somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

কথা শেষ, ঠাস ঠাস

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১। আমি হোটেলের ক্যাশ কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। এক ভিক্ষুক মহিলা হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে ম্যানেজারকে বলছে, আমাকে একটা রুটি দেন। খামু। হোটেলের ম্যানেজার খুব বিরক্ত হয়ে তাকে অনেক আগে বানানো একটা শক্ত রুটি দিতে বলল। ক্ষুনক্ষুনে বুড়ি, সামনের পাটির কোনো দাঁত নেই। সে বলল বাবা শক্ত রুটি খেতে পারি না। দাঁত নাই। একটা গরম রুটি দ্যান। ম্যানেজার তাকে কঠিন ধমক দিলো। আমার খুব রাগ লাগলো। আমি ম্যানেজারকে বললাম, রুটি না দিলে না দিবেন। বয়স্ক মানুষটাকে এইভাবে ধমক দিলেন কেন? ম্যানেজার কঠিন চোখে আমার দিকে তাকালো। যেন আমাকে কাঁচা চিবিয়ে খাবে। আমি বললাম, এইভাবে আমার দিকে তাকিয়ে কোনো লাভ নাই। আমি অন্য জিনিশ। একটা ফোন দিবো মোবাইল কোট (ম্যাজিস্ট্রেট) এসে আপনার ছয় মাসের লাভ পাচ মিনিটে নিয়ে নিবে। কাজেই চোখ নামিয়ে নরম সুরে কথা বলুন। আমার কথায় ম্যানেজার নড়ে চড়ে বসলো। ভিক্ষুক মহিলাকে গরম রুটি দিল, সবজি দিলো। আমি দাম দিতে গেলাম, কিছুতেই দাম নিলো না। বরং আমাকে তেলাতে শুরু করলো।

২। বাসে উঠে দেখি কোনো সিট নেই। আমি দাঁড়িয়ে আছি। কন্টাকটার বলল, মামা সামনেই লোক নামবে তখন আপনি বসে যাবেন। এর মধ্যেই একলোক ঘ্যান ঘ্যান শুরু করেছে। সিটিং সার্ভিস লোক দাড়াইয়া নিতাছো ক্যান? ভাড়া দিমু না। শালার বাঙ্গালীই খারাপ। বাঙ্গালী কোনোদিন মানুষ হইব না। কন্টাকটার বলল, সামনেই একজন নামবে তখন আর কেউ দাঁড়িয়ে থাকবে না। কিন্তু না লোকটা কিছুতেই মানছে না। সে নানান ক্যাচাল জাতিয়ে কথা বলেই যাচ্ছে। আমি অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছি। একজন মানুষের মধ্যে কি সামান্যতম মানবিক বোধ থাকবে না? বাসে তো আর অনেক যাত্রী আছে কেউ তো কিছু বলছে না। লোকটা কন্টাকটারের দিকে তাকিয়ে বলছে, আসিছ আমার কাছে ভাড়া নিতে। দিমুনে তরে খাওয়াইয়া। আমি লোকটার দিকে তাকিয়ে বললাম, আপনার সমস্যা কি? এমন করেছেন কেন? লোকটা বলল, আবার কেমুন করবো? সিটিং ভাড়া দিব, টাকা কি---- **** আসে? প্রচন্ড রাগ লাগলো আমার। ঠাস করে একটা থাপ্পড় দিলাম। লোকটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলল, এইটা কি হলো? আমি বললাম, আর একটা কথা বলবি, কানটা ধরে বাসের জানালা দিয়ে ফেলে দিব হারামজাদা।

৩। পান্থপথের ফুটপাত দিয়ে হেটে যাচ্ছি। রাস্তায় ভয়ানক জ্যাম। দেখলাম, ফুটপাত দিয়েই চলার পথে এক লোক একটা মেয়েকে ইচ্ছা করে কনুই দিয়ে গুতা দিল বুকের কাছে। মেয়েটা বোরকা পড়ে খুব শালীন ভাবেই ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। লোকটা গুতা দিয়েই এমন ভাবে হেঁটে যাচ্ছে যেন কিছুই হয় নাই। আমি দৌড়ে লোকটাকে ধরলাম। বললাম, আপনি এটা কি করলেন? কেন করলেন? লোকটা এমন ভাব করলো যেন আমার কথা বুঝতেই পারছে না। লোকটার বয়স ত্রিশের মতো। কলার টা ধরলাম। তারপর দুই কেজি ওজনের একটা থাপ্পড় দিলাম। মাশাল্লাহ আমার হাতে জোর কম না! ততক্ষনে চারপাশে অনেক লোক জমে গেছে। আশে পাশের লোকজন বলছে শুয়োরটাকে আরে মারেন। আমি লোকটাকে বললাম, বাকি জীবনে আর এরকম কাজ করিস না। ভালো হ, ভদ্র হ। নিজের মা বোনের কথা মাথায় রাখিস। আমার বিশ্বাস লোকটা বাকি জীবনে রাস্তায় আর এমন কাজ করবে না।

৪। কয়েকদিন আগের কথা। প্রচন্ড রোদ উঠেছে। চামড়া যেন পুড়ে যাচ্ছে। মগবাজার দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। আমার সারা শরীর ঘামে ভেজা। সকালে নাস্তা খাইনি। খুব খিদে পেয়েছে। যেতে হবে উত্তরা। রাস্তায় ভয়ানক জ্যাম। বেশ কয়েকজন ফুটপাত দিয়ে হোন্ডা উঠিয়ে দিয়েছে। ফুটপাত দিয়ে হোন্ডা চালাচ্ছে, চালাক কিন্তু এমন বিকট হর্ন দিচ্ছে, দিয়েই যাচ্ছে। রাগ আর সামলাতে পারলাম না। চিৎকার করে বললাম, এই হোন্ডা নিয়ে ফুটপাতে উঠেছেন আবার এমন বিকট ভাবে হর্ন দিচ্ছেন কেন? লজ্জা করে না? এক হোণ্ডাওয়ালা বলল, ফুটপাত দিয়েই যাবো কি করবি? আমি বললাম, যান তারপর দেখেন কি করি। হোন্ডাওয়ালা তেজ দেখিয়ে বিকট হর্ন বাজিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখন আমি সামনে গিয়ে দুই হাত তুলে দাড়ালাম। এবং রাস্তায় মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা সার্জেনকে ডাকলাম। বললাম, আমি একজন সাংবাদিক। অমুক পত্রিকায় কাজ করি। এই বদ ফুটপাত দিয়ে হোন্ডা চালাচ্ছে, বিকট হর্ন দিচ্ছে আবার তেজও দেখাচ্ছে। সার্জেন হোন্ডাওয়ালার চাবি আর লাইসেন্সটা নিয়ে নিল। আমি মনে মনে বললাম, এই বুঝ ঠ্যালা।

৫। গুলশানে-২ এর ঘটনা। ফুটপাত দিয়ে এক মেয়ে হেঁটে যাচ্ছে। কমপক্ষে দশ জন লোক অতি কুৎসিত ভাবে তাকিয়ে আছে। যারা কুৎসিত ভাবে তাকিয়ে আছে আমি তাদের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। এইভাবে তাকিয়ে থাকার মানে কি? তাকিয়ে থাকা লোক গুলো সবাই বিভিন্ন বয়সের। তাকিয়ে থাকা অবস্থায়'ই তিনজনকে প্রশ্ন করলাম, এই রকম কুৎসিত ভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? লজ্জা করে না? এই মেয়েটি কি আপনার পরিচিত? নাকি আপনার মা আর বোনের সাথে মেয়েটির চেহারার মিল আছে, এই জন্য তাকিয়ে আছেন। ঠিক আছে তাকিয়ে থাকুন কিন্তু এত কুৎসিত ভাবে কেন? এই শিক্ষা কি আপনার মা বাবার কাছ থেকে পেয়েছেন? যে তিনজন কে প্রশ্ন করলাম এদের মধ্যে দুইজন খুব লজ্জিত হলো। কিন্তু একজন আমাকে প্লাটা প্রশ্ন করলো- তোর বাপের কি? ঠিক তখন কলার ধরলাম, তারপর ঠাস ঠাস দুইটা দিলাম। এবং বললাম, আশা করি বাকি জীবনে আর এরকম কুৎসিত ভাবে কারো দিকে তাকাবি না।

মাঝে মাঝে আমার সাহস খুব বেড়ে যায়। তখন কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদ করি। আবার মাঝে মাঝে আমি একদম বিড়াল হয়ে যাই। তখন কেউ অন্যায় করলেও মাথা নিচু করে থাকি। আসলে সব সময় প্রতিবাদ করাই উচিত। অন্যায়কারীদের সাহস থাকে কম এবং অন্যায় করার কারনে তারা বেশ ভীতু হয়ে থাকে। ঠাস ঠাস করে মারলেও চুপ করে থাকে। কাজেই আমার ব্লগার ভাইদের অনুরোধ করলো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদ করবেন। তাহলেই সমাজ থেকে অন্যায় কমবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:০৮
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×