somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

এই সমাজ- ১৩

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



নাম তার আবু বকর সিদ্দিক।
বিরাট বদলোক। আমি ছোটবেলা থেকেই তাকে দেখছি। এখন যে আবু বকর সিদ্দিক বুড়ো হয়ে গেছে তবু তার বদমাইশি একটুও কমে নি। এই আবু বকর সিদ্দিক আজীবন কোনো কামকাজ করে নি। বাপে একটা বাড়ি রেখে গেছে। সেই বাড়ির ভাড়ার টাকা দিয়ে জীবনটা পার করে দিলেন। তার দুই মেয়ে এবং এক ছেলে। ছেলেটা বখাটে। বর্তমানে হয়তো ইয়াবা বিক্রি করে। বড় মেয়ে প্রেম করে বিয়ে করেছে। স্বামীটা ভালো পায়নি। ভন্ড। খাওন খরচ দেয় না। ছোট মেয়ে এক দর্জির দোকানের কর্মচারীর সাথে ভেগে গেছে। আবু বকর সিদ্দিক মিয়ার বউ তার মতোই অতি দুষ্ট মহিলা। বিষাক্ত। যৌবনে আবু বকর সিদ্দিকের বহু নারীর সাথে কেলেঙ্কারির ঘটনা আছে।

আসুন জেনে নিই আবু বকর সিদ্দিক-
কি কি বদমাইশি করে। সে মানুষের বাসার সামনে গোপনে ময়লা ফেলে যায়। বাড়ি ভাড়ার জন্য 'টু-লেট' লেখা কাগজ গুলো ছিড়ে ফেলে, প্রতিটা দোকানে বাকি খায় এবং বাকির টাকা কখনও দেয় না। বাকির টাকা চাইলে বলে- আমি এই এলাকার বাড়িওয়ালা। বাড়ি ছেড়ে তো আর পালিয়ে যাবো না। টাকা পাস, টাকা পরে নিবি। এখন একটা বেনসন দে। গলিতে বাচ্চাদের খেলতে দেয় না। বাচ্চারা যেন না খেলতে পারে তার জন্য গলির ভেতর পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখে। গলির মধ্যে যদি সবজিওয়ালা, মূরগীওয়ালা অথবা কোনো হকার প্রবেশ করে তাহলে সে তাদের ধমক দেয়। কখনও কখনও মারে। কারন আবু বকর সিদ্দিক দুপুরে ভাত খেয়ে ঘুমায়। হকারদের ডাকে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়।

আবু বকর আমার মাকে বোন বলে ডাকে।
প্রতিমাসে আমার মা'র কাছ থেকে দুই তিনবার পাঁচ শ' টাকা করে নেয় ধার হিসেবে। আজ পর্যন্ত কোনো দিন সে তার ধার শোধ করে নি। গত দুই বছর ধরে আবু বকর একটা কুকুর পালে। ভয়াবহ পাগলা কুকুর। এই কুকুর বিনা কারনে রাত দুপুরে ঘেউ ঘেউ করে। প্রতিদিন রাত দুইটায় কুকুরটা সমানে ঘেউ ঘেউ করতেই থাকে। পুরো এলাকার মানুষ আবু বকর সিদ্দিক এবং তার কুকুরের উপর ভীষন বিরক্ত। অথচ আবু বকর সিদ্দিকের তা গায়েই লাগে না। এলাকার মানুষ যদি আবু বকর সিদ্দিকে কিছু বলে- তাহলে আবু বকরের বউ জানালা দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। এমন কি কোনো পাওনাদার যদি বাড়িতে আসে- আবু বকরের বউ তাদের গালাগালি করে তাড়িয়ে দেয়। ভয়াবহ সব গালি।

গলির মধ্যে রাস্তায় সরকারী কাজ চলছে।
কোনো মিস্ত্রি শান্তিতে কাজ করতে পারছে না। আবু বকর তাদের সাথে প্রচন্ড চিল্লাচিল্লি করেছে। এবং আবু বকরের স্ত্রী মিস্ত্রীদের সমানে গালিগালাজ করেছে। মিস্ত্রিরা কামকাজ ফেলে রাগ করে চলে গেছে। আজ তিনদিন ধরে রাস্তার কাজ বন্ধ। আমি শুধু ভাবি সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। মানুষ এত বদমাশ হয় কি করে! আমি সিউর প্রতিটা এলাকায় আবু বকর সিদ্দিক এবং তার স্ত্রীর মতোন দুই তিনজন করে আছেন। তারা মানুষের আণন্দ-শান্তি নষ্ট করছে। এই আবু বকর এবং তার স্ত্রী আমাদের এলাকায় বহু ছেলে-মেয়ের বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে। তাদের দুই মেয়ে এলাকায় বহুবার রঙ্গতামাশা করেছে। ধরা খেয়েছে। এবং ছোট ছেলেটা মারামারির মধ্যেই আছে।

আবু বকর সিদ্দিককে আমি একদিন বললাম-
মামা এখন আপনার বয়স হয়েছে। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। এলাকায় কে কি করলো, না করলো সেসব বাদ দিয়ে আপনি নামাজ পড়েন। কোনো দিন আপনাকে নামাজ পড়তে দেখলাম না। আপনার যত পাওনাদার আছে তাদের ঋণ শোধ করে দেন। ঋণ শোধ করতে না পারলে তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিন। আপনার ছেলেটার প্রতি লক্ষ্য রাখুন। সে কি করে বেড়ায় এলাকার সবাই জানে। আপনার স্ত্রীকে ভদ্রতা বজায় রেখে কথা বলতে বলুন। তার কোনো ভালো অতীত নেই। আর পাগলা একটা কুকুর পালছেন, সেটা অন্য কোথাও ছেড়ে দিয়ে আসুন। গলির ভিতর দিয়ে মানুষজন চলাচল করতে ভয় পায়। দয়া করে এলাকার মানুষের আর ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়াবেন না। প্লীজ মামা।

আমার কথা শুনে আবু বকর সিদ্দিক খুব রেগে গেলেন।
তিনি বললেন, আমাকে দেখে নিবেন। র‍্যাবে তার লোক আছে। তার পরিচিত তিনটা মন্ত্রী আছে। পুলিশের এক আইজি তার ঘনিষ্ট বন্ধু। আমি বললাম, মামা শান্ত হোন। সারাটা জীবন এই গুলো শুনে এসেছি। হঠার ঘর থেকে ছুটে এলেন তার স্ত্রী এবং ইয়াবা বিক্রি করা তার ছেলে। আবু বকর সিদ্দিকের স্ত্রী বললেন, তুই জানিস তুই কার সাথে কথা বলছিস? পুলিশ কমিশনার আবু কালামের নাম শুনেছিস? আমার ভাইয়ের বন্ধু। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সচিব আমার আপান ফুপাতো ভাই। আমি বললাম, মামা মামীকে ভিতরে যেতে বলুন। এমন সময় আবু বকর সিদ্দিকের ছোট ছেলে ইয়াবা বিক্রেতা এসে বলল, আজ আপনাকে শিক্ষা দিয়ে দিব। আমাদের ক্ষমতা সম্পর্কে আপনার কোনো ধারনা নেই। এই ছেলেকে নেংটা দেখেছি। এখন সে আমাকে ক্ষমতা দেখাচ্ছে!

আবু বকর সিদ্দিকের স্ত্রী তার ছেলেকে বললেন,
মামুন ফোন লাগা। এই কথা শুনে ইয়াবা বিক্রতা মামুন কাকে-কাকে যেন ফোন দিতে শুরু করলো। আবু বকর সিদ্দিকের পরিবারের লোকজনের কথা শুনে এবং তাদের হুমকি ধামকি শুনে আমার হাসি এসে পড়লো। আসলেই আমার খুব হাসি পেয়ে গেল। আমি হো হো করে খুব হেসে নিলাম। এমন সময় আবু বকর সিদ্দিকের বড় মেয়ে এসে আমাকে বলল, রাজীব ভাই। আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আপনি তো আমাদের সবই জানেন। বুঝেন। ভাইয়া প্লীজ। আমি আপনার কাছে হাতজোর করছি। আমি চলে আসছি, তখন আবু বকর সিদ্দিকের স্ত্রী চিৎকার করে বললেন, ভয় পেয়ে চলে যাচ্ছে। নইলে আজ শিক্ষা দিয়ে দিতাম।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৬
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×