নারী সহকর্মীর সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে চাকরি হারাতে হলো বেসরকারি ওয়ান ব্যাংকের দুই কর্মকর্তার। আইন বিভাগে কর্মরত দুই কর্মকর্তা শেখ মো. বদিউল আলম ও মো. আল আমিন রোববার লিখিতভাবে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। নিজের অফিসে নারী সহকর্মী যৌন হয়রানির শিকার হলে তারা দু’জন প্রতিবাদ করেন। কিন্তু প্রতিবাদ করায় শেষ পর্যন্ত তাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হলো।
যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় চাকরি হারাচ্ছেন ওয়ান ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা
ওয়ান ব্যাংকে নারীরা নিরাপদ নন!
এর আগে গত ৩১ মে বৃহস্পতিবার বাংলানিউজে এমন আশংকা করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এরও আগে ১৩ মে তারিখে ওয়ান ব্যাংকে যৌন কেলেঙ্কারির বিষয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
বদিউল আলম ও আল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘সংবাদ মাধ্যমে দুই দফা রিপোর্ট প্রকাশিত হবার পর কর্তৃপক্ষ আমাদের নানাভাবে হুমকি দিতে থাকে। সবশেষ গত ৩১ মের প্রতিবেদন প্রকাশের পর আমাদের জীবন নাশের হুমকি দেয় ব্যাংকের কর্তৃপক্ষ। তারা আমাদের বহিরাগতদের দিয়ে শারীরিক হয়রানি করতে উদ্যত হয়। ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা আমাদের ফোনে বলেন, রোববারের মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে। কোনোভাবেই যেন আমরা অফিসে না যাই। অফিসে গেলে আর স্বাভাবিকভাবে ফিরতে পারব না। এমন হুমকির মুখে জীবনের ভয় পদত্যাগ করতে বাধ্য হলাম।’
বদিউল আলম বলেন, ‘বাংলানিউজে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সেদিন রাত আনুমানিক সাড়ে সাতটার দিকে ব্যাংক থেকে বের হবার পথে ৭/৮ জন অপরিচিত লোক আমার পথ রোধ করে এবং আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমাকে রোববারের মধ্যে পদত্যাদ করতে হুমকি দেন। পদত্যাগ না করলে আমাকে মেরে ফেলা হবে বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। এমন নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে চাকরিটি ছাড়তে বাধ্য হলাম।’
আরেক ভুক্তভোগী আল আমিন বলেন, ‘বাংলানিউজে প্রতিবেদন প্রকাশের পর রাতে ৪ জন দৃষ্কৃতিকারি আমাকে হুমকি দেয়। যাতে চাকরি ছেড়ে দেই।’
ওয়ান ব্যাংক সূত্র বলছে, ‘হয়রানির শিকার নারী সহকর্মীর হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করার পর থেকেই বদিউল আলম ও আল আমিন রোষানলে পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের। বিশেষ করে যাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ ওঠেছে তাদের। যাতে করে তারা চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যান। প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর তারা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন।’
অপরদিকে, যাদের বিরুদ্ধে নারী সহকর্মীকে হয়রানি করা অভিযোগ সেই সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট রফিকুল ইসলাম, অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মাসুমুল গণি বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তাদের বিষয়ে ব্যাংক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি বিষয়টি তদন্ত পর্যন্ত করে দেখেনি কর্তৃপক্ষ।
এব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মৌখিকভাবে জানতে চাইলে বিষয়টি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে ব্যাংকের তরফ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জানানো হয়েছে।
বদিউল আলম ঐ অভিযোগপত্রে বলেছিলেন, ‘রফিকুল ইসলামের কুপ্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় চরম দুর্ব্যবহার, অফিসিয়াল কাজে অসহযোগিতা ও মোবাইল ফোনে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ এনে ব্যাংকের এমডির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন “ন” আদ্যাক্ষরের একজন নারী কর্মকর্তা।’
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, রফিকুল ইসলাম ও মাসুমুল গণি ঐ নারীকে মোবাইল ফোনে উত্ত্যক্ত করার পাশাপাশি শারীর নিয়ে কটূক্তি ও হয়রানি করতো। অশোভন আচরণ করত। ঐ নারী লজ্জায়-কষ্টে প্রায়ই কেঁদে ফেলতেন এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে শেষ পর্যন্ত চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।’
তবে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান জন সরকারের কাছে ফোন করলে তিনি ছুটিতে আছেন বলে ফোনটি রেখে দেন।
We Make Things Happen ~ ONE Bank Limited ( হা হা হা)
সূত্রঃ Click This Link

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




