ফুলন দেবীর জন্ম ১৯৬৩ সালে ভারতের এক নিচু পরিবারে। দারিদ্র্য এবং সামাজিক কারণে জীবনের শুরু থেকেই সংগ্রামের মুখোমুখি হয় ফুলন। মাত্র এগারো বছর বয়সে বাবার বয়সী এক লোকের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। দারিদ্র্য এবং সামাজিক কারণে জীবনের শুরু থেকেই সংগ্রামের মুখোমুখি হন তিনি। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি জেলে যান এবং একই সালে একটি ডাকাত দলের সদস্য হন। বেমাইয়ে লুণ্ঠনকালে তিনি উচ্চবর্ণের ২২ জন ব্যক্তিকে হত্যা করেন। ফুলন দেবী জনমানুষের কাছে দেবীর মর্যাদা পান।
ফুলনের গ্রামের ঠাকুর জমিদাররা এলাকার গরিবদের উপর নির্যাতন করত। তারা গরীবদের ফসলের ভাগ নিয়ে যেত, এমনকি ফুলনের যে অল্প কিছু সম্পদ ছিলো তাও তারা দখল করে নেয়। এসময় ফুলন আক্রমনকারীদের নেতা মায়াদেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। কিন্তু তাদের প্রভাবের কাছে মামলা টিকেনি। অপমানের প্রতিশোধ হিসেবে ঠাকুর জমিদাররা তাকে ধরে নিয়ে যায় বোমহাই নামের এক প্রত্যন্ত গ্রামে। তখন ১৯৭৯ সাল, ফুলনের বয়স মাত্র ১৬। সেখানে ১৫ দিন পর্যন্ত তাকে আটকে রেখে গণধর্ষন করা হয়। প্রতি রাতে জ্ঞান না হারানো পর্যন্ত তার উপর পাশবিক নির্যাতন চলত। ১৬ দিনের দিন সুযোগ বুঝে ফুলন সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
ফুলন দেবী একজন ভারতীয় ডাকাত এবং পরে একজন রাজনীতিবিদ। "দস্যু রানী" নামেই তিনি বেশি পরিচিত। সরকার ফুলনকে ধরার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠে। আবার ফুলনের পক্ষেও আন্দোলন হয়। শেষ পর্যন্ত ১৯৮৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকার সন্ধিপ্রস্তাব করলে ফুলন অনেকগুলো শর্ত দেন। সরকার সেই শর্ত মেনে নিলে ১০,০০০ মানুষ আর ৩০০ পুলিশের সামনে ফুলনদেবী অস্ত্র জমা দেন গান্ধী আর দুর্গার ছবির সামনে। ১১ বছর কারাভোগের পর ফুলন সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দেন এবং ১৯৯৬ এবং ‘৯৯-তে পরপর দুইবার লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের ২৫ জুলাই ঠাকুর বংশের তিন ছেলের এলোপাতাড়ি গুলিতে ফুলন দেবী নিহত হন।
ফুলন তার বাহিনী নিয়ে প্রথম হামলা চালায় তার প্রাক্তন স্বামীর গ্রামে। নিজ হাতে ছুরিকাঘাতে তার স্বামীকে খুন করে সে রাস্তায় ফেলে রাখে এবং গ্রামবাসীকে বলে এরপর থেকে বাল্যবিবাহকারীদের অবস্থা এমনি হবে। ফুলন তার সংগঠিত দস্যুদল নিয়ে ক্রমাগত ধনী গ্রাম এবং জমিদারবাড়িগুলোতে আক্রমণ চালাতে থাকে। মাঝে মাঝে তারা ধনী জমিদারদের মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করে নিয়ে আসতো। প্রতিটা ডাকাতির আগেই ফুলন দুর্গা দেবীর পুজো দিতো। তার দস্যুদলের আবাস ছিল চম্বলের বনভূমিতে।
১৯৯৪ সালে শেখর কাপুর ফুলন দেবীকে নিয়ে অতি বিখ্যাত ব্যান্ডিট কুইন চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন । যদিও ছবিতে তাকে পজিটিভ চরিত্রেই দেখানো হয়েছে তবুও পরে অবশ্য তিনি দাবী করেন যে চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যের বেশিরভাগ অংশই মিথ্যা কাহিনীর ওপর ভিত্তি করা। এবং এ চলচ্চিত্র নিষিদ্ধ করবার আন্দোলনও করেন তিনি। তাকে নিয়ে সারা বিশ্বে অনেক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। তবে সবচেয়ে আলোচিত ১৯৯৪ সালে শেখর কাপুর নির্মিত Bendit Queen ।
আলোচিত ব্লগ
অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ
'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )
যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন
কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন
একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।
এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।
ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন
দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস
রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন