somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

নকশাল

১২ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানুষের ইতিহাসকে মানুষেরই কবল থেকে দূরে সরিয়ে রাখার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে ধর্ম।

১৯৬৭ সালের ২৫ মে নকশালবাড়ি জেলায় কৃষকরা সংগঠিত হয়ে ভূস্বামী আর তাদের ভাড়াটে গুণ্ডাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। দার্জিলিং জেলার নকশালবাড়ি অঞ্চল গর্জে ওঠে কৃষকদের অভ্যুত্থানে। জমি আইনকে নানাভাবে ফাঁকি দিয়ে বড় জমিদারেরা বহুদিন ধরেই সেই অঞ্চলে সৃষ্টি করছিলেন অমানবিক অত্যাচার এবং ক্ষুধার পরিবেশ। ভারতে ইন্দিরা গান্ধীর আমলে নকশাল আন্দোলন অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল।
নকশাল শব্দটি এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি ছোটগ্রাম ’নকশালবাড়ি’ থেকে। কমিউনিষ্টদের আন্দোলনকেই নকশাল বলা হয়। নকশাল আন্দোলন শুরু হয়েছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। নকশালরা মার্ক্সবাদ এবং লেনিনবাদে বিশ্বাসী। নকশাল আন্দোলন কলকাতার ছাত্র সংগঠনগুলোর ব্যাপক সমর্থন পেয়েছিল। বহু ছাত্র লেখাপড়া বাদ দিয়ে এই আন্দোলনের জড়িয়ে ছিল। বিনা বিচারে বহু ছাত্রকে জীবন দিতে হয়েছিল। নকশালপন্থী ছাত্ররা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দখল করে নিয়ে তার মেশিন শপে পুলিশদের সাথে লড়ার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করেছিল। নকশাল ছাত্রদের প্রেসিডেন্সি কলেজ ছিল তাদের সদর দফতর।

গান্ধীর ডাকে যেমন বহু ছাত্র-ছাত্রী একসময় লেখাপড়া ছেড়ে অহিংস আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, চারু মজুমদারের ডাকেও এই বাংলায় অনেকটা একই রকম দেখা গিয়েছিল। নকশাল আন্দোলনের নায়কের নাম ছিল চারু মজুমদার। আরেকজন কানু সান্যাল। ১৯৭২ সালে চারু মজুমদার পুলিশের হাতে ধরা পড়েন এবং আলীপুর জেলে নিহত হন। কমরেড চারু মজুমদারের জন্ম ১৯১৫ সালে নাটোরের হাগুড়িয়া গ্রামে। ভারতের শিলিগুড়ি হাই স্কুল থেকে ১৯৩৩ সালে মেট্রিক পাস করে ভর্তি হন পাবনা এডায়ার্ড কলেজে।
নকশাল আন্দোলন কারো কাছে ছিল বিপ্লবের যাত্রা, কারো কাছে সন্ত্রাস। হাজার হাজার তরুণ নিজের সার্টিফিকেট পুড়িয়ে দিয়ে, নিশ্চিত মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে সশস্ত্র লড়াইয়ে নেমে পড়েছিল।‘বিপ্লবী হচ্ছে সে, যে সমস্যা দেখে অন্যের কাছে ছুটে যায় না, নিজেই সমস্যার সমাধান করে এবং নেতৃত্ব দিতে পারে। যে স্বপ্ন দেখে না আর অন্যকে স্বপ্ন দেখায় না, সে বিপ্লবী হতে পারে না।’- এই কথাগুলি লিখে গেছেন আমরণ গ্রেট মাওবাদী বিপ্লবী নেতা কমরেড চারু মজুমদার।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর নকশাল আন্দোলনের অনুকরণে গঠিত সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টি এবং সমমনা অন্য বাম সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো সারা দেশে, বিশেষ করে দক্ষিণ বাংলায় তৎপর হয়ে উঠেছিল। শেষমেষ বাংলাদেশে সিরাজ সিকদার পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে নিহত হন।

নকশাল আন্দোলন নিয়ে প্রচুর সাহিত্য রচিত হয়েছে। অরুন্ধতী রায় বুকার পুরস্কার জয়ী “গড অব স্মল থিংস্” উপন্যাসে একটি চরিত্র নকশাল আন্দোলনে যোগ দেয়। স্বর্ণ মিত্রের 'গ্রামে চলো' (১৯৭২), মহাশ্বেতা দেবীর 'হাজার চুরাশির মা' (১৯৭৩) ও 'অপারেশন'? বসাই টুডু (১৯৭৮), শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের 'শ্যাওলা' (১৯৭৭), শৈবাল মিত্রের 'অজ্ঞাতবাস' (১৯৮০), জয়া মিত্রের 'হন্যমান', সমরেশ মজুমদারের 'কালবেলা' প্রভৃতি। নকশাল আন্দোলন নিয়ে সবচেয়ে আলোচিত উপন্যাস বোধহয় মহাশ্বেতা দেবীর 'হাজার চুরাশির মা'। লেখক সমরেশ মজুমদার মনে করেন, এই আন্দোলনের সবচেয়ে বড় অবদান পশ্চিমবঙ্গের মেয়েদের মানসিকতাকে চিরতরে বদলে দেওয়া।

নকশাল আন্দোলন সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে, এমনটি হয়তো বলা ঠিক হবে না। নকশালের মূল নীতি ছিল, অর্থনৈতিক বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। আমাদের এদেশে এরকম একটা আন্দোলন হলে মন্দ হবে না। যেহেতু দেশের সাধারন মানূষের অর্থনৈতিক মুক্তি ঘটছে না। দরিদ্র মানুষেরা দিন দিন আরো দরিদ্র হচ্ছে অন্যদিকে ধনীরা দিন দিন ধনী হচ্ছে। এবং নানাবিদ মন্দ কর্ম করেই যাচ্ছে। সরকার তাদের ধরছে না। শাস্তির ব্যবস্থা করছে। আসলে সরকারের কাছের লোকেরা মানে রাজনীতিবিদদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকেরা যা খুশি তাই করে বেড়াচ্ছে। অবৈধ ভাবে সম্পদ উপার্জনকারী এই অতি ধনী সম্প্রদায় দেশ ও জাতির উন্নতির জন্য বড় বাঁধা। দেশের স্বার্থে নব্য ধনী হওয়া সম্প্রদায়ের আস্ফলন বন্ধ করা অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৯
৭টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×