটা নিয়ে একটু বলেই শুরু করব। কারন এখানে ঈশ্বর কে গোর্কি অহেতুক মনে করেছেন যেমন তিনি বলেছেন,"Why must we go hungry when there is so much of everything? And how much intellect there is everywhere! Nevertheless, we must remain in stupidity and darkness." পৃথিবীতে এত খাদ্য থাকতে মানুষ কেন উপাস থাকবে? এত জ্ঞান থাকতে মানুষ কেন মুর্খ থাকবে,তাহ্লে কি গৌতম বৌদ্ব ঠিকেই বলেছেন, ইশ্বর বলতে কেও নেই। এই কথাটি আসলে সমাঞ্জস্বিক নয়। আশা করি নিছের গল্পটিই যথেষ্ট গোর্কির ঈশ্বরের উপর অবচেতন ধারনা বিলুপ হওয়ার জন্য।
একদিন এক মুসলমান লোক চুল কাটতে গেছে এক নাপিতের দোকানে। কিন্তু নাপিত হলনা স্তিক।তার চুল কাটার সময় তাকে বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে বুজাতে চাচ্ছে যে সৃষ্টিকর্তা নেই।নাস্তিকনাপিতবলতেলাগলযদিঈশ্বরথাক
তাহলে এত লোক অনাহারেমরত না।সে বাইরে একটা বস্ত্রহীন মানুষ দেখিয়ে বল্ল যদি ঈশ্বর থাকত তাহলে ওইলোকঅনাহারেকেন?
মুসলমান লোকটা কিছু বলল না।চুপ চাপ শুনে যেতে লাগল।এরপর যখন তার চুল কাটা শেষ হল সে বাইরে গেল এবং নাপিতকে বাইরে ডেকে বলল এই এলাকায় কোন নাপিত নেই।নাপিত তার কথাই অবাক
হয়েগেলএবংবল্লনাপিতনাথাকলেআপনার
চুল কাটল কে?
তারপর মুসলমান লোকটা কত গুলো লম্বা চুল ওয়ালা মানুষকে দেখিয়ে বলল নাপিত থাকলে ওই লোক গুলোরচুললম্বাকেন?
নাপিত বলল ওই লোক গুলো কে ত আমার কাছে আসতে হবে।আমার কাছে না আসলে অথবা আমাকে না বললে আমি কি কিছু করতে পারব? মুসলমান লোকটা তখন বলল
তেমনি,সৃষ্টিকর্ ¬ তার কাছে না গেলে, সৃষ্টিকর্তাকেনা ¬ ডাকলে সৃষ্টিকর্তা তোমার জন্য কি করতে পারবে ।কেউ বলেন “নাস্তিকতাও তো একটা বিশ্বাস, নাকি?”
::এখানে বিশ্বাসকে কি অর্থে আপনি ব্যবহার করেছেন সেটির উপর নির্ভর করছে। (a+b)2 সমান যে a2+2ab+b2 হয়, এটিকেও যদি বলেন বিশ্বাস,তবে সে ধরণের বিশ্বাসের অর্থে বলতে রাজী আছি যে নাস্তিকতাও এক ধরণের বিশ্বাস। বৃষ্টির কারণ হিসাবে পানিচক্রের কথা বললে যদি বলেন এটাও বিশ্বাস- তবে সে ধরণের বিশ্বাসের অর্থে নাস্তিকতাকেও বিশ্বাস বলতেপারেন।

মাক্সিম গোর্কির 'মা' উপন্যাস।যার মুল ভাবনা ছিল আমি একজন ক্ষুদ্র মানুষ, কল্পনার চেয়েও ক্ষুদ্র। নিজেকে ভালবাসি অনেক বেশি। স্বপ্ন দেখি বড় হবার, প্রতিষ্ঠিত হবার, ভাল কিছু করার। সমাজে এমন কিছু করে যেতে চাই যাতে সারা জীবন মানুষ আমাকে মনে রাখে। প্রতি নিয়ত পরিশ্রম করে নিজেকে এক ধাপ এগিয়ে নিতে, প্রতি মুহূর্তে শিখতে চাই নতুন কিছু, ভালকিছু।
নেতা কিভাবে হতে হয় গোর্কি পুরোটাই দেখিয়ে দিয়েছেন। "if you are to tear blood, it should be your blood and not the one of the enemy’s with their blood, the mother earth will only get damaged but with your blood it will be flourished."গোর্কি যদিও কোন ধর্মে বিশ্বাস ছিলনা,কিন্তু তিনি রক্তপাত এর পক্ষে ছিলেন না।বরং উপরোক্ত উক্তিটি পাভেল এর মুখ দিয়ে প্রকাশ করে জানিয়ে দিয়েছেন রক্তপাত করতে হলে আগে নিজেকে কোরবানি করবে তারপরেও শক্রু হলেও রক্তপাত করবেনা।কমুনিজম এর পাইওনিয়ার,মালিক শ্রেনীর বিপক্ষে ছিলেন বরাবরেই। তিনি বলিষ্ঠ কন্ঠে বলেছেন all of you, our masters, are more like slaves than we are. You are enslaved spiritually; we — only physically.”
এক কথায় বলতে গেলে পুরো উপন্যাসটাই শোষক শ্রেনীর বিরুদ্বে। " মা উপন্যাসে বই পড়ার প্রতি খুবই গুরুত্ব দিয়েছেন,যেমন গোর্কি বলেছেন,’You use your brain before using your hand” এবং আমরা দেখতে পাই কিভাবে লেলিন এর সেই বিখ্যাত লাল মলাটের বই পড়ে সবার মাঝে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। লেলিন এর চেতনা নিয়েই চা বাগানের শ্রমিকেরা রুশো তে বিপ্লব ঘটিয়েছেন “for the sake of improving living conditions for the workers”। ম্যাক্সিম গোর্কির লেখা উপন্যাস ' মা ' মূলত একটী বাস্তব কাহিনীকে ভিত্তি করে লেখা হয়েছে ।
গল্পটির শুরু হয়েছে কারখানার শ্রমিকদের দৈনন্দিন নিদারুন কষ্টের আর একঘেয়ে জীবনের বর্ণনা দিয়ে । যেখানে নেই কোনো আনন্দ , নেই কোনো উচ্ছাস । যেখানে প্রতিদিন কারখানার যন্ত্র তাদের ভিতরকার রক্ত চুষে নিচ্ছে , তাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মৃত্যুর গহ্বরের দিকে । তাদের কোনো ইচ্ছা ছিল না এই জীবনধারাকে পরিবর্তন করার । যদি নবাগত কেউ তাদের মধ্যে আবছায়া কৌতূহলের সৃষ্টি ও করে কিন্তু কিছুকাল পড়ে তাদের কৌতূহলের সমাপ্তি ঘটে । বুঝে ফেলে সকল দেশেই কুলি মজুরদের জীবন এমনিভাবে চলছে । তাদের জীবন চলে যন্ত্রকে নিয়ে , নিজেদের মধ্যে কথাবার্তাও হয় যন্ত্রকে নিয়ে । এভাবেই তারা যন্ত্রমানবে রূপান্তর হয় , যে মানবের ভিতরে কোনো আবেগ নেই , নেই কোনো উচ্ছ্বাস । তাদের মন ব্যাধিগ্রস্ত হয়ে পড়ে দারিদ্রতার কারণে । এই ব্যাধিগ্রস্ত মনকে শান্ত করার জন্যই হয়তোবা তারা নিজেদের মধ্যে কলহ করে , মারামারি করে এমনকি হত্যাও করে ।
তেমনি এক অসুস্থ মনের মানুষ ছিল মিখাইল ভ্লাসভ । তার জীবনের এই অন্ধকার কাহিনী আমাদের পীড়িত করেছে
একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধনে একজন মায়ের ভুমিকা কি হওয়া উচিত,একশ ভাগেই গোর্কি উপস্থাপন করেছেন তার মা উপন্যাসে। পাভেল এর মা এইভাবেই মন্তব্য করেন কমরেড দের বিপ্লবি চেতনার উদ্দিমতার জন্য “If our children, the dearest parts of our hearts, can give their lives and their freedom, dying without a thought for themselves, what ought I to do, a mother” এই কথাটা বলেই পাভেল এর মা চিৎকার করে কান্না করেম,কিন্তু কমরেড দেরকে পিছ পা হতে দেননি।

৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×