somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জনগন কেন আওয়ামীলীগে ভোট দেবে না?

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমরা গত কয়েক বছর যাবত আওয়ামীলীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের প্রচারনা দেখছি। রাস্তায় বিলবোর্ড, বি টি ভি, সরকার সমর্থিত টিভি, ফেসবুক সহ অন্যন্য মাধ্যমে প্রচারনা চলেছে। সরকার এসব প্রচারনার মাধ্যমে তার ভাল কাজ গুলি গুছিয়ে জনগনের সামনে উপস্থাপন করছে। তার সর্বশেষ নজির হচ্ছে থ্যাঙ্ক ইউ পি এম ক্যাম্পেইন। কিন্তু এত সব কাজের মাঝেও এই সরকার, দল এবং নেতারা প্রায় প্রতি মাসেই বিভিন্ন ঘটনার জন্ম দিয়ে বিতর্কিত হয়েছেন। তার মদ্ধ্য এমন কিছু ঘটনা আছে যা মানুষের মনে গভীর দাগ কেটেছে, যা জনগন কে আওয়ামীলীগের প্রতিপক্ষ করেছে। এমন কিছু ঘটনা যে জন্য জনগন আওয়ামীলীগ কে ভোট দানে বিরিত রাখবে। সেগুলি আজকের লেখায় আলোচনার বিষয়।

শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংশঃ


আওয়ামীলীগের এই সময়ে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা তার সবচেয়ে খারাপ সময় অতিবাহিত করছে। আগে পরীক্ষায় নকল থাকলেও এহসানুল হকের ঐকান্তিক প্রেচেষ্টায় নকল শূন্যের কোঠায় পৌছে গিয়েছিল। ২০১০ এর পর আবার শুরু হয়। এর পর শুরু হয় বোর্ড পরিক্ষার প্রশ্নপত্র ফাস। আগে শুধু মেডিকেলের প্রশ্ন কালে ভদ্রে ফাস হলেও এবার সব মাত্রা ছাড়িয়ে পি এস সি পরীক্ষার প্রশ্ন পর্যন্ত ফার হয়েছে। যার সর্ব শেষ নজির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালিয়ের প্রশ্ন ফাস। যা অতীতে কখনো ঘটেনি। প্রশ্ন ফাসের সাথে নতুন যুক্ত হয়েছে বোর্ড থেকে ফলাফল পরিবর্তনের ব্যবস্থা। একটি জাতীকে ধ্বংস করতে হলে যে মেরুদন্ডে আঘাত করতে হয় এই সরকার ঠিক সেখানেই আঘাত করেছে। এই পয়েন্টে ভবিষ্যতে বিস্তারিত লিখব।

শেয়ার বাজার লুটঃ


টেকনিকালি সাধারন বিনিয়োগ কারীদের প্রলুব্ধ করে করে শেয়ার বাজারে এনে যেভাবে দরবেশের নেতৃত্বে তাদের লুট করা হয়েছে, সে পদ্ধতি কারো অজানা নয়। এমন কি তদন্ত কমিশনের রপোর্ট ও প্রকাশ করা হয় নি। তাই সাধারন মানুষের ধারনা এই লুটের অর্থ অনেক উপর মহল পর্যন্ত পৌছেছে। যারা কিনা অর্থ মন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর। কয়েক লাখ লোক এতে ক্ষুব্ধ।

ব্যাংক লুটঃ


বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার অনুযায়ী পর্যাপ্ত সংখ্যক ব্যাংক থাকার পরেও শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় ১০ এর অধিক ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এরা জনগনের কাছ থেকে বেশি সুদের লোভ দেখিয়ে আমানত সংগ্রহ করে ব্যাং মালিকদের মধ্যে মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা সরিয়েছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদিত ফার্মার্স ব্যাংক তার জ্বলন্ত প্রমান। এই ব্যাংকটি এখন ডিপোজিটর দের দাবি পূরন করতে পারছে না। অন্যান্য ব্যাংক ও তাদের ঋন দেয়ার সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। ফলে সাধারন উদ্যোক্তাদের ঋন দিতে পারছে না। তাই এখন আমরা দেখছি আমানত সংকটে সুদের হার আবার বৃদ্ধি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরিঃ


ব্যাংক লুটের ব্যাপারে আওয়ামীলীগের দূর্নাম বহু পুরনো। সাধারন ব্যাংক গুলির আমানত সরিয়ে এর পর বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরি করা হয়েছে। যা এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয় নি। ঘটনা মিডিয়ায় আসার আগ পর্যন্ত এক মাসের বেশি সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয় নি। জনগনের সন্দেহ এর সাথেও ক্ষমতাধররা জড়িত।

বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের স্বর্ন চুরিঃ


রিজার্ভ চুরির পর বাংলাদেশ ব্যাংকে গচ্ছিত স্বর্ন চুরি করা হয়েছে। এরও কোন সুরাহা হয় নি।

কয়লা ও পাথর চুরিঃ


নগদ নারায়ন চুরির পর ক্ষনির কয়লা ও পাথর চুরি করা হয়েছে। তার ও কোন কুল কিনারা হয় নি। শুধু লোক দেখানো তদন্ত কমিশন।

বিচার ব্যবস্থা দলীয়করনঃ


এই সরকারের সময় বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ন ভাবে দলীয় করন করা হয়েছে এবং বিচার ব্যবস্থার উপর প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রন অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি আরোপ করা হয়েছে। বিচারপতি সিনহার অপসারন ও তার স্বীকারক্তি তার উজ্জ্বল প্রমান। যদিও আরো বহু প্রমান আছে।

প্রশাসন দলীয়করনঃ


এই সময়ের মধ্যে সর্ব করম সরকারী পদে দলীয় লোকজন নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে তা ফ্রি নয়। দলীয় লোকজনের কাছ থেকেও মোটা অংকের টাকা নেয়া হয়েছে। এসব দলীয় নেতা কর্মীই সরকারের সর্বস্তরে দূর্নীতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

বাকস্বাধীনতা হরনঃ


ডিজিটাল আইন পাশ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার সাধারন মানুষের বাক স্বাধীনতায় আঘাত হেনেছে। এছাড়া সরকার বেশ কিছু টেলিভিশন ও পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছে শুধু মাত্র সরকারের সমালোচনা করার জন্য। যা স্বাভাবিক ভাবে অবৈধ নয়।

সাধারন ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলাঃ


নিরাপদ সরক আন্দলনের সময় সাধারন ছাত্র ছাত্রীদের উপর দলীয় গুন্ডা ও পুলিশ দিয়ে হামলায় এসকল ছাত্র ছাত্রী ও তাদের অভিবাবক গন ক্ষুব্ধ। আন্দোলন দমন করা হলেও তাদের মূল দাবি শাহজাহান খান কে অপসারন করা হয় নি।

বিতর্কিত রাম পাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রঃ


সুন্দরবন সংলগ্ন বিতর্কিত রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও এর সাথে যুক্ত ভারতীয় ঋন চুক্তি নিয়ে সাধারন মানুষ ক্ষুব্ধ।

সীমান্তে হত্যাঃ


সীমান্তে ভারতীয় বি এস এফ কর্তৃক একের পর এস সাধারন মানুষ হত্যার পর ও সরকারের পক্ষ থেকে নূন্যতম প্রতিবাদে ব্যর্থতায় সাধারন জনগন ক্ষুব্ধ।

ধর্ম অবমাননাঃ


ছবি-প্রতিকি

সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ড ও কথা সাধারন মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করেছে। সরকার মুখে সেকুলারিজমের কথা বললেও গ্রাম পর্যায়ে সরকার সমর্থক দের দ্বারা হিন্দু সমপ্রদায়ের লোকজন অথাচারিত হয়েছে। তাদের জমি কেড়ে নেয়া হয়েছে। জামায়াতের মানে সরকার সমর্থিতরা মন্দীরে ভাংচুর করেছে। যা অনেক ক্ষেত্রে হাতে নাতে ধরা পরেছে।

মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্টপোষকতাঃ


সরকারের শেষ সময়ে মাদক বিরোধী অভিযান চালালেও রাঘব বোয়াল রা ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে গেছে। তারা সব সময়ই সরকারের ও প্রশাসনের পৃষ্টপোষকতা পেয়েছে। এবার ও চারজন ইয়াবা ব্যবসায়ী আওয়ামীলীগের নমিনেশন কিনেছে বলে পত্রিকায় খবর প্রকাশ।

এলাকাপ্রীতিঃ

সরকারী নিয়োগ, বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে কিশোরগঞ্জ ও গোপালগঞ্জের প্রাধান্য ছিল বলে অভিযোগ। অনেক ক্ষেত্রে স্ত্য প্রমান।

সরকারী প্রশাসনের সীমাহীন দূর্নীতিঃ


বিভিন্ন ক্ষেত্রে পদায়িত কর্মকর্তা দের সীমাহীন দূর্নীতিতে সাধারন মানুষ অতিষ্ট। আর এসব কর্মকর্তারা হাজার হাজার কোটই টাকা লোপাট করেছে। পত্রিকায় প্রকাশ বিগত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৬ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। এগুলো সব কালো টাকা।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে ব্যর্থতাঃ


সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে ও রোহিঙ্গা আগমন ঠেকাতে সম্পূর্ন ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের ভারত মূখী পররাষ্ট্রনীতির কারনে অন্যান্য দেশে বিশেষ করে চায়নার সমর্থন এ ক্ষেত্রে আমরা পাইনি। এমন কি আমাদের একমাত্র বন্ধু দেশ ভারত ও এক্ষেত্রে আমাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বরং এই সুযোগে ভারত তাদের দেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার পায়তারা করছে। শেষে বাধ্য হয়ে সরকার রহিঙ্গাদের স্থায়ী আবাসের পরিকল্পনা করছে সাগরে জেগে ওঠা চরে।

এছাড়াও আরো হাজারো কারন আছে যার জন্য এবার ভোটার গন আওয়ামীলীগের বিকল্প খুজবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৫
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×